ফাইল চিত্র।
আন্দোলনের মাঝেও ডেউচা-পাঁচামি কয়লা খনির পক্ষে মত দিচ্ছেন এলাকারই অনেক মানুষ। মঙ্গলবার ফের এক লপ্তে প্রায় ৩০টি পরিবার (মূলত দেওয়ানগঞ্জ ও নিশ্চিন্তপুর মৌজার) তাঁদের জমি রেজিষ্ট্রি করে দিলেন। এ দিন মহম্মদবাজার ব্লক অফিসের চত্বরেই শিবির করে তাঁদের থেকে জমি কিনে জমির মূল্য চেকের মাধ্যমে মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, খনি গড়ার নোডাল এজেন্সি কাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম বা পিডিসিএল নয়, জমি কিনছে জেলা পরিষদ। তবে, জেলা পরিষদ সেই জমি পিডিসিএলকে হস্তান্তর করবে। এর আগেও জমি কেনার প্রক্রিয়া চলেছে। মঙ্গলবারের পর মোট ১২০ জন তাঁদের জমি কয়লা খনি গড়ার জন্য সরকারকে বিক্রি করেছেন বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।
বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, ‘‘ইতিবাচক দিক সন্দেহ নেই। সংখ্যাটা (জমিদাতার) দিন দিন আরও বাড়বে। ইতিবাচক সাড়া মিলতে শুরু করেছে বলে মনে করছেন জেলা পরিষদের পক্ষে থাকা আইনজীবী মহম্মদ আজিজুল রহমান। তিনি বলেন, ‘‘ যাঁরা জমি রেজিস্ট্রি করেছেন, এ দিন ব্লক অফিসে তাঁরা তো ছিলেনই। আরও ৪০ জন এসেছিলেন এটা জানতে যে, তাঁদের জমি কবে নেওয়া হবে।’’
প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রথম পর্যায়ে যে অংশ থেকে খনি হওয়ার কথা, সেই হিংলো পঞ্চায়েতের দেওয়ানগঞ্জ, হরিনশিঙা এবং নিশ্চিন্তপুর মৌজার গ্রামগুলির বাসিন্দা একটা বড় অংশের মানুষ জমিদানে সম্মত হয়েছেন। সরকারি নথি অনুযায়ী, ৩৯৯টি পরিবার কয়লা খনির জন্য জমি দেবেন বলেছেন। এ ছাড়াও সরকারি জমিতে বসবাস করত, এমন ২২৬টি পরিবারকে পাট্টা দেওয়া হয়েছে।
প্রশাসনের দাবি মানলে, ছশোরও বেশি পরিবার যখন জমি দিতে রাজি, তখন সমস্যা কেন হচ্ছে এলাকায়? কেন আন্দোলন জিইয়ে থাকছে?
কিছু জায়গায় সমস্যা থেকে যাচ্ছিল বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। যেমন যে ৩৯৯টি পরিবার জমি দিতে রাজি, তাদের মধ্যে ক্ষতিপূরণের চেক পেয়েছেন খুব কম সংখ্যক মানুষ। চাকরির ‘নিয়োগপত্র’ (সেই নিয়োগপত্র মেনে এখনও কেউ চাকরিতে যোগ দেননি বলে খবর) যাঁদের দেওয়া হয়েছে, সেখানে চিহ্নিত পরিবারগুলের মধ্যে হাতে গোনা দু-চার জনই রয়েছেন। সেই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বার অল্প অল্প করে জমিদাতাদের কাছ থেকে জমি কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। মঙ্গলবার সেই কারণেই ৩৫ জনকে ডাকা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে ৩০ জন এসেছিলেন ব্লক অফিসে।
যাঁরা এ দিন জমি দিলেন, তাঁদের একজন তাপস সাহা। দেওয়ানগঞ্জেই তাঁর জমি রয়েছে। তাপস বলেন, ‘‘প্রথম থেকেই চাইছি কয়লা খনি হোক। গত বছর ২৩ ডিসেম্বর প্রশাসনের কাছে কাগজপত্র জমা দিয়েছি। আজ জমি সরকারকে বিক্রি করলাম। আশা করি খনি হবে।’’ মেয়ে কনকলতাকে সঙ্গে নিয়ে এ দিন জমি দিতে এসেছিলেন দেওয়ানগঞ্জের রাজারাম টুডু। কনকলতার কথায়, ‘‘জমি দিলাম। খনি কবে হবে জানি না। তবে সরকার যখন নিচ্ছে, নিশ্চই খনি হবে।’’
প্রশাসনের আধিকারিকদের একাংশ মনে করছেন শুধু জমি কেনাই নয়, চাকরি প্রাপকদের তালিকা তৈরিতেও স্থানীয় আদিবাসীদের নাম যথাসম্ভব বেশি করে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। যাতে চাকরি পাওয়া শুরু হলেই জমি দেওয়ার ক্ষেত্রে আরও ইতিবাচক সাড়া মেলে। জেলাশাসক জানান, এমন ২০০ জনের তালিকা অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে। দিন কয়েক আগেই একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। সেখানেও এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy