পুরনো সেই পুজোর কথা: কালীপুজোর আগে গয়না নিয়ে বসেছেন অনুব্রত মণ্ডল। —নিজস্ব চিত্র।
সেই জাঁকজমক নেই। নেই জৌলুস। বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারির পর গত বছরেও নমো নমো করে বোলপুর তৃণমূল কার্যালয়ের কালীপুজো সারা হয়েছে। এ বার শ্যামাপুজোর জৌলুস কমল আরও। কালীর অঙ্গে সোনার বদলে উঠল ইমিটেশনের গয়না।
বোলপুরে তৃণমূল কার্যালয়ের কালীপুজো মানেই আলাদা আকর্ষণ সকলের কাছে। কারণ, কালীর সাজ। প্রতি বছর পুজোয় সক্রিয় ভাবে অংশ নিতেন বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত ওরফে কেষ্ট মণ্ডল। পুজোকে কেন্দ্র করে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের উন্মাদনাও থাকত চরমে। পুজোর দিন চারেক আগে ব্যস্ততায় নাওয়া-খাওয়া ভুলতেন তাঁরা। ২০২১ সালের কালীপুজোয় তো প্রতিমার অঙ্গ ৫৬০ ভরি সোনার গয়না দিয়ে সাজিয়ে দিয়েছিলেন অনুব্রত। শোনা যায়, ওই গয়নার আনুমানিক বাজারমূল্য ছিল আড়াই কোটি টাকার উপরে। তা নিয়ে বিস্তর সমালোচনা করেছিলেন বিরোধীরা। কেষ্ট অবশ্য গায়ে মাখেননি। বস্তুত, কালীপুজোর দিন ‘অন্য রূপে’ দেখা যেত তৃণমূলের জেলা সভাপতিকে। নেতাকর্মীদের সঙ্গে হাসি-ঠাট্টা করছেন। পুজোর জোগাড়ের কাজে ভুলচুক হলে ধমক দিতেন। ‘কালীমা’কে সাজাতে হবে বলে টেবিলের সামনে গয়না বিছিয়ে বসতেন। বলতেন, কী ভাবে কত মানুষ ‘মা’কে সাজাতে গয়না দান করেছেন। বিপুল অলঙ্কারে সজ্জিত প্রতিমা দেখতে দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসতেন বোলপুর তৃণমূল কার্যালয়ের সামনে। কিন্তু এ বার সে সব ফিকে। পরিস্থিতি এমন যে, আগে থেকে কাউকে ঢুকতেও দেওয়া হচ্ছে না সেখানে।
তৃণমূলের এক নেতা বলছেন, ‘‘গত বছর মায়ের গায়ে কিছু সোনার গয়না পরানো হয়েছিল। তবে এ বছর মায়ের গায়ে শুধু ইমিটেশনের গয়নাই থাকবে।’’ কেষ্ট-ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত আর এক নেতা বলছেন, ‘‘দু’একটি সোনার গয়না ছাড়া মায়ের গায়ে আর কোনও দামি গয়না থাকবে না।’’ কারণটা কী? ওই নেতার কথায়, ‘‘প্রতি বছর দাদা (অনুব্রত) নিজের হাতে মাকে গয়না পরাতেন। তখন পুজো নিয়ে অন্য উন্মাদনা ছিল সবার মধ্যে।’’ একটু ভেবে নিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘‘যদিও দাদা থাকার সময় (গ্রেফতারির আগের কথা) আগের দু’বছর ওই গয়না পরানো সম্ভব হয়নি ওঁর পক্ষে। কারণ, দাদার মা এবং স্ত্রী মারা যান।’’ তিনি জানান, তৃণমূল নেতার পরিচালনায় যে হেতু পুরো পুজোটা হত, তাঁর অনুপস্থিতিতে বড্ড মনখারাপ সকলের। তাই জাঁকজমকটা নেই। তবে পুজো হচ্ছে নিষ্ঠার সঙ্গে।
বীরভূম জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘প্রত্যেক বছরের মতো এ বছরও পুজোর আয়োজন করা হয়েছে। পুজোয় অংশ নেওয়ার জন্য সমস্ত নেতাকে আহ্বান করা হয়েছে। নেতা এবং কর্মীদের সহযোগিতায় পুজো হবে। তবে মায়ের গায়ে সেই রকম বিপুল অলঙ্কার এ বার পরানো হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy