Advertisement
E-Paper

কৃষি-জমি মিউটেশনে গতির নির্দেশ

জেলা কৃষি দফতর সূত্রে খবর, নিজের নামে জমি নথিভুক্ত না থাকলে ‘কৃষকবন্ধু’, ‘কিসান ক্রেডিট কার্ড’, ‘কৃষি-সেচ যোজনা’-এর মতো বেশ কিছু সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পান না চাষিরা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় 

শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:১৪
Share
Save

কৃষি-জমির মিউটেশন ফি-তে আগেই ছাড় দিয়েছে রাজ্য সরকার। তার পরেও ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে গিয়ে সে কাজ করাতে জুতোর শুকতলা ক্ষয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করছিলেন কৃষকদের বড় অংশ। সে কাজে গতি আনতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এ বার ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতে মিউটেশনের আবেদন বেশি করে জমা করাতে প্রচারে নামতে চলেছে কৃষি দফতর।

মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার জানান, বৃহস্পতিবারই মুখ্যমন্ত্রী ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতে চাষিদের জমির মিউটেশন প্রক্রিয়ার কাজে গতি আনার নির্দেশ দেন। সে মোতাবেক রাজ্য প্রশাসনের তরফে প্রতিটি জেলার ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর এবং কৃষি দফতরকে যৌথ ভাবে এ নিয়ে কাজ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। প্রদীপবাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী কৃষকদের জমির মিউটেশন ফি মকুব করেছেন। তার পরেও চাষ জমির মিউটেশনের কাজে তেমন গতি আসছিল না। দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতে এই আবেদন নেওয়া হচ্ছিল। তবে তারও গতি বাড়াতে মুখ্যমন্ত্রী এই নির্দেশ দিয়েছেন।’’

বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, রাজ্যের নির্দেশের পরেই শুক্রবার বাঁকুড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) শঙ্কর নস্কর ব্লকগুলির ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক এবং জেলা ও ব্লকের কৃষি কর্তাদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্স করেন। প্রশাসনের একটি বিশেষ সূত্রে খবর, ওই বৈঠকে অতিরিক্ত জেলাশাসক কৃষি দফতরকে এ নিয়ে প্রচারে নামার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি, শিবিরে জমা হওয়া কৃষি জমির মিউটেশনের কাজ সাত দিনের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “আমাদের লক্ষ্য, দ্রুত জমির মিউটেশন প্রক্রিয়া শেষ করা ও চাষিরা যাতে শিবিরে আসেন, তা নিয়ে প্রচার চালানো।” জেলার উপকৃষি অধিকর্তা সুশান্ত মহাপাত্র বলেন, “আমরা লিফলেট ছাপিয়ে এলাকায় বিলি করে এবং মাইকে প্রচার চালিয়ে জমির মিউটেশনের আবেদন নিয়ে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির শিবিরে যাওয়ার জন্য চাষিদের সচেতন করব।”

জেলা কৃষি দফতর সূত্রে খবর, নিজের নামে জমি নথিভুক্ত না থাকলে ‘কৃষকবন্ধু’, ‘কিসান ক্রেডিট কার্ড’, ‘কৃষি-সেচ যোজনা’-এর মতো বেশ কিছু সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পান না চাষিরা। একই কারণে সরকারি ধান্যক্রয় শিবিরে গিয়ে ধানও বিক্রি করতে পারেন না।

কৃষি দফতর সূত্রে জানা যাচ্ছে, বাঁকুড়া জেলায় তিন লক্ষ ৮০ হাজার ১১১টি কৃষক পরিবার রয়েছে। তাদের মধ্যে রাজ্য সরকারের ‘কৃষকবন্ধু’ প্রকল্পের আওতায় রয়েছে জেলার দু’লক্ষ ৩৪ হাজার কৃষক পরিবার। ওই প্রকল্পের বাইরে থাকা বেশির ভাগ পরিবারের নিজের নামে জমির রেকর্ড না থাকায় সরকারি সুবিধার আওতায় আসতে পারছে না তারা। আবার এমনও চাষি রয়েছেন, যাঁদের জমির কিছুটা অংশ নিজের নামে থাকলেও বড় অংশ অন্যের নামে রয়েছে। সে ক্ষেত্রে তাঁরা প্রকল্পের সুবিধার টাকাও কম পান।

ছাতনার চাষি দুই ভাই গজানন কুণ্ডু ও পঞ্চানন কুণ্ডু বলেন, “বাবার নামে সাত একর জমি রয়েছে। আমরা চার ভাই তার অংশীদার। বাবার মৃত্যুর দু’দশক পরেও জমির মিউটেশন করাতে পারিনি। নিজেদের নামে অল্প কিছু জমি রয়েছে। তা দিয়ে কৃষকবন্ধু প্রকল্পের টাকা পাই। তবে বাকি জমিও নিজেদের নামে নথিভুক্ত থাকলে পাওনা ভর্তুকির টাকার অংশও বাড়ত।”

‘কৃষকসভা’র বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক যদুনাথ রায় দাবি করেন, “মুখ্যমন্ত্রী আগেও সাত দিনের মধ্যে কৃষকদের জমির মিউটেশন প্রক্রিয়া সারার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তার পরেও মাসের পরে মাস ভূমি দফতরে ছুটে গিয়েও জমির মিউটেশনের কাজ করাতে পারেননি কৃষকেরা। এ বারও সেই অবস্থা হয় কি না, কিছু দিনের মধ্যেই জানা যাবে। আমাদের ধারণা, ভোটের কথা মাথায় রেখেই ফের চাষিদের মিথ্যা আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে।” যদিও রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী তথা জেলা তৃণমূল সভাপতি শ্যামল সাঁতরা দাবি করছেন, ‘‘তৃণমূল সরকার যে ভাবে প্রশাসনিক জটিলতা কাটিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে গিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে, তা অন্য রাজ্য সরকারগুলোর শেখার মতো।”

farming land MUtation

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে আপনার সাবস্ক্রিপশন আপনাআপনি রিনিউ হয়ে যাবে

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।