Advertisement
E-Paper

Cyber Crime: সারা দেশে প্রতারকদের কাছে হাজার হাজার ই ওয়ালেট বিক্রি, জালে বাঁকুড়ার যুবক

অভিষেকের থেকে নগদ এক লক্ষ ১৫ হাজার টাকা, ব্যাঙ্কের সাতটি পাশ বই মিলেছে। এ ছাড়াও ১৫টি ব্যাঙ্ক আকাউন্টেরও হদিশ মিলেছে।

অভিষেক মণ্ডলের থেকে মিলেছে ৯ হাজার সিম কার্ড।

অভিষেক মণ্ডলের থেকে মিলেছে ৯ হাজার সিম কার্ড। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২১ ১৪:৩২
Share
Save

বাঁকুড়ার গ্রামে বসে দেশ জুড়ে চলা সাইবার প্রতারণা চক্রগুলিকে আক্ষরিক অর্থেই মদত দেওয়া। জাল নথি দিয়ে সিমকার্ড কিনে হাজার হাজার ই ওয়ালেট বানিয়ে তা দেশ জুড়ে ছড়িয়ে থাকা প্রতারণা চক্রগুলিকে বিক্রি করা। এই অভিযোগে বাঁকুড়ার ধবগ্রাম থেকে অভিষেক মণ্ডল নামে এক যুবককে গ্রেফতার করল পুলিশ। উদ্ধার হয়েছে ৯ হাজারের বেশি সিম কার্ড, একটি ল্যাপটপ, একটি কম্পিউটার এবং বহু ভুয়ো নথি। জিজ্ঞাসাবাদ করে এখনও পর্যন্ত ১০ হাজার ভুয়ো ই ওয়ালেট অ্যাকাউন্টের হদিশ পেয়েছে পুলিশ। জানা গেছে, ওই সব ই ওয়ালেট অ্যাকাউন্ট জামতাড়া গ্যাংয়ের মতো তাবড় সাইবার প্রতারণা চক্রগুলিকে মোটা টাকার বিনিময়ে বিক্রি করেছিল অভিষেক। ওই কাণ্ডে অভিষেকের পাঁচ সঙ্গীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।

ধৃত অভিষেকের থেকে নগদ এক লক্ষ ১৫ হাজার নগদ টাকা, ব্যাঙ্কের সাতটি পাশ বই মিলেছে। এ ছাড়াও ১৫টি ব্যাঙ্ক আকাউন্টেরও হদিশ মিলেছে। উচ্চ মাধ্যমিক পাশ হলেও, ছোট থেকে মোবাইল বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠেছিল অভিষেক। সেই জ্ঞানকে কাজে লাগিয়েই বাঁকুড়া সদর থানার ধবগ্রামে বসে সাইবার প্রতারণার জগতে পা রেখেছিল অভিষেক। ভুয়ো নথির ভিত্তিতে তৈরি ই ওয়ালেট অ্যাকাউন্টই প্রতারণা চক্রগুলির ভরসা। কারণ তাতে ধরা পড়ার ভয় নেই। প্রতারকদের এই ভুয়ো ই ওয়ালেট অ্যাকাউন্ট বিক্রি করেই গত দু’বছরে লক্ষ লক্ষ টাকা রোজগার করে অভিষেক। পুলিশ জানতে পেরেছে ওই অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে অভিষেক কোতুলপুরের বাসিন্দা রামপ্রসাদ দিগর এবং ওন্দার বাসিন্দা রাজারাম বিশ্বাস নামে আরও দুই যুবকের সাহায্য নিয়েছিল।

তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, রামপ্রসাদ বিভিন্ন জায়গা থেকে সাধারণ মানুষের নথি জোগাড় করত। ফেসবুক-সহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম থেকে সংগ্রহ করা হত ছবি। এই ভুয়ো নথি এবং ছবি সোজা চলে যেত ওন্দার রাজারামের কাছে। নির্দিষ্ট একটি মোবাইল পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থার ডিলার রাজারাম ওই ভুয়ো নথি এবং ছবি ব্যবহার করে কাস্টমার আপ্লিকেশন ফর্ম পূরণ করে সিম কার্ড অ্যাক্টিভেট করত। কাস্টমার আপ্লিকেশান ফর্মে ব্যবহার করা নথির সঙ্গে বহু ক্ষেত্রেই ছবির সামঞ্জস্য থাকত না। বহু ক্ষেত্রে নিজেরাই ভুয়ো নথি তৈরি করে তা কাস্টমার আপ্লিকেশন ফর্মের সঙ্গে জুড়ে দিত বলে অভিযোগ। ভুয়ো নথির ভিত্তিতে অ্যাক্টিভেট করা সেই সিম কার্ডগুলি সোজা চলে যেত অভিষেকের কাছে। এই সিমগুলির ভিত্তিতেই অভিষেক তৈরি করত হাজার হাজার ই ওয়ালেট অ্যাকাউন্ট। এই ধরনের অ্যাকাউন্ট সে মোটা টাকার বিনিময়ে বিক্রি করত দেশের তাবড় সাইবার জালিয়াত চক্রগুলিকে।

একটি সিমের ভিত্তিতে একটি ই ওয়ালেট অ্যাকাউন্ট তৈরি হওয়ার পর অভিষেক ওই সিম কার্ড অন্য সংস্থায় পোর্ট করিয়ে নিত। পোর্ট করার পর সেই সিম কার্ডের ভিত্তিতে আবার নতুন অ্যাকাউন্ট তৈরি করত সে। পুলিশ জানতে পেরেছে, সাইবার প্রতারণা চক্রগুলির সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে অভিষেক ব্যবহার করত টেলিগ্রাম নামের একটি মোবাইল আপ্লিকেশন। পুলিশ আরও জানতে পারে, বছর দু’য়েক ধরে ধবগ্রামে বসে এই চক্র চালাচ্ছিল সে। ভুয়ো নথির সাহায্যে তোলা সিম কার্ডের ভিত্তিতে প্রায় ১০ হাজার ই ওয়ালেট অ্যাকাউন্টের হদিশ পেয়েছে । কিন্তু এই সংখ্যা হিমশৈলের চূড়ামাত্র বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। কোন কোন প্রতারণা চক্রের সঙ্গে অভিষেকের যোগ রয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার বলেন, ‘‘আমরা এখনও পর্যন্ত যে তথ্য পেয়েছি তাতে ৪৫ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা লেনদেন হয়েছে। এই চক্রের মূল পাণ্ডা অভিষেক মণ্ডল এই বিপুল পরিমাণ টাকা নিজের ব্যাঙ্ক আকাউন্টে রাখার পাশাপাশি ক্রিপ্টো কারেন্সিতেও বিনিয়োগ করেছিল। তিনটি ক্রিপ্টো কারেন্সি অ্যাকাউন্টের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।’’

arrest police Cyber Crime bankura

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}