শংসাপত্র: ঘাটবেড়া গ্রামে। —নিজস্ব চিত্র
এক সপ্তাহ আগে গ্রাম পরিদর্শনে গিয়ে জেলাশাসক রাহুল মজুমদার শুনেছিলেন, বিধবা ভাতা পাচ্ছেন না এক মহিলা। দেখা করে তাঁর বক্তব্য শুনে এসেছিলেন জেলাশাসক। এক সপ্তাহের মধ্যেই সোমবার বলরামপুর ব্লকের ঘাটবেড়া গ্রামের বাসিন্দা ওই মহিলাকে বিধবা ভাতা পাওয়ার অনুমোদনপত্র দেওয়া হল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত সপ্তাহে আচমকা ওই গ্রামে গিয়েছিলেন জেলাশাসক। সরকারি পরিষেবা বা প্রশাসনিক কাজকর্ম নিয়ে সেখানকার বাসিন্দাদের বক্তব্য শুনেছিলেন। পাহাড়-জঙ্গল ঘেরা এই ঘাটবেড়া-কেরোয়া এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলার সময়ে ঘাটবেড়া গ্রামের প্রৌঢ়া ললিতা মান্ডি জেলাশাসককে জানিয়েছিলেন, দিনমজুরি করে তাঁর সংসার চলছে না। কয়েক মাস আগে স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু এখনও বিধবা ভাতা পান না।
এর পরেই ওই মহিলাকে ভাতা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে প্রশাসন। বলরামপুরের বিডিও ধ্রুবপদ শাণ্ডিল্য বলেন, ‘‘আমরা ওই মহিলার থেকে আবেদনপত্র নিয়ে তা পাঠিয়েছিলাম নির্দিষ্ট জায়গায়। সমাজকল্যাণ দফতর তা অনুমোদন করেছে। এ দিন আমরা গ্রামে গিয়ে ললিতাদেবীর বিধবা ভাতার অনুমোদন পত্র তাঁর হাতে তুলে দিয়েছি। আগামী মাস থেকে উনি মাসে ৭৫০ টাকা করে ভাতা পাবেন।’’
ললিতাদেবী বলেন, ‘‘আমার স্বামী গাড়ি চালানোর কাজ করতেন। দুর্ঘটনায় ওঁর মৃত্যু হয়েছে। তারপর থেকে বড় কষ্টে আছি।’’ জেলাশাসককে চিনতেন না তিনি। তবে বুঝতে পেরেছিলেন তিনি সরকারি কোনও আধিকারিক হবেন। ললিতাদেবীর কথায়, ‘‘আমি ওঁকে চিনতাম না। জিজ্ঞাসা করায় বলেছিলাম, কোনও ভাতা পাই না। এ-ও জানিয়েছিলাম, ভাতা পাওয়ার জন্য কোথায় আবেদন করতে হয়, তাও আমার জানা নেই। উনি আমাকে সাহায্য করেছেন। এটা অনেক বড় প্রাপ্তি।’’
একদা মাওবাদীদের মুক্তাঞ্চল ছিল এই অঞ্চল। বঞ্চনাকে হাতিয়ার করেই ওই এলাকায় জনভিত্তি তৈরি করেছিল মাওবাদীরা। রাজ্যে পালাবদলের পরেও ওই এলাকা মৃত্যু দেখেছে। দেখেছে যৌথবাহিনীর সঙ্গে গুলির লড়াই। তবে সেই সব ঘটনা এখন অতীত। স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেছে ঘাটবেড়া-কেরোয়া।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy