Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Fire Cracker

নিষিদ্ধ বাজি রোখা যাবে কি, থাকছে সংশয়

রামপুরহাট বাজারে বিক্রি হচ্ছে গ্রিন বাজি।

রামপুরহাট বাজারে বিক্রি হচ্ছে গ্রিন বাজি। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম

দয়াল সেনগুপ্ত 
সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২২ ০৯:৩৫
Share: Save:

কেবল মাত্র পরিবেশবান্ধব ‘সবুজ’ বাজি ছাড়া অন্য কোনও বাজি পোড়ানো বা বিক্রি করা যাবে না। কালীপুজো-দিওয়ালির আগে মঙ্গলবার একটি জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে এমনই নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ও ও অপূর্ব সিংহের ডিভিশন বেঞ্চ। পুলিশ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্যদের ভূমিকা কী হবে সে নির্দেশও দিয়েছে বেঞ্চ। তার পরেই তৎপরতা শুরু হয়েছে জেলায়।

বীরভূম জেলা পুলিশ সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই থানায় থানায় নিষিদ্ধ বাজি ধরতে অভিযান করার নির্দেশ গিয়েছে। কিন্তু এ বার নির্দেশ আমান্য করে জেলায় দুর্গাপুজোয় যে ভাবে নিষিদ্ধ বাজি পোড়ানোর হয়েছে, তাতে কালীপুজো নিয়ে সংশয় থাকছেই। জেলায় দুর্গাপুজো ও কালীপুজোয় যথেচ্ছ বাজি পোড়ানো হয়। আদালতের নির্দেশ কার্যকর করতে কতটা সদর্থক ভূমিকা নিতে পারবে জেলা পুলিশ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ, বাসিন্দাদের সংশয় তা নিয়েই।সংশয়ের পিছনে অবশ্য কারণও রয়েছে। প্রথমত, অনুমোদিত বাজি প্রস্তুতকারক সংস্থার তৈরি সবুজ বাজি কী সহজে মিলবে জানা নেই বাজি বিক্রেতাদের।

অনেকেই বলছেন কেন্দ্রীয় সংস্থা পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড সেফটি অর্গানেইজেশন (পেসো) অনুমোদিত সবুজ বাজি এত দ্রুত জেলার বাজি বিক্রেতারা এনে বিক্রি করতে পারবেন এমন সম্ভাবনা ক্ষীণ।

তা ছাড়া বৈধ সবুজ বাজির সঙ্গে অবৈধ বাজি মিশে থাকলে সেটা ধরাবে কে। অনেক ক্রেতা-বিক্রেতা তো এখনও জানেনই না সবুজ বাজি বস্তুটি আদতে কী! প্রশাসনের কর্তারা বলছেন, একটাই রাস্তা রয়েছে। তা হল, বাজির প্যাকেটের উপর কিউআর কোড স্ক্যান করা। সবুজ বাজির বাক্সের গায়ে কিউআর কোড থাকে, নির্দিষ্ট মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের সাহায্যে ‘স্ক্যান’ করলেই কোনটা আসল আর কোনটা নকল বেরিয়ে আসবে। কিন্তু জেলার প্রতিটি প্রান্তে গিয়ে প্রত্যেকটি বাজির প্যাকেট স্ক্যান করে বৈধতা জানার চেষ্টা যে কার্যত অসম্ভব, তা মানছেন পুলিশ কর্তাদের একাংশই।

বাজি পোড়ানো নিয়ে গত বারও একই নির্দেশ ছিল আদালতের। বিতর্ক এড়াতে গত বার জেলা পুলিশ চেয়েছিল বাজারে যাতে বাজি বিক্রিই না হয় সে ব্যাপারে কড়াকড়ি করতে। ফলে গত বছর কালীপুজো-দিওয়ালিতে কিছুটা কম বাজি পুড়লেও সেটা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যায় নি। কোভিড উত্তর পরিস্থিতিতে উৎসবের মরসুমে এ বার জেলা পুলিশ নিষিদ্ধ বাজি পোড়ানো ঠেকায় কী ভাবে সেটাই দেখার।

প্রশাসনের একটি সূত্র বলছে, গতবার শেষ বেলায় সবুজ বাজিতে ছাড় দিলেও রাজ্যের কোনও বাজি উৎপাদন সংস্থার সবুজ বাজি তৈরির অনুমোদন ছিল না। ফলে গতবার শব্দবাজিই হোক বা আতসবাজি— চেষ্টা হয়েছিল বিক্রি আটকানোর। কিন্তু এ বার ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (নিরি) বিজ্ঞানীদের তত্তাবধানে বেশ কিছু সংস্থার কর্মীরা সবুজ বাজি তৈরি হাতে কলমে শিখেছেন। ব্যবসায়ীদের তৈরি ফুলঝুরি, রংমশাল, চরকি ও তুবড়ি পরীক্ষার উতরেও গিয়েছে। কিউআর কোড ব্যবহারের ছাড় পেয়েছে। ফলে সেই সব বাজি বিক্রি বন্ধ করা সম্ভব নয়।

অনলাইনেও এ বার দীপাবলির জন্য সবুজ বাজি বিক্রি হচ্ছে।জেলার বিভিন্ন এলাকায় বাজি বিক্রেতারা বলছেন, সবুজ বাজি পাওয়া গেলেও তা চাহিদার তুলনায় নগণ্য। ফলে এ সবের আড়ালে সাধারণ কাগজেই কিউআর কোডের মতো ছেপে বাক্সের গায়ে সেঁটে বাজি বিক্রি অসম্ভব নয়। তা ছাড়া দুর্গাপুজোয় ‘ছাড়’ থাকায় জেলায় বিভিন্ন প্রান্তে প্রচুর নিষিদ্ধ বাজি বিক্রি হয়েছে। অনেকের কাছেই সেই বাজি থেকে গিয়েছে। ফলে এখন সবুজ বাজি নিয়ে চূড়ান্ত কড়াকড়ি হলেও নিষিদ্ধ বাজি পোড়ানো আটকানো কষ্টসাধ্য বলে মানছেন পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারাই।

অন্য বিষয়গুলি:

Fire Cracker Birbhum
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy