Advertisement
E-Paper

‘পুকুর বুজিয়ে’ প্রকল্পের বাড়ি, মহকুমাশাসকের কাছে জমা পড়ল তদন্ত-রিপোর্ট

নিয়ম ভেঙে অন্যের পুকুর ভরাট করে ওই প্রকল্পের বাড়ি তৈরির অভিযোগকে ঘিরে সরগরম হয়ে উঠেছে বিষ্ণুপুর শহরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ড।

বিষ্ণুপুর শহরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের আবড়ার মাঠের কাছে এই পুকুরের পাশে নির্মাণ ঘিরে বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র

বিষ্ণুপুর শহরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের আবড়ার মাঠের কাছে এই পুকুরের পাশে নির্মাণ ঘিরে বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:৩৫
Share
Save

উপভোক্তার জমিতেই আবাস যোজনার প্রকল্পের বাড়ি তৈরি করার কথা। কিন্তু নিয়ম ভেঙে অন্যের পুকুর ভরাট করে ওই প্রকল্পের বাড়ি তৈরির অভিযোগকে ঘিরে সরগরম হয়ে উঠেছে বিষ্ণুপুর শহরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ড। পুকুর মালিকদের তরফে অভিযোগ পেয়ে মহকুমাশাসকের নির্দেশে তদন্ত করে রিপোর্ট জমা গিয়েছে ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর। তার পরেই পুলিশকে ওই নির্মাণ বন্ধের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন মহকুমাশাসক। একই সঙ্গে কী ভাবে পুকুর ভরাট করা জায়গায় পুরসভা সরকারি প্রকল্পের নির্মাণ তৈরি করার ছাড়পত্র দিল, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও।

১৫ নম্বর ওয়ার্ডের আবড়ার মাঠের পাশেই পানায় ঢাকা একটি পুকুরের পাড়ে কয়েক ঘর মানুষের বাস। অভিযোগ, তাঁদের মধ্যে কয়েকজনের ওই পুকুরের একাংশ ভরাট করে আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরি করা হচ্ছে। শিখা কর, গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সারদা বন্দ্যোপাধ্যায়, সমর বন্দ্যোপাধ্যায় ও পুষ্প চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ নিজেদের ওই পুকুরের মালিক দাবি করে ৬ ডিসেম্বর মহকুমাশাসকের (বিষ্ণুপুর) কাছে ওই অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁদের অভিযোগ, ‘‘সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী, তথ্য প্রমাণ দেখে কোনও উপভোক্তার জমির মালিকানা নিয়ে নিশ্চিত হওয়ার পরে, সেই জায়গায় প্রকল্পের নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়। এ ক্ষেত্রে কোন নথির উপরে নির্ভর করে পুরসভা আবাস যোজনার ঘর তৈরির অনুমতি দিয়েছে?’’

মঙ্গলবার তাঁরা আক্ষেপ করেন, ‘‘আমরা মহকুমাশাসককে লিখিত অভিযোগ জানানোর পরেও নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়নি। তড়িঘড়ি করে আমাদের জায়গাতেই এখন ছাদ ঢালাই করছেন তাঁরা। আমরা আদালতের আশ্রয় নিতে বাধ্য হব।” যদিও উপভোক্তারা এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

মহকুমাশাসক (বিষ্ণুপুর) বলেন, “বেআইনি ভাবে অন্যের জায়গায় সরকারি প্রকল্পের বাড়ি নির্মাণ চলছে বলে অভিযোগ পেয়ে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে জানাই। ভূমি দফতর তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দিয়েছে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, পুকুর ভরাট করে আবাস যোজনার কয়েকটি বাড়ি তৈরি করা হচ্ছে। উপভোক্তারা ওই জায়গার মালিকও নয়। পুলিশকে কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছি।’’

বিষ্ণুপুর পুরসভার এগজিকিউটিভ অফিসার রবীন্দ্রনাথ সরকার বলেন, “সরকারি বাড়ি নির্মাণ করতে হলে উপভোক্তার নিজস্ব জায়গা থাকতে হবে। জায়গার উপযুক্ত তথ্য-প্রমাণ জমা দিতে হয় পুরসভায়। দখলি জায়গার ক্ষেত্রে মালিকের ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ জমা দিতে হবে উপভোক্তাদের। আবড়ার মাঠের ঘটনাটি নিয়ে পুরসভায় কেউ অভিযোগ করেননি। তবে খোঁজ নিয়ে দেখছি কী হয়েছে।” মহকুমা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক (বিষ্ণুপুর) ফাল্গুনী শতপথী বলেন, “পুকুর বোজানো তো দূরের কথা, পুকুরপাড়েও বাড়ি তৈরি করা যায় না। মহকুমা দফতরের চিঠি পেয়েই তিন দিনের মধ্যে বিষ্ণুপুরের বিএলআরও তদন্ত রিপোর্ট পাঠিয়ে দিয়েছেন মহকুমাশাসকের দফতরে।” বিষ্ণুপুর পুরপ্রধান শ্যাম মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘৪০ থেকে ৫০ বছর ধরে পুকুরের পাড়ে বাস করছেন কয়েকটি নিঃস্ব পরিবার। তাঁদের বাড়ি নির্মাণ খুবই প্রয়োজন। পুরনো মাটির বাড়ি ভেঙে সেই জায়গাতেই তাঁরা প্রকল্পের বাড়ি তৈরি করছেন। তবে জায়গার মালিকেরা আইনের পথে যেতেই পারেন।” ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর চৈতালি চৌধুরীর দাবি, ‘‘পুকুরপাড়েই ওঁরা দীর্ঘদিন বাস করছেন। তা দেখেই অনুমতি দেওয়া হয়েছে।’’

এসডিপিও (বিষ্ণুপুর) প্রিয়ব্রত বক্সী বলেন, “বিষ্ণুপুর থানা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের কাছে ওই জায়গার উপযুক্ত নথিপত্র চেয়েছে। তা পেলেই খতিয়ে দেখা হবে।’’ কিন্তু এ দিনও নির্মাণ চলছে। তা নিয়ে মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘এখনও কী ভাবে বেআইনি নির্মাণ চলছে খোঁজ নিয়ে দেখছি। প্রয়োজনে পুলিশ টহলের ব্যবস্থা করতে হবে।”

স্থানীয় আবড়ার গাজন কমিটির পক্ষে পান্নালাল পরামানিক, সোমনাথ কর্মকার, অজয় দাসের মতো অনেকেরই অভিযোগ, ‘‘ওই পুকুরে নিকাশি নালার নোংরা জল পড়ে। সেখানেই স্নান করেন গাজনের সন্ন্যাসীরা। কিন্তু পুকুরটি দিন দিন বেদখল হয়ে যাচ্ছে। প্রশাসন সক্রিয় না হলে এক দিন হয়তো পুকুরটি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।’’

Bishnupur Pond Home

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

ক্যানসেল করতে পারবেন আপনার সুবিধামতো

Best Value
প্রতি বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
প্রতি মাসে

৪২৯

১৬৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।