নেশার টানে কি অপরাধে প্রবৃত্ত হচ্ছে অনেকে? রবিবার নলহাটি ও মুরারইয়ের তিনটি ঘটনায় সেই প্রশ্নই সামনে এসেছে।
রবিবার সকালে প্রথম ঘটনাটি ঘটে নলহাটি থানার কাঁটাগড়িয়া গ্রামে। টোটো চুরি করে পালাতে গিয়ে মধুরা গ্রামে হাতেনাতে ধরা পড়ে এক নাবালক। স্থানীয়রা জানান, অল্প বয়সে নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ার জন্য এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে নাবালক দাবি করে। স্থানীয়দের অনেকেই তাকে মারতে উদ্যত হলেও চুরি যাওয়া টোটো মালিকের আত্মীয় সকলকে থামিয়ে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ গ্রামে গিয়ে নাবালককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। টোটোর মালিক নীলকান্ত মাল বলেন, “টোটো রেখে খেতে গিয়েছিলাম। এসে দেখি টোটো নেই। সঙ্গে সঙ্গে পরিচিতদের ফোন করে ঘটনার জানাই। এক নাবালক এ ভাবে টোটো চুরি করবে ভাবতেই পারছি না।”
এ দিন দুপুরে দ্বিতীয় ঘটনা ঘটে মুরারই থানার রাজগ্রামে। রেলের লোহা চুরি করতে গিয়ে পুলিশের কাছে পাকড়াও হয় এক বছর পঁচিশের যুবক। আরপিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজগ্রামে ও পাকুড় স্টেশনের মধ্যে রেলের বোর্ড ও লোহা চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে রাজগ্রামেরই বাসিন্দা সুরাজ শেখ। এলাকার ভিলেজ পুলিশের তৎপরতায় তাকে আটক করা হয়।
পাকুড় আরপিএফ তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করলে সে পুকুরে চুরি করা লোহা লুকিয়ে রাখার কথা স্বীকার করে। পুকুর থেকে লোহা উদ্ধার করা হয়। স্থানীয় মানুষজনের দাবি, রাজগ্রাম এলাকায় মাদক বিক্রি বেড়েছে। অনেকেই এই নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েছে। সেই জন্য এলাকায় চুরির ঘটনা দিন দিন বাড়ছে। প্রশাসন এই নেশা সামগ্রী বিক্রি বন্ধ না করলে অসামাজিক কাজ বাড়বে বলে অনেকেই আশঙ্কা করছেন।
এ দিন দুপুরেই আবার নলহাটিতে এক মদ্যপ ব্যক্তি সাইকেল চুরি করে পালাতে গিয়ে বাসস্ট্যান্ডের কাছে ধরা পড়ে। তাঁকে স্থানীয়রা মারধর শুরু করলেও পুলিশের তৎপরতায় উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এ দিন পরপর এমন ঘটনায় নলহাটি ও মুরারই এলাকার মানুষজনের অভিযোগ, নলহাটি ও রাজগ্রাম পাথর শিল্পাঞ্চলে এই নেশার সামগ্রী বেশি বিক্রি হচ্ছে। নেশায় আসক্ত যুবকেরা টাকা না থাকলে চুরি করে টাকা জোগারের চেষ্টা করছে।
জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “নেশার সামগ্রী বিক্রি ও যারা কিনছেন তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। এছাড়াও এলাকায় চুরির ঘটনায় গ্রেফতার করা হচ্ছে। এই বিষয়ে জেলা পুলিশের বিশেষ নজরদারি চলছে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)