Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Panchayat Poll 2018

প্রার্থীর স্বামীর মৃত্যু কী করে, চাপানউতোর

শনিবার রাতে বরাবাজারের রাজাপা়ড়া এলাকায় তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে গোলমাল হয়েছিল। একে অন্যের বিরুদ্ধে প্ররোচনার অভিযোগ তুলে দু’পক্ষই তখন দাবি করেছিল, সংঘর্ষে তাদের দলের লোকজন জখম হয়েছেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বরাবাজার শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০১৮ ১৪:৩৮
Share: Save:

জেলা পরিষদের প্রার্থীর স্বামীর মৃত্যু নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হল বরাবাজারে। সোমবার মানবাজার ২ ব্লকের বোরো হাটতলায় তৃণমূল প্রার্থীদের সমর্থনে নির্বাচনী জনসভা ছিল। সেখানে সাংসদ মানস ভুঁইয়া বলেন, ‘‘শনিবার রাতে বরাবাজারে আমাদের দলের প্রার্থী সুমিতা সিংহ মল্লর স্বামী আদিত্য সিংহ মল্লর উপরে বিজেপির কর্মীরা চড়াও হয়। তাঁকে বেদম পেটানো হয়েছিল। যার জেরে তিনি মারা যান।’’ রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেনও সভায় বলেন, ‘‘ঝাড়খণ্ড থেকে বিজেপি গুন্ডা এনে বরাবাজারে সন্ত্রাস চালাচ্ছে। যার জেরে আমাদের প্রার্থীর স্বামীর মৃত্যু হয়েছে।’’

শনিবার রাতে বরাবাজারের রাজাপা়ড়া এলাকায় তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে গোলমাল হয়েছিল। একে অন্যের বিরুদ্ধে প্ররোচনার অভিযোগ তুলে দু’পক্ষই তখন দাবি করেছিল, সংঘর্ষে তাদের দলের লোকজন জখম হয়েছেন। ওই ঘটনায় তৃণমূলের বরাবাজার ব্লক সভাপতি সুদর্শন মাহাতো দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে বিজেপির দুই প্রার্থী-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার হন।

মানবাজার ২ ব্লকের জেলা পরিষদের ৪ নম্বর আসনের তৃণমূল প্রার্থী সুমিতা সিংহ মল্লর বাড়ি বরাবাজারের রাজাপাড়া এলাকায়। বরাবাজার ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাতে সুমিতার স্বামী আদিত্য সিংহ মল্লকে ভর্তি করানো হয় সেখানে। রবিবার সকালে ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল জামশেদপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। পরিবারের দাবি, পথে তাঁর মৃত্যু হলে বরাবাজার ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয়। ময়নাতদন্তের জন্য দেহ পাঠানো হয় পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে।

সুমিতা সিংহ মল্ল এ দিন কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না। তৃণমূলের বরাবাজার ব্লক যুব সভাপতি চন্দন সিংহ মল্ল জানান, তাঁর কাকা আদিত্যবাবু দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। জামশেদপুরের বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল। সম্প্রতি খানিকটা সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরেছিলেন। চন্দন বলেন, ‘‘শনিবার রাতে রাজাপাড়ায় যুব অফিসের দোতলায় আমাদের সভা চলছিল। ওই সময়ে বিজেপির এক দল কর্মী জোরে জোরে স্লোগান দিচ্ছিল। কাকু অসুস্থ মানুষ। নিচের তলায় ছিলেন। বাইরে বেরিয়ে ওঁদের স্লোগান বন্ধ করতে অনুরোধ করেন। তাতেই ওরা কাকুকে ধাক্কা মেরে ফেলে মারধর শুরু করে। ওপর থেকে এই ঘটনা দেখতে পেয়ে আমাদের কর্মীরা ছুটে আসেন। ওরা পতাকার ডান্ডা খুলে আমাদের কর্মীদের উপরেও চড়াও হয়।’’

সোমবার চন্দন বলেন, ‘‘কাকুর মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। পরিবারের পক্ষ থেকে আলাদা ভাবে কোনও দায়ের করা হয়নি। বিষয়টি দল দেখছে। দলের প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে।’’ তৃণমূলের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নবেন্দু মাহালি বলেন, ‘‘ওই রাতে ঠিক কী ঘটেছিল দলের পক্ষ থেকে আমরা বিশদে খোঁজ নিচ্ছি। দলের উচ্চস্তরীয় কমিটিতেও এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’

বিজেপি এ দিনও হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। দলের জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সুমিতাদেবীর স্বামীর মৃত্যু সত্যি দুঃখজনক ঘটনা। আমি খোঁজ নিয়ে জেনেছি, আদিত্যবাবু দীর্ঘ দিন ধরে কিডনির অসুখে ভুগছিলেন। আমাদের দলের কর্মীরা সে কথা জানতেন। বিজেপির কেউ তাঁর গায়ে হাত তোলেনি। তৃণমূল মৃত মানুষকে নিয়েও রাজনীতি শুরু করল। ওরা সহানুভূতির ভোট কুড়িয়ে নির্বাচনে জিততে চাইছে।’’

পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় আলাদা কোনও মামলা দায়ের হয়নি। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy