Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Bidyut Chakrabarty

ফলক-বিতর্কের মাঝেই বিদ্যুতের মেয়াদ ফুরোল বিশ্বভারতীতে, দায়িত্বে সঞ্জয়

কর্মজীবনের শেষ দিনেও উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো হতে পারে, এই আশঙ্কায় আগেভাগে মহিলা পুলিশ-সহ বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল তাঁর চারপাশে।

VC

বিদ্যুৎ চক্রবর্তী এবং সঞ্জয়কুমার মল্লিক। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২৩ ১৮:০৩
Share: Save:

উপাচার্য হয়ে আসা ইস্তক নানা বিতর্কে জড়িয়েছেন। ফলক-বিতর্কের মাঝেই মেয়াদ শেষ হল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর। বুধবার বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্ব পেলেন সঞ্জয়কুমার মল্লিক। কলাভবনের অধ্যক্ষ সঞ্জয় বিশ্বভারতীর কর্মসমিতিরও সদস্য। তাই বিদ্যুতের মেয়াদ শেষে বিশ্বভারতী অ্যাক্ট অনুযায়ী, সবগুলো ভবনের মধ্যে সবচেয়ে প্রবীণ অধ্যাপক হিসাবে অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্যের ভার নিলেন তিনি। তাই কোনও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত সঞ্জয় নিতে পারবেন না বলে জানাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাংশ।

বুধবার বাসভবন ‘পূর্বিতা’ থেকে দুপুরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে সরকারি কাগজে সই করেন বিদ্যুৎ। তাঁর কর্মজীবনের শেষ দিনেও দেখা গেল অদ্ভুত ছবি। তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো পারে, এই আশঙ্কায় আগেভাগেই মহিলা পুলিশ-সহ বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল বিদ্যুতের চারপাশে। পাশাপাশি মোতায়েন ছিলেন বিশ্বভারতীর নিরাপত্তারক্ষীরাও।

বিশ্বভারতীতে বিদ্যুতের সময়কালে তাঁর একাধিক সিদ্ধান্তে তোলপাড় হয়েছে বিশ্বভারতী। সেই বিতর্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণ ছাড়িয়ে রাজনীতির আঙিনায় চলে গিয়েছে। কখনও বিদ্যুৎ বিধানসভা ভোটে বিজেপির পরাজয় নিয়ে সেমিনারের আয়োজন করে সমালোচনার মুখে পড়েছেন। কখনও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন, তো কখনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মন্তব্য করেছেন। পাল্টা মুখ্যমন্ত্রীও তাঁকে কটাক্ষ করেছেন। সব মিলিয়ে গোটা কার্যকালই নানা বিতর্কে জড়িয়েছেন বিদ্যুৎ। কার্যকালের মেয়াদ শেষেও বিতর্কেই জড়িয়ে রইলেন তিনি।

সম্প্রতি বিশ্বভারতীর পক্ষে উপাসনা গৃহ, ছাতিমতলা এবং রবীন্দ্রভবনের উত্তরায়ণের সামনে শ্বেতপাথরের ফলক বসানো হয়েছে। তাতে লেখা হয়েছে, ‘ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’। তার ঠিক নীচে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিদ্যুতের নাম রয়েছে। তাতে কবিগুরুর উল্লেখ নেই। এই ফলক-বিতর্কে সরব তৃণমূল। শান্তিনিকেতনে ‘কবিগুরু মার্কেট’-এ প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে তারা ধর্না করছে। বিদ্যুতের বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন পড়ুয়া এবং আশ্রমিকদের একটা বড় অংশ। অন্য দিকে, বিদ্যুতের মেয়াদকাল শেষ হতেই সমাজমাধ্যমে আছড়ে পড়ছে নানা পোস্ট। কোথাও কোথাও লেখা হচ্ছে, ‘‘লোডশেডিং হলে (বিদ্যুৎ চলে গেলে) বাঙালি এত খুশি আগে কখনও হয়নি।’’

উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হওয়া এবং নতুন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের নাম প্রকাশ্যে আসায় বিশ্বভারতীর সেন্ট্রাল অফিসের সামনে অধ্যাপক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীদের মিষ্টিমুখ করতে দেখা যায়। মিষ্টি মুখ করেন ‘বিদ্যুৎ-বিরোধী’ হিসাবে পরিচিত অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য এবং অধ্যাপক সংগঠন ভিভিইউফার সদস্যরা।

অন্য দিকে, ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সঞ্জয় বিশ্বভারতীরই প্রাক্তনী। তাঁর গবেষণায় গুরুত্ব পেয়েছিল আধুনিক ভারতীয় চিত্রকলা এবং চল্লিশের দশকের বাংলা। এ ছাড়াও ‘মিনিয়েচার পেন্টিং’ নিয়েও গবেষণা রয়েছে সঞ্জয়ের। একাধিক গবেষণাপত্র এবং বেশ কয়েকটি বইয়ের লেখক তিনি। ১৭ বছরের বেশি সময়ে বিশ্বভারতীতে শিক্ষকতা করছেন সঞ্জয়। তার আগে কিছু দিন জেএনইউ-তেও পড়িয়েছেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Bidyut Chakrabarty Visva-Bharati VC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy