মৃত জওয়ান গোপাল মাণ্ডি (বাঁ দিকে), সিকিমের দুর্যোগের ছবি। —নিজস্ব চিত্র।
সিকিমের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে মৃত্যু হল বীরভূমের বাসিন্দা এক ভারতীয় সেনার। মৃত জওয়ানের নাম গোপাল মান্ডি। মৃত্যুর খবর সিকিম থেকে বীরভূমের ময়ুরেশ্বর থানার নান্দুলিয়া গ্রামে পৌঁছতেই উঠেছে কান্নার রোল।
বুধবার কাকভোরে মেঘভাঙা বৃষ্টি শুরু হয় উত্তর সিকিমে। বিপুল পরিমাণ জল লোনক হ্রদ ধরে রাখতে পারেনি। ফলে বাঁধ ভেঙে সেই জল সরাসরি চলে আসে তিস্তায়। মূলত হিমবাহ গলা জলে পুষ্ট তিস্তায় অতিরিক্ত জল ঝড়ের বেগে নীচে নেমে আসতে শুরু করে। পথে চালায় ভয়ঙ্কর ধ্বংসলীলা। জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছিল ১৫ থেকে ২০ ফুট। সেনা সূত্রে জানা যায়, জলের তোড়ে সিংথামের কাছে বারদাং সেনাছাউনিতে পার্ক করে রাখা ৪১টি গাড়ি ভেসে যায়। ২৩ জন সেনা জওয়ান-সহ বহু মানুষ হড়পা বানে ভেসে যান। তার পর এক জন জওয়ানকে উদ্ধার করা হয়। পরে বেশ কয়েক জনের দেহ মিলেছে।
বীরভূমের মৃত জওয়ান জলপাইগুড়ির বিন্নাগুড়িতে পোস্টিং ছিলেন বলে তাঁর পরিবার সূত্রে খবর। তবে মাসখানেক আগে সিকিমের বাবা হরভজন সিংহ মন্দিরে ডিউটি করতে যান তিনি। দুর্যোগের দিন মন্দির থেকে ডিউটি সেরে বিন্নাগুড়ি সেনাছাউনিতে ফিরছিলেন গোপাল। কিন্তু আর সেনাছাউনিতে ফেরা হয়নি। কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি তাঁর। বুধবার গোপালের বাড়িতে তাঁর নিখোঁজের খবর দেওয়া হয়। তার পর থেকেই উদ্বেগে দিন কাটছিল মান্ডি পরিবারের। বিভিন্ন ভাবে খোঁজখবরের চেষ্টা করছিলেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আবার ওই সেনা জওয়ানের বাড়িতে ফোন আসে। তবে এ বার তাঁর মৃত্যুর খবর দেওয়া হয়। তার পর থেকেই আদিবাসী অধ্যুষিত নান্দুলিয়া গ্রাম শোকস্তব্ধ।
পরিবার সূত্রে খবর, ২৯ বছর বয়সি গোপাল ২০১৪ সালে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। গোপাল মেডিক্যাল বিভাগে কর্মরত ছিলেন। ২০২১ সালে বোলপুরের শিয়ানের বাসিন্দা মাম্পি মুর্মুর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। স্ত্রী ছাড়াও গোপালের বাড়িতে আছেন মা-বাবা, দাদা, বোন এবং স্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy