Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

ধৃত সামাদ, পথে প্রতিবাদ বিজেপির

পুলিশের দাবি, সামাদ দীর্ঘ দিন পলাতক ছিলেন। সামাদ অবশ্য আদালত চত্বরে দাবি করেছেন, ‘‘পুলিশ মিথ্যে বলছে। হাটইকড়ার বিভিন্ন কর্মসূচি-সহ এক মাস দলের সমস্ত কর্মসূচিতে পুলিশের সামনে ঘুরেছি।’’

গতিরোধ: রাস্তা অবরোধ বিজেপি কর্মীদের। সিউড়িতে। নিজস্ব চিত্র

গতিরোধ: রাস্তা অবরোধ বিজেপি কর্মীদের। সিউড়িতে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
বীরভূম শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৯ ০১:০৯
Share: Save:

হাটইকড়া-কাণ্ডে গভীর রাতে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হল বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার রাজ্য সম্পাদক শেখ সামাদকে। মঙ্গলবার সামাদকে সিউড়ি আদালতে হাজির করানো হলে চার দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ হয়। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শুধু হাটইকড়া নয়, মোট পাঁচটি মামলায় অভিযুক্ত হিসেবে এই গ্রেফতার।

পুলিশের দাবি, সামাদ দীর্ঘ দিন পলাতক ছিলেন। সামাদ অবশ্য আদালত চত্বরে দাবি করেছেন, ‘‘পুলিশ মিথ্যে বলছে। হাটইকড়ার বিভিন্ন কর্মসূচি-সহ এক মাস দলের সমস্ত কর্মসূচিতে পুলিশের সামনে ঘুরেছি।’’ জেলা বিজেপিরও দাবি, পাড়ুই এলাকায় দলকে আটকানোর জন্যই মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে।

জেলা রাজনীতির গতিপ্রকৃতির খোঁজ রাখেন এমন লোকজন জানাচ্ছেন, বছর চারেক আগে পাড়ুইয়ের কিছু বিক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতা যেমন, শেখ সামাদ, সদাই শেখ, নিমাই ঘোষেরা তৎকালীন বিজেপি সভাপতি দুধকুমার মণ্ডলের হাত ধরে বিজেপিতে যোগদান করেন। তাতে এলাকায় তৃণমূলের সঙ্গে সমানে-সমানে টক্করের আবহ তৈরি হয়। পাড়ুই, চৌমণ্ডলপুর, মাখড়া, সাত্তোরের মতো বহু গ্রাম তেতে ওঠে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সামাদ, সদাই শেখ, নিমাই ঘোষ-সহ কিছু বিজেপি নেতাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জেল থেকে বেরিয়ে সদাই শেখ, নিমাই ঘোষেরা তৃণমূলে ফিরে গেলেও সামাদ বিজেপিতে থেকে যান। ইতিমধ্যে সামাদ রাজ্য নেতৃত্বের ঘনিষ্ঠ হন বলেও মানছেন বিজেপির স্থানীয় নেতৃত্ব। ক্রমশ দু’বার জেলা সভাপতি পরিবর্তন হয় জেলায়। সম্প্রতি পাড়ুই থানার বিভিন্ন এলাকায় ফের বিজেপি সক্রিয় হলে তেতে উঠতে শুরু করে হাটইকড়ার মতো গ্রাম।

এই আবহে সোমবার গভীরে রাতে বাড়ি থেকে সামাদকে গ্রেফতার করে পাড়ুই পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্র আইন সহ একাধিক জামিন অযোগ্য মামলা রুজু হয়। সরকারি আইনজীবী কেশব দেওয়াসী বলেন, ‘‘সামাদের বিরুদ্ধে কিছু পুরোনো মামলাও রয়েছে। সেই সব মামলায় পলাতক ছিলেন।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডলের প্রতিক্রিয়া, ‘‘বিজেপির কার্যকর্তাদের তৃণমূল এবং পুলিশ মিলে হেনস্থা করছে। সংখ্যালঘু মানুষ, যাঁরা বিজেপিতে আসছেন তাঁদেরও হেনস্থা করা হচ্ছে।’’ পুলিশের একটি মহলের দাবি, পুলিশকে বোমা মারা থেকে শুরু করে বোমা, গুলি নিয়ে এলাকা দাপানো, অশান্তি সৃষ্টি করা সহ একাধিক অপরাধে সামাদের হাত আছে। তা ছাড়া হাটইকড়ার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সামাদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কোনও পক্ষপাতের অভিযোগ মানেনি পুলিশ।

সামাদকে কেন গ্রেফতার করা হল এই অভিযোগে জেলার নানা প্রান্তে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। সিউড়ি ২ ব্লক নেতা পবন বাগদির নেতৃত্বে বোলপুর-পুরন্দরপুর রাস্তায়, ইলামবাজারের নেতা শিবদাস ঘোড়ুইয়ের নেতৃত্বে বোলপুর-ইলামবাজার রাস্তা অবরোধ করা হয়। সিউড়ি চৈতালি মোড়ের কাছে সিউড়ি-রামপুরহাট রাস্তা অবরোধ করেন বিজেপি কর্মীরা। বোলপুরে জেলা যুব মোর্চা সহ-সভাপতি লক্ষণলাল তেওয়ারির বোলপুর চৌরাস্তা মোড়ে অবরোধ হয়। একই ভাবে কীর্ণাহার-সিউড়ি রাস্তা ও রামপুরহাট শহরের ভিতরে মহাজনপট্টির রাস্তা অবরোধ করা হয়। ময়ূরেশ্বরের কোটাসুর মোড়েও একই দাবিতে সিউড়ি-বহরমপুর সড়ক অবরোধ করে বিজেপি। উপস্থিত ছিলেন জেলা মহিলা মোর্চা সভানেত্রী অনুরাধা ঘোষ, দুই ব্লক সভাপতি সন্দীপ ঘোষ ও নিখিল দে, জেলা কমিটির সদস্য অভিজিৎ ঘোষ। বিজেপির জেলা সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত না করলে বৃহত্তর আন্দোলন করা হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Parui BJP TMC Arrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE