বাল্য বিবাহ রুখতে পোস্টার দুবরাজপুরে। নিজস্ব চিত্র
লেখাপড়া করতে চেয়ে শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে এসেছিল অষ্টম শ্রেণির এক পড়ুয়া। দুবরাজপুরের বাসিন্দা বছর চোদ্দ’র ওই কিশোরীর বিয়ে হয়েছিল ইলামবাজার থানা এলাকায়। স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে তার কাতর আর্জি ছিল, ‘আমি ফের পড়াশোনা করতে চাই’। অষ্টম শ্রেণির ওই পড়ুয়ার পাশে দাঁড়িয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও চাইল্ড লাইন।
যদিও দিন কয়েক আগের এই ঘটনাকে ব্যতিক্রমী বলেই মনে করছেন শিশু অধিকার নিয়ে কাজ করা সংস্থা ও প্রশাসনের আধিকারিকদের একাংশ। কারণ, নাবালিকা একবার শ্বশুরবাড়ি পৌঁছে গেলে (স্বেচ্ছায় হোক বা বাড়ির চাপে) সেখানেই তার শৈশবের ইতি। সময়ে বাল্য বিবাহ আটকানো নিয়ে হাজারো সচেতনতা শিবিরের পরেও এই প্রবণতা কমানো যাচ্ছে না।
বাল্যবিবাহের পরিসংখ্যানের নিরিখে রাজ্যে প্রথম তিনটি জেলার মধ্যে রয়েছে বীরভূম। বাল্যবিবাহের কুফল নিয়ে প্রচার, মেয়েদের জন্য সরকারি একগুচ্ছ প্রকল্প থাকলেও আটকানো যাচ্ছে না নাবালিকা বিয়ে ও অকাল মাতৃত্ব। উদ্বেগ সেখানেই। তথ্য বলছে, জেলায় গত ২০২০-২১ অর্থবর্ষে ২২০টি নাবালিকা বিয়ে আটকানো গিয়েছিল। প্রশাসনের কাছে খবর এসেছিল ২৪২টি। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে আটকানো গিয়েছিল ১৮৫টি। খবর এসেছিল ২০৯টির। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের ২৬ জানুয়ারি পর্যন্তই ২১৯টি বিয়ে আটকানো গিয়েছে। খবর এসেছিল ২৬৯টির। এখনও দুটো মাস বাকি। সমস্যা প্রধানত নাবালিকার বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর খবর প্রশাসনের কানে পৌঁছনোয়।
২০২১-২২ অর্থবর্ষে খবর পেয়েও ২৪টি বিয়ে আটকানো যায়নি। তার মধ্যে কিছু ছিল ১৮ উত্তীর্ণ। কিন্তু চলতি অর্থবর্ষে ৪৫ জন নাবালিকার বিয়ে হয়ে যাওয়ার পরে খবর এসেছে প্রশাসনের কাছে। যখন আর করার কিছু থাকছে না। আবার বিয়ে আটকানো ও অভিভাবকদের থেকে মুচলেকা নেওয়ার পরে সেই নাবালিকার লুকিয়ে বিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটছে।
সামাজিক সংগঠন, চাইল্ডলাইন, পুলিশ প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, যেটুকু খবর আসছে একটা অংশ মাত্র। বহু নাবালিকার বিয়ের খবর প্রশাসনের কাছে পৌঁছচ্ছেই না। কোভিডের জন্য দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকার সময় থেকেই এই প্রবণতা বাড়ছে। সেটাই কোথাও স্বাস্থ্য দফতরের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তথ্য বলছে, ১৮’র নীচে মা হওয়ায় বীরভূমের দুই স্বাস্থ্য জেলা রাজ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে। এগিয়ে মাতৃ মৃত্যুতেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy