Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪
TMC

কোর কমিটি নামেই, রিপোর্ট তৃণমূল ভবনে

ফল প্রকাশের পরে পরেই দলের জেলা নেতৃত্বের তরফে লোকসভার আওতায় থাকা সমস্ত ব্লক ও শহর সভাপতিদের ফল সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়।

—প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২৪ ০৭:৩১
Share: Save:

রাজ্য সরকারের উন্নয়নের কথা ভোটারদের সর্বাংশে ঠিকমতো পৌঁছে দেওয়া যায়নি। ভোট বৈতরণী পেরোতে কোর কমিটি থাকলেও তার কার্যকারিতা রয়ে গিয়েছে খাতায়-কলমে। ভুগিয়েছে জেলার শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশে সমন্বয়ের অভাবও। ভোটের ফল পর্যালোচনায় তৃণমূলের হারের পিছনে একাধিক এমন কারণ উঠে আসছে। সেই রিপোর্ট সম্প্রতি জমা পড়েছে দলের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে।

ফল প্রকাশের পরে পরেই দলের জেলা নেতৃত্বের তরফে লোকসভার আওতায় থাকা সমস্ত ব্লক ও শহর সভাপতিদের ফল সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়।

জেলা নেতৃত্বের কাছে ব্লক বা শহর সভাপতিদের জমা দেওয়া রিপোর্ট ও প্রার্থীর ফলাফল পর্যালোচনার অন্তর্তদন্তে এমনই কিছু বিষয় উঠে এসেছে। দু’ক্ষেত্রে রয়েছে একাধিক সাদৃশ্যও।

সূত্রের খবর, দলীয় প্রার্থী শান্তিরাম মাহাতোকেও আলাদা রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। যদিও সেই রিপোর্ট এখনও জমা পড়েনি।

জঙ্গলমহলের একাধিক আসন পুনরুদ্ধার হলেও পুরুলিয়া আসনে এ বারও গেরুয়া শিবিরের কাছে হার মানতে হয়েছে ঘাসফুল শিবিরকে। দু’লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধান ১৭ হাজারে নেমে এলেও, লোকসভার সাতটি আসনের মধ্যে চারটিতে বিজেপির চেয়ে এগিয়ে থাকলেও শেষরক্ষা হয়নি।

গত লোকসভা বা বিধানসভার নিরিখে ভোট বাড়লেও কেন দলকে ফের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হল, সেই রিপোর্ট সম্প্রতি জমা পড়েছে দলের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে।

সূত্রের খবর, সেখানে হারের পিছনে একাধিক কারণ উঠে এসেছে।

প্রথমত, দলের একাধিক শাখা সংগঠনের ভূমিকা সদর্থক ছিল না। রাজ্য সরকারের উন্নয়নের সুফলের কথা সাধারণ ভোটারদের কাছে পৌঁছে দিতে শাখা সংগঠনগুলির যেমন ভূমিকা থাকা দরকার ছিল, তা নজরে পড়েনি।

দ্বিতীয়ত, বেশির ভাগ পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদের আসন ও পুরসভা তৃণমূলের হাতে থাকা সত্ত্বেও দলের বিশাল সংখ্যক নির্বাচিত প্রতিনিধিদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

অভিযোগ, নিচুতলায় জনপ্রতিনিধিরা প্রচারে ভিড় টানলেও তাঁদের একাংশের বিরুদ্ধে এলাকায় দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় তাঁরা দলীয় প্রার্থীর হয়ে ভোট টানতে ব্যর্থ হয়েছেন। ত্রিস্তর পঞ্চায়েত বা পুরসভার অলিন্দে ক্ষমতাশালী হলেও এলাকার মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা হারানোয় প্রভাব পড়েছে দলের ভোটবাক্সে।

তৃতীয়ত, ভোটের আগে লড়াইয়ের কৌশল তৈরিতে কোর কমিটি গড়া হলেও তা
রয়ে গিয়েছে খাতায়-কলমে। কমিটির একাধিক সদস্য কার্যত নিষ্ক্রিয় থেকেছেন। চতুর্থত, জেলার শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশে সমন্বয় না থাকা বা কিছু এলাকায় নেতৃত্বের একাংশের সঙ্গে অন্য অংশের ‘দ্বন্দ্ব’ও দলকে ডুবিয়েছে বলে কিছু ব্লক নেতৃত্বের রিপোর্টে উঠে এসেছে। পঞ্চায়েত ভোটের সময়ে টিকিট পাওয়া বা না পাওয়া সংক্রান্ত কাজিয়াও প্রভাব ফেলেছে।

এ ছাড়া, একাধিক ব্লক সভাপতির রিপোর্টে উঠে এসেছে বালি মাফিয়াদের প্রসঙ্গ। বালি মাফিয়াদের দাপটে ও প্রশাসনের একাংশের ‘যোগসাজশে’ বাড়ি তৈরির জন্য চড়া দামে সাধারণ মানুষকে বালি কিনতে হচ্ছে বলে এক যোগে সরব হয়েছিল আদিবাসী কুড়মি সমাজ, বাম-কংগ্রেস জোট ও বিজেপি। অনেকে সেই প্রচারে বিশ্বাস করেছেন। এর সঙ্গে কিছু এলাকায় ‘ধর্মীয় মেরুকরণ’ বা ‘এই ভোট দেশের ভোট’ বলে তকমা দেগে দেওয়ায় এলাকার উন্নয়নকে সামনে রেখে সেই প্রচারের মোকাবিলা করতে দল ব্যর্থ হয়েছে বলেও রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে।

যদিও রিপোর্ট নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া। তিনি বলেন, “আমাদের ফল পর্যালোচনার প্রক্রিয়া চলছে। বাকিটা দলের সাংগঠনিক বিষয়। এ নিয়ে কিছু বলব না।

একই সুরে শান্তিরামও বলেন, “ফল প্রকাশের পরে অন্তর্তদন্তের কাজ চলছে। দলের কাছে
রিপোর্ট জমা দেব।”

অন্য বিষয়গুলি:

TMC purulia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy