Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
ভৈরবপুর সমবায় সমিতি

তছরুপের তদন্ত নিয়ে অভিযোগ

বড়জোড়ার ভৈরবপুর সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতিতে আমানতকারীদের রাখা প্রায় ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা তছরুপের অভিযোগ ওঠে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:২৭
Share: Save:

বাঁকুড়ার বড়জোড়ায় ভৈরবপুর সমবায় দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত যথাযথ হচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলছেন আমানতকারীদের একাংশ। অবিলম্বে ওই সমবায়ের আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়ার দাবি নিয়ে তাঁরা জেলাশাসক, সমবায় আধিকারিক, এমনকি, পুলিশ সুপারের কাছেও একাধিক বার গিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, কিছুতেই কিছু হয়নি। তবে রাজ্যের সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, “ভৈরবপুর সমবায় দুর্নীতির ঘটনায় বাঁকুড়া পুলিশকে কড়া তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। দোষীদের কাউকে রেয়াত করা হবে না। অভিযুক্তেরা গ্রেফতার হলেই আমানতকারীদের টাকা আদায় করতে পদক্ষেপ করব।”

বড়জোড়ার ভৈরবপুর সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতিতে আমানতকারীদের রাখা প্রায় ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা তছরুপের অভিযোগ ওঠে। ঘটনাটি নিয়ে গত বছর ২ ডিসেম্বর ওই সমবায়ের চেয়ারম্যান, সম্পাদক-সহ মোট সাত জনের বিরুদ্ধে বড়জোড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন সমবায় দফতরের বাঁকুড়া রেঞ্জের ডেপুটি রেজিস্ট্রার পিয়ালি সাহা। তদন্তে উঠে এসেছে, তছরুপ হওয়া টাকার মোটা অংশই গিয়েছে এই ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত তালড্যাংরার বাসিন্দা তন্ময় গোস্বামীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে।

দুর্নীতি-কাণ্ডে অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরে দু’মাস পার হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সমবায় পরিচালন কমিটির সম্পাদক ও আরও এক জন ছাড়া, পুলিশ মূল অভিযুক্তদের কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি। যা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন প্রতারিত মানুষজন। ভৈরবপুরের বাসিন্দা নরেন ঘড়ুইয়ের দাবি, তিনি ও তাঁর ভাই মোট আট লক্ষ টাকা ওই সমবায়ে রেখেছিলেন। দু’জনেরই মেয়ে রয়েছে। বিয়ে দেওয়ার জন্য টাকা জমিয়েছিলেন তাঁরা। এখন দুই মেয়েরই বিয়ের কথা পাকা হয়ে গিয়েছে। তবে টাকার অভাবে দিনক্ষণ ঠিক করতে পারছেন না বাবারা।

একই পরিস্থিতি ভৈরবপুরের বাসিন্দা বাউল ঘোষের। তিনিও মেয়ের বিয়ের জন্য প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা সমবায়ে রেখেছিলেন। মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়ে গেলেও টাকার অভাবে দিনক্ষণ ঠিক করতে পারছেন না। বাউলবাবু বলেন, “কিছু জমিজমা রয়েছে। সেগুলি বিক্রি করে মেয়ের বিয়ের বন্দোবস্ত করব ভেবেছি। কিন্তু গ্রামের বেশিরভাগ মানুষই এই ঘটনায় টাকা খুইয়েছেন। তাই জমির ক্রেতাও পাচ্ছি না।” এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের দাবি, অবিলম্বে প্রতারিতদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করুক সরকার। দোষীদের গ্রেফতার করা হোক। তাঁরা বলেন, “আমরা টাকা ফেরত চাই। জেলাশাসক থেকে সমবায় দফতর, এমনকি পুলিশ সুপারের কাছেও এই দাবি তুলেছি। পুলিশ দোষীদের গ্রেফতার পর্যন্ত করতে পারছে না।”

সমবায় দফতরের বাঁকুড়া রেঞ্জের ডেপুটি রেজিস্ট্রার পিয়ালিদেবী বলেন, “ঘটনার তদন্তে পুলিশের অগ্রগতি কত দূর তা জানতে থানায় চিঠি পাঠিয়েছি। আমানতকারীরা টাকা ফেরতের দাবি তুলেছেন। রাজ্যের কাছে তাঁদের দাবি জানানো হয়েছে।” বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও জানান, সমবায় দুর্নীতির ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে। যে সব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সমবায়ের টাকা পাঠানো হয়েছে, সেগুলির লেনদেন প্রক্রিয়া বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে। পুলিশ সুপারের দাবি, “তদন্ত ঠিক পথেই এগোচ্ছে।”

যদিও সিপিএমের বড়জোড়া এরিয়া কমিটির সম্পাদক সুজয় চৌধুরী বলেন, “পুলিশ ঠিক পথে তদন্ত করছে না। মূল দোষীদের বড় অংশই গ্রেফতার হয়নি। পুলিশ সচেষ্ট হলে এত দিনে সবাই ধরা পড়ত।”

অন্য বিষয়গুলি:

Corruption Scam Cooperative
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy