Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Pranab Mukherjee

‘আমার দেখা সেই প্রণবদা’

দীর্ঘদিন দিল্লিস্থিত প্রণবদার বাড়িতে থাকার সুবাদে খুব কাছ থেকে ওঁর কর্মকাণ্ড দেখা ও বহু ঘটনার সাক্ষী থাকার সুযোগ আমার হয়েছে।

কীর্ণাহারের পরোটা গ্রামে প্রণব মুখোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র

কীর্ণাহারের পরোটা গ্রামে প্রণব মুখোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র

বনমালী রায়
শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০২:৫২
Share: Save:

প্রণব মুখোপাধ্যায়ের পরিবারের সঙ্গে আমার পরিবারের ঘনিষ্ঠতা প্রায় তিন পুরুষের। সেই সূত্রেই ষাটের দশকের শেষ দিক থেকে ওঁর সঙ্গে আমার চলাফেরা। কীর্ণাহার উত্তরপাড়ায়, আমাদের বাড়িতেই সুশীল ধাড়ার উপস্থিতিতে বাংলা কংগ্রেসের সভা আয়োজিত হয়েছিল। বাংলা কংগ্রেস থেকে রাজ্যসভায় সাংসদ হয়ে প্রণবদার প্রথম বক্তৃতায় ভীষণ ভাবে আকৃষ্ট হয়ে পড়েন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধী। এর পরে বাংলা কংগ্রেস জাতীয় কংগ্রেসের সঙ্গে মিশে গেলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় প্রণবদা প্রথমে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে যোগ দেন এবং পরবর্তী কালে বিভিন্ন গুরুত্বপর্ণ মন্ত্রকের পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তখন থেকেই তিনি অপত্যস্নেহে আমাকে কাছে ডেকে নেন এবং বিভিন্ন কাজের দায়িত্ব অর্পণ করতে থাকেন।

দীর্ঘদিন দিল্লিস্থিত প্রণবদার বাড়িতে থাকার সুবাদে খুব কাছ থেকে ওঁর কর্মকাণ্ড দেখা ও বহু ঘটনার সাক্ষী থাকার সুযোগ আমার হয়েছে। খাওয়ার টেবিলে বসে এবং গাড়িতে যাতায়াতের সময়ে ওঁর ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক

জীবনের অনেক গল্পও শোনাতেন। ১৯৮৪ সালে ইন্দিরা গাঁধীর মৃত্যুর পরে প্রণবদার মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ার দৃশ্য এবং যোগ্য হিসেবে রাজীবকে প্রধানমন্ত্রী করার প্রচেষ্টা আমি নিজে চাক্ষুষ করেছি।

প্রণবদার বীরভূম সফরকালে এখানকার অনেক দায়িত্ব আমার উপরেও থাকত। এক বার বিশ্বভারতীর সমাবর্তন অনুষ্ঠানে উনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী ছিলেন। কিন্তু খারাপ আবহাওয়ার কারণে হেলিকপ্টারে না-যেতে পারায় তাৎক্ষণিক পরিস্থিতিতে সড়কপথে কলকাতা ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা আমাকে করতে হয়। ফেরার সময়ে ওঁর সহযাত্রী ছিলাম আমি ও তৎকালীন উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী সত্যসাধন চক্রবর্তী। সে বার প্রণবদা সত্যসাধনবাবুর প্রশ্নের উত্তরে বোঝাতে বোঝাতে যাচ্ছিলেন, কী ভাবে এক জন উচ্চ পর্যায়ের নেতা বা মন্ত্রী হওয়া যায়। সে-সব কথা আজও ভুলিনি।

কীর্ণাহারের শিবচন্দ্র হাইস্কুলের শতবার্ষিকী অনুষ্ঠান পরিচালনা এবং খাদি প্রতিষ্ঠান নির্মাণের পূর্ণ দায়িত্ব তিনি আমাকেই দিয়েছিলেন। পিতা কামদাকিঙ্কর মুখোপাধ্যায়ের পুণ্যস্মৃতিতে একটি ট্রাস্ট গঠন করেছিলেন প্রণবদা, যেটা থেকে বীরভূম জেলার দু’জন মেধাবী ছাত্রের ডাক্তারি ও ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার পূর্ণ ভার নেন। এ ছাড়াও ওঁর সেবামূলক অনেক ঘটনার আমি সাক্ষী, যা এই ছোট্ট পরিসরে বলা সম্ভব নয়।

(বীরভূম জেলা কংগ্রেসের সহ-সভাপতি)

অন্য বিষয়গুলি:

Pranab Mukherjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy