Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
school

স্কুল আছে, স্যর নেই! শিক্ষকের দাবিতে বাঁকুড়া স্কুল পরিদর্শকের দফতরে বিক্ষোভ স্থানীয়দের

খাগ গ্রামের আশপাশে আরও অন্তত ৮টি গ্রামের পড়ুয়াদের জন্য স্কুল থাকলেও তাতে নেই কোনও শিক্ষক। তাই স্থায়ী শিক্ষক চেয়ে জেলা স্কুল পরিদর্শকের দফতরে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা।

স্কুলে স্থায়ী শিক্ষক চেয়ে বিক্ষোভ স্থানীয় গ্রামবাসীদের।

স্কুলে স্থায়ী শিক্ষক চেয়ে বিক্ষোভ স্থানীয় গ্রামবাসীদের। — নিজস্ব ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২২ ১৬:৩৭
Share: Save:

স্কুল আছে। ইচ্ছুক পড়ুয়ার সংখ্যাও নয় নয় করে একশো। কিন্তু শিক্ষক নেই। অগত্যা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কেউ জঙ্গলপথে ৯ কিলোমিটার দূরের স্কুলে ভর্তি হয়েছে। কারও ক্ষেত্রে আবার ঝুঁকি নিতে না পারায় মাঝপথেই থেমে গিয়েছে লেখাপড়া। এই অবস্থায়, স্কুলে স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে বৃহস্পতিবার ৮টি গ্রামের মানুষ বিক্ষোভ দেখালেন বাঁকুড়া জেলা স্কুল পরিদর্শকের দফতরে।

বাঁকুড়ার সোনামুখী ব্লকের প্রান্তিক গ্রাম খাগ। গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও হাই স্কুল নেই। কাছাকাছি হাই স্কুল বলতে পাঁচাল হাই স্কুল। তার দূরত্ব কম করেও ৬ কিলোমিটার। ২০১৪ সালে স্থানীয় সোনামুখী, ওন্দা ও বড়জোড়া ব্লক মিলিয়ে অন্তত ৮টি গ্রামের পড়ুয়াদের সুবিধার জন্য মধ্যবর্তী খাগ গ্রামে একটি জুনিয়ার হাই স্কুল চালু হয়। প্রাথমিক ভাবে ডেপুটেশনে থাকা দুই শিক্ষককে নিয়ে স্কুলে পঞ্চম, ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির ক্লাস চালু হয়। ধীরে ধীরে পড়ুয়ার সংখ্যা একশো ছুঁয়ে ফেলে। স্কুলে যথেষ্ট সংখ্যক শ্রেণিকক্ষ, অফিস ঘর, শিক্ষকদের ঘর, গ্রন্থাগার তৈরি হয়। চালু হয় মিড-ডে মিলও।

২০১৭-য় ডেপুটেশনে থাকা দুই শিক্ষক বদলি নিয়ে অন্যত্র চলে যাওয়ায় পঠনপাঠন বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৯ সালে পার্শ্ববর্তী স্কুল থেকে আবার দুই শিক্ষককে ডেপুটেশনে পাঠায় স্কুল শিক্ষা দফতর। ওই দুই শিক্ষক কাজে যোগ দেওয়ার পর স্কুলে ফের পঠনপাঠন শুরু হলেও ২০২০ সালের গোড়া থেকে করোনার জেরে স্কুল দীর্ঘ দিন বন্ধ হয়ে যায়। সে সময় ওই দুই শিক্ষকও উৎসশ্রী প্রকল্পে বদলি নিয়ে অন্যত্র চলে যান। ফলে আবার পড়া বন্ধ হয় স্কুলে। সেই সময় কিছু ছাত্রছাত্রী পাঁচালের স্কুলে ভর্তি হয়। আবার জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে পাঁচাল হাই স্কুলে যেতে না পারায় পড়াশোনা মাঝপথেই থমকে যায় কিছু পড়ুয়ার। স্থানীয় বাসিন্দা প্রসেনজিৎ ঘোষ বলেন, “আমাদের এলাকায় মূলত আদিবাসী ও তফসিলি জনজাতির মানুষের বাস। স্বাভাবিক ভাবে তাঁদের পরিবারের অধিকাংশ পড়ুয়া প্রথম প্রজন্মের শিক্ষার্থী। স্থানীয় খাগ জুনিয়ার হাই স্কুলে পঠনপাঠন বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে একটা বড় অংশের পড়ুয়া স্কুলছুট হয়ে পড়েছে। সরকারের এই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত।” স্থানীয় বাসিন্দা লোকনাথ ঘোষ বলেন, “আমাদের গ্রাম থেকে পাঁচাল হাই স্কুলে যেতে জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে ৬ থেকে ৯ কিলোমিটার যেতে হয়। জঙ্গলে কমবেশি সারা বছর হাতির দল ঘোরাফেরা করে। যে কোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। খাগ জুনিয়ার হাই স্কুলে দ্রুত স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামব।’’

বাঁকুড়া জেলা স্কুল পরিদর্শক পীযুষকান্তি বেরা বলেন, “খাগ জুনিয়ার হাই স্কুলের সমস্যার কথা আমরা জানি। কিন্তু ওই স্কুলে স্থায়ী শিক্ষক পদের অনুমোদন নেই। এই অবস্থায় অন্য স্কুল থেকে শিক্ষকদের ডেপুটেশনে পাঠিয়ে নতুন শিক্ষাবর্ষে ফের পঠনপাঠন শুরু করার ব্যাপারে পদক্ষেপ করা হবে।”

অন্য বিষয়গুলি:

school Teachers school inspector
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE