ধুমনাথ সরেন। বাঘমুণ্ডির টিকরটাঁড়ে। নিজস্ব চিত্র।
ভোরে বাড়ির পিছনে ধান জমির দেখাশোনা করতে গিয়ে হাতির হানায় মৃত্যু হল এক বৃদ্ধের। সোমবার মাঠা বনাঞ্চলের টিকরটাঁড় গ্রামের ঘটনা। মৃতের নাম ধুমনাথ সরেন (৮৩)। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে পুরুলিয়া মেডিক্যালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। পুরুলিয়ার ডিএফও কার্তিকায়েন এম বলেন, ‘‘হাতির একেবারে সামনে পড়ে যাওয়াতেই বিপত্তি। এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়টি দেখা হচ্ছে।’’
বন দফতর ও স্থানীয় সূত্রে খবর, এ দিন ভোরে বাড়ির পিছনে অল্প দূরে ধান জমিতে যাচ্ছিলেন ধুমনাথ। সেখানেই একটি দাঁতালের সামনে তিনি পড়ে যান। কিছু বুঝে ওঠার আগেই বৃদ্ধকে হাতিটি শুঁড়ে পেঁচিয়ে আছড়ে মারে। পড়শিদের চিৎকারে হাতিটি সেখান থেকে সরে যায়। তখন তাঁরা ধুমনাথকে উদ্ধার করে প্রথমে বাঘমুণ্ডির পাথরডি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। অবস্থা গুরুতর থাকায় প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাঁকে পুরুলিয়া মেডিক্যালে পাঠানো হয়। পরিজনেরা জানান, পুরুলিয়া মেডিক্যালে পৌঁছানোর পরে চিকিৎসক পরীক্ষার করে জানান পথেই ধুমনাথের মৃত্যু হয়েছে।
ধুমনাথের বড় ছেলে ভিখুরামের কথায়, ‘‘গ্রাম থেকে কিছুটা দূরে জঙ্গলে হাতি রয়েছে বলে বন দফতর মাইকে প্রচার করেছিল। তবে সেই হাতি ভোরে জঙ্গল থেকে বেরিয়ে গ্রামের কাছে এসে বাবার প্রাণ কেড়ে নেবে আন্দাজ করতে পারিনি।’’ স্বামীর মৃত্যুতে কথা বলার অবস্থায় ছিলেন না ধুমনাথের স্ত্রী মুনুবালা সরেন। কাঁদতে কাঁদতে শুধু বলেন, ‘‘সব শেষ হয়ে গেল।’’
তাঁদের পড়শি বীরেন্দ্রনাথ মুর্মু বলেন, ‘‘এলাকায় হাতির আনাগোনা থাকলেও এমন ঘটনা আগে কখনও ঘটেছে বলে মনে করতে পারছি না। মাঠে আমন ধান রয়েছে। এই ঘটনার পরে মাঠে যেতেও ভয় করছে।’’
এলাকার অনেকের কথায়, ঝাড়খণ্ড থেকে আসা হাতিদের উপদ্রব এলাকায় নতুন কিছু নয়। আমনের মরসুমে ধানের টানে তাদের আনাগোনা বাড়ে। এর বাইরেও বছরের বিভিন্ন সময়ে হাতিদের আসা-যাওয়া থাকে। তাঁদের দাবি, হাতিরা যাতে ঝাড়খণ্ড থেকে ঢুকতে না পারে, সে জন্য বন দফতরের আরও সক্রিয়তা প্রয়োজন।
বন দফতর জানাচ্ছে, কয়েকদিন আগে ঝাড়খণ্ড থেকে হাতির একটি দল ঢুকেছে। বর্তমানে মাঠার চড়কপাথরের জঙ্গলে ১৬টি হাতি আশ্রয় নিয়েছে। ক’দিন আগে ওই দল থেকে দু’টি হাতি আলাদা হয়ে কয়েক কিলোমিটার দূরে টিকরটাঁড়ের জঙ্গলে ঢুকে যায়। তাদেরই এক জনের হানায় এ দিন বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। হাতিগুলির উপরে নজর রাখা হচ্ছে এবং সে মতো বাসিন্দাদের সতর্ক করা হচ্ছে বলে বন দফতরের দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy