Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
নদীতে তলিয়ে মৃত্যু বৃদ্ধার
Wall Collapsed at Bankura

ভাঙল দেওয়াল, রক্ষা মা ও দুই সন্তানের

টানা নিম্নচাপে ইতিমধ্যেই জেলায় তিন শিশু-সহ এক বৃদ্ধার দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে।

সোনামুখীর সমিতিমানায় জেলাশাসক-সহ আধিকারিকেরা।

সোনামুখীর সমিতিমানায় জেলাশাসক-সহ আধিকারিকেরা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:৩২
Share: Save:

নিম্নচাপের বৃষ্টিতে বাঁকুড়া জেলায় ফের ভাঙল কাঁচাবাড়ি বাড়ি। অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন বাড়িতে থাকা মা, মেয়ে ও ছেলে। নদীতে তলিয়ে মৃত্যু হল এক বৃদ্ধার। জেলায় ডুবল বেশ কয়েকটি কজ়ওয়ে। তবে ডিভিসি জল ছাড়ার মাত্রা কিছুটা কমানোয় জেলার মানাচরগুলি থেকে জলস্তর ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে।

টানা নিম্নচাপে ইতিমধ্যেই জেলায় তিন শিশু-সহ এক বৃদ্ধার দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় বিষ্ণুপুর শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সত্যপীরতলার হাঁড়িপাড়ায় রান্না করার সময় মাটির দেওয়াল চাপা পড়ে পা ভাঙে রিঙ্কু সাঁতরা নামে এক বধূর। তাঁকে নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয় বলে জানান পুরপ্রতিনিধি শঙ্খজিৎ রায়। মঙ্গলবার রাতে বৃষ্টি চলাকালীন বিষ্ণুপুরের বেলশুলিয়া পঞ্চায়েতের কানগড়ে একটি কাঁচাবাড়ির দেওয়াল ধসে পড়ে। সেই সময় ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে বাড়িতেই ঘুমোচ্ছিলেন মা রবি কিস্কু। তবে দেওয়ালটি বাইরের দিকে ধসে পড়ায় রক্ষা পান তিন জন।

রবি বলেন, “কয়েক দিন ধরেই বাড়িটি নড়বড় করছিল। আমরা ভয়ে ভয়ে ছিলাম। রাতে হঠৎই হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ল একটি দেওয়াল। মাথা গুঁজতে বাচ্চাদের নিয়ে পাশের বাড়িতে চলে যাই।” বিডিও (বিষ্ণুপুর) শতদল দত্ত বলেন, ‘‘ওই পরিবারকে খাদ্য সামগ্রী দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আবাস প্লাস যোজনার তালিকাভুক্ত আছেন। গ্রামের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’’

অন্যদিকে মঙ্গলবার রাতে বাঁকুড়া শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের একটি টালির বাড়ির ছাদে নিমগাছের ডাল ভেঙে পড়ে। ওই বাড়িতে দুই ছেলেকে নিয়ে ঘুমোচ্ছিলেন চন্দন ডোম। টালি ভেঙে পড়ায় চন্দন মাথায় চোট পান। পুরসভার তরফে চন্দন ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের একটি লজে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বুধবার সকালে পাত্রসায়রের বেন্দা গ্রামের বৃদ্ধা অঞ্জলী সিংহ (৬৩) শালি নদীতে নেমে তলিয়ে যান। পরে তাঁর দেহ ভেসে ওঠে ইন্দাসের সোমসারে।

এ দিকে দামোদরের জল বাড়ায় প্লাবিত হয়েছিল সোনামুখীর সমিতি মানা। বুধবার ডিভিসির দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে জল ছাড়ার মাত্রা ১ লক্ষ ৩০ হাজার কিউসেক হার থেকে কমিয়ে ৯৭ হাজার ৫০০ কিউসেক হারে নামিয়ে আনা হয়েছে। তাতে দামোদরের জলস্তর কিছুটা কমেছে। বড়জোড়া ও সোনামুখীর মানাচরগুলির জলও ধীরে ধীরে নামতে শুরু করেছে।

এ দিন সোনামুখীর সমিতি মানায় গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন বাঁকুড়ার জেলাশাসক সিয়াদ এন, জেলা পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি, অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) প্রলয় রায়চৌধুরী প্রমুখ। অতিরিক্ত জেলাশাসক বলেন, “মানাচরগুলি থেকে জল ধীরে ধীরে নামছে। সমিতি মানায় খোলা ত্রাণশিবিরটিও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে। তবে নদীতে জল বাড়লে দ্রুত ত্রাণ শিবির চালু করার জন্য সমস্ত প্রস্তুতি আমরা নিয়ে রেখেছি।’’

ডিভিসি জল ছাড়ার মাত্রা কমালেও মুকুটমণিপুরের কংসাবতী জলাধার থেকে জল ছাড়ার মাত্রা মঙ্গলবার রাত থেকে বাড়ানো হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, গভীর রাত থেকে ২০ হাজার কিউসেক হারের বদলে ২৫ হাজার কিউসেক হারে জলাধার থেকে জল ছাড়া হচ্ছে। বুধবার বিকেল পর্যন্ত মুকুটমণিপুর জলাধারের জলের উচ্চতা ছিল ৪৩২.০৫ ফুট।

এ দিকে রাতভর বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিতে সিমলাপালে শীলাবতী নদীর উপরে ভেলাইডিহা থেকে হাড়মাসড়া যাওয়ার রাস্তার কজ়ওয়ে জলের তলায় চলে গিয়েছে। মহকুমাশাসক (খাতড়া) নেহা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, কংসাবতীতে জলস্তর বাড়লেও গ্রামাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার মতো পরিস্থিতি নেই। জনজীবনে কোনও প্রভাব পড়েনি।

বাঁকুড়ায় গন্ধেশ্বরী নদীর উপর মানকানালি কজ়ওয়ে, দ্বারকেশ্বরের উপর আইলঠা, মীনাপুর কজ়ওয়ে জলের তলায় চলে গিয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, বুধবার পর্যন্ত জেলা জুড়ে ১০টি ত্রাণ শিবিরে বেশ কিছু বিপজ্জনক বাড়ির বাসিন্দাদের রাখা হয়েছে। ৪৪০টি মাটির বাড়ি ভেঙেছে। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে
১,৯৬৪টি বাড়ি।

অন্য বিষয়গুলি:

Wall Collapse bankura
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy