আইনজীবীর মাধ্যমে চিঠি দিয়ে অমর্ত্য সেন সময় চেয়ে নিয়েছেন বলে খবর। — ফাইল ছবি।
অমর্ত্য সেনকে উচ্ছেদের নোটিস পাঠিয়েছিলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এ বার বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে পাল্টা চিঠি দিলেন অমর্ত্য সেন। আইনজীবীর মাধ্যমে চিঠি দিয়ে তিনি সময় চেয়ে নিয়েছেন বলে খবর।
আগামী ২৯ মার্চ অমর্ত্যকে জমি মামলার শুনানিতে হাজিরা দিতে বলে নোটিস পাঠিয়েছিলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। সেই নোটিসের প্রেক্ষিতেই শুক্রবার চিঠি দিয়েছেন অমর্ত্য। এই প্রসঙ্গে তাঁর আইনজীবী গোরাচাঁদ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বিশ্বভারতী শো কজ় করেছে যে, কেন তাঁকে উৎখাত করা হবে না ওই জায়গা থেকে, বিশ্বভারতীর জয়েন্ট রেজিস্ট্রার এবং এস্টেট অফিসার যে নোটিস দিয়েছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে টাইম প্রেয়ার করেছি। লিখেছি, অনিবার্য পরিস্থিতিতে এবং কারণবশত জমি সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় নথি যদি কিছু থেকে থাকে, তা না পাওয়া পর্যন্ত জবাব দিতে পারছি না। তাই চার মাস সময় চেয়েছি।’’ বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ চিঠি গ্রহণ করেছেন বলেই শুনেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘জয়েন্ট রেজিস্ট্রার এবং এস্টেট অফিসারকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। রিসিভ হয়েছে বলে শুনেছি। এখনও কোনও প্রতিলিপি পাইনি।’’
দিন কয়েক আগে বিশ্বভারতী নোটিস পাঠিয়ে দাবি করে, অমর্ত্য বিশ্বভারতীর ১৩ ডেসিমেল জমি দখল করে রেখেছেন। তাই আইন মেনে তাঁকে কেন ওই জমি থেকে উচ্ছেদ করা হবে না, সেই জবাব দিতে হবে।
অমর্ত্যের বাড়ির জমি নিয়ে বিতর্ক গত কয়েক মাস ধরেই চলছে। কিছু দিন আগে অর্থনীতিবিদ যখন শান্তিনিকেতনে ছিলেন, সে সময়ই তাঁকে একটি চিঠি পাঠান বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। সেখানে বলা হয়, অতি শীঘ্রই ১৩ ডেসিমেল জমি বিশ্ববিদ্যালয়কে ফেরত দিতে হবে। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রথম থেকেই দাবি করে আসছেন, ১৯৪৩ সালে অমর্ত্যের বাবা আশুতোষকে কখনওই ১.৩৮ একর জমি লিজ় দেওয়া হয়নি। ১.২৫ একর জমি লিজ় দেওয়া হয়েছিল। তার ভিত্তিতে বিশ্বভারতী অমর্ত্যের বিরুদ্ধে ১৩ ডেসিমেল জমি দখলের অভিযোগ করেছে। তাঁদের আরও বক্তব্য, ’৪৩ সালে বিশ্বভারতী এবং আশুতোষের মধ্যে স্বাক্ষরিত লিজ়ের নিবন্ধিত দলিল ও ২০০৬ সালে কর্মসমিতিতে পাশ হওয়া প্রস্তাব থেকে স্পষ্ট, আশুতোষ বা অমর্ত্যকে ১.৩৮ একর জমি তো দূরের কথা, বিশ্বভারতীর কোনও জমিরই মালিকানা দেওয়া হয়নি। শান্তিনিকেতনে ‘প্রতীচী’ নামের প্রাঙ্গণে অমর্ত্যের বাসভবনটিও বিশ্বভারতীর মালিকানাধীন জমিতে তৈরি। এর মাঝেই নোবেলজয়ীকে নোটিস পাঠিয়ে সেই জমি ফেরতের দাবি তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ওই নোটিস ঘিরে জোরালো হয় বিতর্ক।
অমর্ত্য পাল্টা দাবি করেন ওই বাড়ির জমির একটা অংশ বিশ্বভারতীর থেকে লিজ় নেওয়া, কিছুটা জমি কেনা। এখন মিথ্যে কথা বলছেন কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে শান্তিনিকেতনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অমর্ত্যের সঙ্গে দেখা করেন। অর্থনীতিবিদের হাতে জমির মাপজোক সংক্রান্ত কাগজপত্র তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। নিজেই বিএলআরও অফিসে গিয়েছিলেন মমতা। এর পর বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে তোপ দেগে মমতা বলেন, ‘‘এ ভাবে মানুষকে অপমান করা যায় না।’’ হুঁশিয়ারি দেন আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy