প্রতীকী ছবি
ফের সমবায়ে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠল বাঁকুড়ায়। ঘটনাটি ঘটেছে বড়জোড়ার ভৈরবপুর সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতিতে। সাধারণ মানুষের আমানত ও ওই সমবায়ের জমা অর্থ থেকে প্রায় ১ কোটি ৩১ লক্ষ টাকা তছরুপ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে সোমবার বাঁকুড়া রেঞ্জের ডেপুটি রেজিস্টার অব কো-অপারেটিভ সোসাইটি পিয়ালি সাহা বড়জোড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন ভৈরবপুর সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির পরিচালন কমিটির চেয়ারম্যান বিদ্যুৎ রাজ, সম্পাদক নেপাল ঘড়ুই, বাঁকুড়া সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের বড়জোড়া শাখার প্রাক্তন ম্যানেজার কুমারকান্তি বসু, ওই ব্যাঙ্কের প্রাক্তন ফিল্ড সুপারভাইজ়ার দীনবন্ধু মণ্ডল, তালড্যাংরার বাসিন্দা তন্ময় গোস্বামী এবং বড়জোড়ার জপমালি গ্রামের দুই বাসিন্দা সৌরভ কেশ ও বুদ্ধদেব রায়।
সমবায় দফতরের আধিকারিকদের সূত্রে জানা যাচ্ছে, তদন্তে উঠে এসেছে সাধারণ মানুষের জমানো টাকা, ফিক্স ডিপোজ়িট, রেকারিং আর ওই নিজস্ব তহবিল মিলিয়ে মোট ১ কোটি ৩১ লক্ষ ৯৯ হাজার ৫৬৭ টাকা ছিল ভৈরবপুর সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতিতে। বর্তমানে রয়েছে প্রায় ২২ হাজার টাকা।
গত ১৯ নভেম্বর বড়জোড়া ব্লক সমবায় দফতরে সিপিএমের পক্ষ থেকে ভৈরবপুর সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তদন্ত দাবি করা হয়। তার পরেই নড়েচড়ে বসে সমবায় দফতর। ওই সমবায়ে গিয়ে হিসেবে বড় গরমিল দেখতে পান তদন্তকারীরা। তাঁদের দেওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতেই দফতরের তরফে বড়জোড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
বাঁকুড়ার ডেপুটি রেজিস্টার অব কো-অপারেটিভ পিয়ালিদেবী বলেন, “ওই সমবায়ে বড় অঙ্কের টাকার গরমিল তদন্তে উঠে এসেছে। তার ভিত্তিতেই এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।” ভৈরবপুর সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির চেয়ারম্যান বিদ্যুৎবাবু বুধবার ফোনে বলেন, “সমবায়ের আর্থিক দুর্নীতির সঙ্গে আমার সম্পর্ক নেই। টাকাপয়সা লেনদেনের কাজ সমবায়ের ক্যাশিয়ার নিজেই করতেন। অভিযোগে কেন তাঁর নাম উঠে এল না, সেটাই বুঝতে পারছি না।”
২০১৬ সালে বন্ড কেনার নামে সরাসরি এক দালালকে টাকা দিয়ে প্রায় ১৫ কোটি টাকা খুইয়েছিল বাঁকুড়া ডিস্ট্রিক্ট সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক (বিডিসিসিবি)। ঘটনাটি বেশ কয়েক মাস ধামাচাপা থাকে। পরে এ নিয়ে কেউ কেউ মুখ খোলায় ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ অভিযোগ দায়ের করেন। ওই ঘটনায় রাজ্যের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি বিডিসিসিবি-র পরিচালন কমিটির বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছিলেন। তার পরে বড়জোড়ার এই সমবায়ে ফের কোটি টাকার দুর্নীতির ঘটনা সামনে আসায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বিভিন্ন মহলে।
‘পশ্চিমবঙ্গ সমবায় বাঁচাও কমিটি’র জেলা সহ-সভাপতি প্রতীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, “একের পরে এক দুর্নীতির ঘটনা যে ভাবে উঠে আসছে, তাতে মানুষ আর সমবায়গুলির উপরে কতটা ভরসা রাখবেন সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।” সিপিএমের বড়জোড়া এরিয়া কমিটির সম্পাদক সুজয় চৌধুরী বলেন, “বহু গরিব, নিম্নবিত্ত মানুষ তাঁদের মেহনতের অল্প অল্প টাকা সমবায়ে জমা রাখেন। ভৈরবপুর সমবায়ে প্রায় ৯০০ গ্রাহক রয়েছেন। তাঁদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি তুলছি আমরা। অভিযুক্তদেরও কড়া শাস্তি চাই।”
ঘটনার যথাযথ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy