Advertisement
২৮ নভেম্বর ২০২৪
coronavirus

Coronavirus in West Bengal: ভোর থেকে লাইনে, টিকা বন্ধে বিক্ষোভ

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বেলা ১০টার আগেই লাগদা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বাইরে প্রচুর মানুষের ভিড় জমে যায়।

 টিকা মিলল না। লাগদা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বাইরে ভিড়।

টিকা মিলল না। লাগদা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বাইরে ভিড়। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৭:০৭
Share: Save:

করোনার প্রতিষেধক নিতে ভোর-রাত থেকে লাইন দিয়ে বেলায় স্বাস্থ্যকর্মীদের দেখা না পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন মানুষজন। বিক্ষোভের মুখে পড়েন পঞ্চায়েতের উপপ্রধানও। পরে, এক স্বাস্থ্যকর্মী এলে ভিড় প্রচণ্ড থাকায় শেষ পর্যন্ত করোনার টিকা আর দেওয়াই গেল না। মঙ্গলবার পুরুলিয়া ১ ব্লকের লাগদা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ঘটনা। কিছু দিন আগে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই টোকেন না পাওয়া মানুষের বিক্ষোভের জেরে ঘণ্টাখানেক টিকা দেওয়া বন্ধ রাখতে হয়েছিল স্বাস্থ্যকর্মীদের। তার আগে, দিনভর অপেক্ষা করেও টিকা না পেয়ে এই এলাকার বেলকুঁড়ি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীদের কয়েক ঘণ্টা ঘেরাও করে রাখার ঘটনাও ঘটেছিল।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বেলা ১০টার আগেই লাগদা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বাইরে প্রচুর মানুষের ভিড় জমে যায়। তখনও স্বাস্থ্যকর্মীরা না আসায় ক্ষোভ জমতে থাকে। বেলা গড়ানোয় বিক্ষোভ শুরু হয়। খবর পেয়ে সেখানে যান লাগদা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ময়ূরবাহন ঘোষাল। তাঁকে মানুষের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়। খোঁজ নিয়ে তিনি জানতে পারেন, স্বাস্থ্যকর্মীরা দুয়ারে সরকারের শিবিরে ও ব্লক সদরের বৈঠকে গিয়েছেন। তিনি ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে এক জন স্বাস্থ্যকর্মীকে নিয়ে এলেও প্রতিষেধক দেওয়ার কাজ শুরু করা যায়নি। এক জন স্বাস্থ্যকর্মীর পক্ষে এত মানুষকে প্রতিষেধক দেওয়া সম্ভব ছিল না। দুপুর ১২টার পরে জানানো হয়, এ দিন ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকা দেওয়া হবে না।

নদিয়াড়া গ্রামের বাসিন্দা আলোমণি রাজোয়াড়, বেলগাড়া গ্রামের বাসিন্দা বৃদ্ধ ছোটু সহিস দাবি করেন, ‘‘কাকভোরে লাইন দিয়েছি। দুপুরে জানানো হচ্ছে টিকা দেওয়া হবে না। আগেই জানাতে পারত!’’ সাবিত্রী মাহাতো বলেন, ‘‘এ দিন টিকা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। তা হলে কেন দেওয়া হল না?’’ নয়ন রাজোয়াড় নামে এক ব্যক্তির অভিযোগ, ‘‘টানা চার দিন ধরে ফিরে যাচ্ছি। এ দিন ভোরে লাইনে দাঁড়িয়েও টিকা পেলাম না।’’

উপপ্রধান ময়ূরবাহনবাবু বলেন, ‘‘এ দিন প্রচুর মানুষ এসেছিলেন। সে তুলনায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মজুত টিকা কম ছিল। অন্য দিকে, কর্মীদের কেউ দুয়ারে সরকারের শিবিরে ছিলেন, কেউ ব্লক অফিসে বৈঠকে গিয়েছিলেন। চেষ্টা করেও এ দিন আর টিকাকরণের কাজ শুরু করা যায়নি।’’

পুরুলিয়া ১ ব্লক মেডিক্যাল অফিসার রঞ্জিব রাণা বলেন, ‘‘প্রথমত প্রতিষেধক পেতে দেরি হয়েছে। দ্বিতীয়ত, দুয়ারে সরকার শিবিরের জন্য নিরাপত্তাকর্মী না পাওয়ায় এ দিন লাগদা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রতিষেধক দেওয়া সম্ভব হয়নি। তার উপরে এ দিন সেখানে যা পরিস্থিতি ছিল, তাতে টিকা দেওয়া সম্ভব হত না।’’ তিনি জানান, ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আজ, বুধবার টিকা দেওয়া হবে।

ঘটনাচক্রে, এ দিন ওই ব্লকেরই বেশ কয়েকটি উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র বন্ধ ছিল। সেখানেও চিকিৎসা পরিষেবা না পেয়ে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। কোটলুই গ্রামের উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অবস্থান রায়বাঁধ গ্রামে। বেলা সাড়ে ১১টায় গিয়ে দেখা যায়, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দরজায় তালা ঝুলছে। স্থানীয় বাসিন্দা স্বপন রক্ষিত, বনমালি মাহাতো বলেন, ‘‘কেন বন্ধ কেউ জানেন না।’’ পুরুলিয়া শহর লাগোয়া মাঙ্গুড়িয়া গ্রামের উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রও বন্ধ ছিল। স্থানীয় বাসিন্দা গুরুচরণ মাহাতো বলেন, ‘‘আজ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্মীরা আসেননি।’’ জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, ‘‘উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে মানুষজন নানা স্বাস্থ্য পরিষেবা পান। কেন উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি বন্ধ ছিল, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে খোঁজ নেব।’’

পুরুলিয়া জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিলকুমার দত্ত বলেন, ‘‘এ দিন কোনও উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র বন্ধ থাকার কথা নয়। কেন খোলা হয়নি খোঁজ নিচ্ছি।’’ ব্লক মেডিক্যাল অফিসার বলেন, ‘‘উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীদের এ দিন ব্লক সদরে বৈঠকে ডাকা হয়েছিল। সাধারণত মাসের শেষ শনিবার ব্লক সদরে বৈঠক হয়। তবে পরিষেবার মানোন্নয়নের জন্য কখনও সপ্তাহের মাঝেও বৈঠক ডাকতে হয়। সে জন্যই এ দিন বিভিন্ন উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র বন্ধ ছিল।’’

অন্য বিষয়গুলি:

coronavirus COVID-19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy