Advertisement
E-Paper

ব্যাঙ্কে জালিয়াতি তদন্তের কী হাল, বিক্ষোভ

অভিযোগ, ২০১৫ সালে বাঁকুড়া কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের (বিডিসিসিবি) কাছ থেকে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বন্ড কেনার নামে ১৫ কোটি টাকা নেন কলকাতার দমদমের বাসিন্দা দেবাঞ্চন রায়। তিনি পেশায় ‘ব্রোকার’ ছিলেন।

আবস্থান-বিক্ষোভ। বাঁকুড়ায় বুধবার। —নিজস্ব চিত্র

আবস্থান-বিক্ষোভ। বাঁকুড়ায় বুধবার। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা  

শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৯ ০৩:২০
Share
Save

বন্ড কেনার নামে কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে প্রতারণায় মূল অভিযুক্ত ধরা পড়েছে। যদিও এখনও সেই টাকা উদ্ধার করা যায়নি। অবিলম্বে ওই সমবায় ব্যাঙ্কের টাকা উদ্ধারের দাবি তুলে বুধবার বিক্ষোভ দেখিয়ে স্মারকলিপি দিল পশ্চিমবঙ্গ সমবায় বাঁচাও মঞ্চ।

অভিযোগ, ২০১৫ সালে বাঁকুড়া কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের (বিডিসিসিবি) কাছ থেকে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বন্ড কেনার নামে ১৫ কোটি টাকা নেন কলকাতার দমদমের বাসিন্দা দেবাঞ্চন রায়। তিনি পেশায় ‘ব্রোকার’ ছিলেন। ব্যাঙ্কের তরফে বন্ড কেনার জন্য সরাসরি ওই ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়া হয়েছিল বলেই দাবি কর্তৃপক্ষের। টাকা নিয়ে দেবাঞ্জন বন্ড কেনার কিছু নথি বাঁকুড়া কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের হাতে তুলে দেন। পরে ওই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ বন্ড ভাঙাতে গিয়ে জানতে পারেন, নথিগুলি জাল। ঘটনার পরেই চম্পট দেন দেবাঞ্জন।

বাঁকুড়া কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের এই জালিয়াতি প্রকাশ্যে আসার আগেই রাজ্যের অন্য কয়েকটি জেলার সমবায় ব্যাঙ্কেও প্রতারণার অভিযোগ উঠেছিল দেবাঞ্জনের বিরুদ্ধে। গোটা ঘটনায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করে বাঁকুড়া কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের পরিচালন সমিতির বিরুদ্ধে। জালিয়াতি প্রকাশ্যে আসার বেশ কয়েক মাস পরে বাঁকুড়া সদর থানায় তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন তৎকালীন বাঁকুড়া কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান জয়দীপ চট্টোপাধ্যায়। ওই অভিযোগের তদন্ত শুরু করে সিআইডি। দু’বছর আগে ২০১৭ সালের এপ্রিলে সিআইডি গ্রেফতার করে দেবাঞ্জনকে। পুলিশ ও সিআইডি-র একটি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, তদন্তে উঠে আসে বন্ড কেনার নামে নেওয়া ওই টাকার বড় অংশ থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় জমি ও ফ্ল্যাট কিনেছিলেন দেবাঞ্জন। তবে দেবাঞ্জন গ্রেফতার হওয়ার পরেও কেন বাঁকুড়া কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের টাকা উদ্ধার করা গেল না, এ দিন সেই প্রশ্ন তোলেন পশ্চিমবঙ্গ সমবায় বাঁচাও মঞ্চের নেতারা।

এ দিন বাঁকুড়া শহরে মিছিল করে ওই ব্যাঙ্কে বিক্ষোভ দেখিয়ে স্মারকলিপি দেওয়া হয় মঞ্চের তরফে। সংগঠনের বাঁকুড়া জেলা সহ-সভাপতি প্রতীপ মুখোপাধ্যায় দাবি করেন, “সিআইডি এই ঘটনার মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে। তবে তার পর থেকে তদন্ত কত দূর গড়িয়েছে কিছুই বুঝতে পারছি না। এই ঘটনার সঙ্গে দেবাঞ্জন ছাড়াও আরও অনেকেই যুক্ত ছিলেন। আমাদের দাবি টাকা তছরূপের সঙ্গে যুক্ত সকলকেই গ্রেফতার করা হোক। ব্যাঙ্কের টাকা ফেরতের উদ্যোগ নেওয়া হোক।”

ব্যাঙ্কের সিইও সাগর সান্যাল এ দিন বলেন, “সিআইডি ওই টাকা তছরূপের ঘটনার তদন্ত করছে। ব্যাঙ্কের তরফে তদন্তকারীদের পূর্ণ সহযোগিতা করা হচ্ছে।”

ঘটনা হল, ওই আর্থিক তছরূপের প্রভাব ব্যাঙ্কের ব্যবসাতেও পড়েছিল। ঘটনার পরে এই সমবায় ব্যাঙ্কের বহু গ্রাহকই উদ্বিগ্ন হয়ে টাকা তুলে নিচ্ছিলেন। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পরে সার্বিক ভাবেই ডামাডোলের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল।

ব্যাঙ্ক সূত্রে খবর, ২০১৫-’১৬ ও ২০১৬-’১৭ অর্থবর্ষে ব্যবসায় মোটা অঙ্কের টাকার ঘাটতি হয় ওই ঘটনার জেরে। বর্তমানে অবশ্য পরিস্থিতি বদলেছে বলেই দাবি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের। ২০১৭-’১৮ ও ২০১৮-’১৯ অর্থবর্ষে ‘নেট প্রফিট’ অনেকটাই বেড়েছে বলেও দাবি করেছেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। অনাদায়ি ঋণ আদায়ে গতি ও গ্রাহকের ব্যাঙ্কের উপরে ভরসা ফিরে আসাকেই লাভের মুখ দেখার অন্যতম কারণ বলে জানাচ্ছেন কর্মকর্তারা। সাগরবাবু বলেন, “আগামী দিনে ডিজিটাল ব্যাঙ্ক হিসেবে এই ব্যাঙ্ককে গড়ে তোলার জন্য নানা পদক্ষেপ করেছি আমরা। গ্রাহক পরিষেবা কী ভাবে আরও ভাল করা যায়, তা নিয়েও চিন্তাভাবনা চলছে।”

Banukra Bank Fraud Scam Probe Investigation

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}