Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
purulia

কুড়মি-ক্ষোভকে  বিজেপিমুখী  করতে নির্দেশ

দলের একটি সূত্রের খবর, এ দিন অভিষেক জেলা নেতৃত্বকে জানান, দলের মেদিনীপুরের এক নেতার কুড়মিদের সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্যের জন্য স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী ক্ষমা চেয়েছেন।

কুড়মিদের প্রতিবাদ।

কুড়মিদের প্রতিবাদ। — ফাইল চিত্র।

প্রশান্ত পাল 
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০২৩ ০৯:৪৪
Share: Save:

কুড়মি-কাঁটা পঞ্চায়েত ভোটের মুখে জঙ্গলমহলে অস্বস্তিতে ফেলেছে তৃণমূল নেতৃত্বকে। কুড়মি-ক্ষোভের অভিমুখ বদলে তা বিজেপির দিয়ে চালিত করার নির্দেশ দিয়ে গেলেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার জেলা ছাড়ার আগে বান্দোয়ানে জেলা শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে দিলীপ-ক্ষোভকে উসকে কুড়মিদের আবেগকে বিজেপির বিরুদ্ধে নিয়ে গিয়ে জনমত গড়ার সুর বেঁধে দেন তিনি। দল সূত্রের খবর, সে জন্য দলের পুরুলিয়া জেলার কুড়মি সম্প্রদায়ের নেতাদের তৎপর হতে নির্দেশ দেওয়া হয়। জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, ‘‘উনি কিছু নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন। সে মতো আমরা চলব।’’

দলের একটি সূত্রের খবর, এ দিন অভিষেক জেলা নেতৃত্বকে জানান, দলের মেদিনীপুরের এক নেতার কুড়মিদের সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্যের জন্য স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী ক্ষমা চেয়েছেন। অথচ বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ তাঁর মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাননি। সে নিয়ে কুড়মিরা প্রচণ্ড চটে থাকলেও সেই বিষয়টিকে নিয়ে কুড়মিদের ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে পথে নামতে পারেননি জেলা নেতৃত্ব। দলের দুই জেলা শীর্ষ নেতাকে বিষয়টি নিয়ে দ্রুত আলোচনা করে পথে নামতে নির্দেশ দেন অভিষেক। সূত্রের খবর, কুড়মিরা যখন পুরুলিয়ায় টানা অবরোধ করছিলেন, সে সময়ে তা মোকাবিলায় দলের কুড়মি নেতাদের সক্রিয়তা দেখা যায়নি বলেও অভিষেক বৈঠকে দাবি করেন।

কাশীপুর থেকে অভিষেকের পুরুলিয়ায় আসার পথে পুরুলিয়া ২ ব্লকের ডুমুরডি মোড়ের অদূরে আদিবাসী কুড়মি সমাজ রাজ্য সরকার ও অভিষেকের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়। সূত্রের দাবি, ওই এলাকায় কুড়মিদের প্রভাবের জেরে তৃণমূল সেখানে তোরণও বাঁধতে পারেনি। বৈঠকে পুরুলিয়া ২ ব্লকের সভাপতি কাঞ্চন দিগরের কাছে অভিষেকের প্রশ্ন ছিল, ‘রাজ্যে কি এমন ব্লক আছে, যেখানে তৃণমূল ঝান্ডা বাঁধতে পারে না?’

বিজেপির জেলা সভাপতি বিবেক রঙ্গার পাল্টা দাবি, ‘‘কে কী বলেছেন, জানি না। কুড়মি ভাইয়েরা নিজেদের ভাল-মন্দ বোঝেন। কেউ যা খুশি বলে তাঁদের আন্দোলনে নামিয়ে দেবেন, এমনটা ভাবা ভুল।’’

আদিবাসী সমাজের মূল মানতা অজিত মাহাতো বলেন, ‘‘দিলীপ ঘোষের মন্তব্যের প্রতিবাদ আমাদের সংগঠনের নিজস্ব সিদ্ধান্ত। কারও কথায় আমরা করিনি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের সংগঠনের অভিভাবক নন। আমাদের আন্দোলনের রূপরেখা আমরাই ঠিক করব।’’

জেলার ২০টির মধ্যে ১৯টি ব্লকে সভাপতি থাকলেও হুড়া ব্লকে তা নেই। কয়েক মাস আগে ব্লক সভাপতি শ্যামনারায়ণ মাহাতোর মৃত্যুর পরে ওই পদ ফাঁকা রয়েছে। সূত্রের খবর, বৈঠকে জেলার এক শীর্ষ মহিলা নেত্রী বিষয়টি অভিষেকের নজরে আনেন। সমস্যা হচ্ছে বলে জানান। সূত্রের দাবি, জেলার এর প্রাক্তন বিধায়কের সঙ্গে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণেই ওই পদে কারও নাম ঘোষণা করা যাচ্ছে না। বিষয়টি অভিষেক জেলা সভাপতিকে দেখার নির্দেশ দেন।

সূত্রের দাবি, জেলার এক বষীয়ান নেতা ও প্রাক্তন বিধায়ককেও নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক ভাল করতে বলেন অভিষেক। ঝালদা ১ ব্লকের দুই প্রথম সারির নেতার বিরোধের বিষয়টিও তাঁর কানে গিয়েছে। রঘুনাথপুর মহকুমার একটি বিধানসভার তিন প্রথম সারির নেতার মধ্যেও বনিবনা নেই বলে অভিযোগ। জঙ্গলমহলের এক ব্লকের দুই নেতার অহি-নকুল সম্পর্কের কথা বলে তিনি সাত দিনের সব মেটাতে জেলা সভাপতি সৌমনে বেলথরিয়াকে নির্দেশ দেন। প্রাক্তন বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউরিকে দলের কাজে সক্রিয় ভাবে ব্যবহারের নির্দেশও দেন তিনি।

ব্লকে ব্লকে সংগঠনের রাশ যে ব্লক সভাপতিদের হাতেই থাকা উচিত, এ দিনের বৈঠকে তা-ও স্পষ্ট করে দেন অভিষেক। একই সঙ্গে ব্লক সভাপতিদেরও বার্তা দিয়েছেন শুধু পছন্দের লোকজনকে নিয়ে চলব, ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখব তা হবে না। সবাইকে নিয়ে চলতে হবে। না পারলে প্রয়োজনে সভাপতি বদলও করা হতে পারে বলে স্পষ্ট করেছেন তিনি। জেলা সভাপতি সৌমেন বলেন, ‘‘দলের অভ্যন্তরীণ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। কোনও মন্তব্য করব না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

purulia Kurmi Community
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy