নলহাটি ২ ব্লক অফিসের সামনে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র
প্রশাসনিক আধিকারিক হয়ে সংশ্লিষ্ট বিডিও তাঁর চেয়ারে বসে ‘দলতন্ত্র’ কায়েম করার চেষ্টা করছেন। এমনই অভিযোগে নলহাটি ২ ব্লকে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত সমিতির সমস্ত বামফ্রণ্ট সদস্য এবং ওই পঞ্চায়েত সমিতির অধীনে থাকা ছটি গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্বাচিত বামফ্রণ্ট সদস্যরা ব্লক অফিস চত্বরে মঙ্গলবার সকালে অবস্থান-বিক্ষোভ করেন।
এ দিন নলহাটি থানার লোহাপুরে নলহাটি ২ ব্লকের প্রশাসনিক ভবন চত্বরে বামফ্রণ্টের পঞ্চায়েত সমিতি এবং পঞ্চায়েত সদস্যদের নেতৃত্ব দেন এলাকা থেকে বামফ্রণ্টের হয়ে নির্বাচিত দু’জন জেলাপরিষদ সদস্য কৃপাসিন্ধু ভুঁইমালি ও খাইরুল হাসান। এ দিন বেলা ১১টা থেকে বিডিও-র প্রশাসনিক কার্যালয় থেকে পঞ্চাশ মিটারের মধ্যে অফিসের গাড়ি রাখার জায়গায় টিনের ছাউনির নীচে মাইক লাগিয়ে অবস্থান-বিক্ষোভে বসেন তাঁরা। এই কর্মসূচিকে ঘিরে অশান্তি এড়াতে নলহাটি থানার পুলিশ এলাকায় হাজির ছিল। অবস্থান মঞ্চে সিপিএমের নলহাটি ২ জোনাল সম্পাদক আব্দুস সালাম উপস্থিত ছিলেন। দুপুর ১টা পর্যন্ত বিডিও-র বিরুদ্ধে বামফ্রণ্ট পরিচালিত নলহাটি ২ পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাচিত সদস্যদের নানান অসহযোগিতার অভিযোগ নিয়ে বিভিন্ন বক্তা বক্তব্য রাখেন। পরে বিডিও তাঁদের মধ্যে কয়েকজনকে ডেকে নিয়ে আলোচনায় বসেন। আলোচনায় যোগ দেওয়া নলহাটি ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সিপিএমের রেজাউল হক-সহ পঞ্চায়েত সমিতির ১৬ জন সদস্য এবং ছটি গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্বাচিত বামফ্রণ্ট সদস্যদের মধ্যে ২ জন করে প্রতিনিধি যোগ দিয়েছিলেন। দুপুর আড়াইটে পর্যন্ত আলোচনার পর নলহাটি ২ ব্লকের বিডিও গোবিন্দ নন্দী বলেন, “অভিযোগ ঠিক নয়। সরকারি নির্দেশ মেনে আমি কাজ করেছি।”
প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় ১৭ সদস্যের নলহাটি ২ পঞ্চায়েত সমিতিতে বামফ্রন্ট ১৬টি আসন (সিপিএম ১৪, ফব ২ ) পেয়েছিল, কংগ্রেস ১টি আসন। রাজ্যে শাসকদল তৃণমূল ও বিজেপি একটিও আসন পায়নি। পঞ্চায়েত সমিতির অধীন বারা ১, বারা ২, ভদ্রপুর ১, ভদ্রপুর ২, শীতলগ্রাম, নওয়াপাড়া ৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে কংগ্রেস ও তৃণমূল জোট শুধুমাত্র ভদ্রপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করে। বাকি পাঁচটি পঞ্চায়েত লোকসভা নির্বাচনের আগে এবং পরে এখনও পর্যন্ত বামফ্রন্টের দখলে। নলহাটি ২ পঞ্চায়েত সমিতি এলাকা থেকে লোকসভা নির্বাচনে সিপিএম প্রার্থী কামরে ইলাহি ৪ হাজার ৩০০-র বেশি ভোট তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায়ের থেকে পেয়েছেন।
এলাকার জেলাপরিষদের নির্বাচিত বাম সদস্য খাইরুল হাসান অভিযোগ করেন, “সম্প্রতি গৃহহীনদের বাড়ি নির্মাণের জন্য নিজভূমি নিজগৃহ, গীতাঞ্জলি, সংখ্যালঘু উন্নয়ন প্রকল্পের মতো বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে উপভোক্তাদের তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে বিডিও নিজে শাসকদলের লোকেদের বেশি বেশি করে তালিকার মধ্যে এনে দলতন্ত্র কায়েম করছেন। শুধু তাই নয়, উপভোক্তাদের তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে কোনও আলোচনা বা পঞ্চায়েত আইন মোতাবেক জনপ্রতিনিধিদের ক্ষমতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। একই ভাবে এলাকায় সরকারি নলকূপ বসানোর ক্ষেত্রেও জায়গা নির্বাচনে জন প্রতিনিধিদের চাহিদা বা তালিকাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।” তাঁর দাবি, “বিডিও সরকারি আইন দেখাতে গিয়ে সরকারি আইনের মধ্যে আর একটি দিককে ভুলে গিয়ে কাজ করতে চাইছেন। যা সম্পূর্ণ পঞ্চায়েত আইন বিরোধী বলে আমাদের মনে হয়েছে। সে জন্য আমরা অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হয়েছি।”
সিপিএমের নলহাটি ২ জোনাল সম্পাদক আব্দুস সালাম বলেন, “সবে মাত্র পঞ্চায়েত সমিতিতে উন্নয়নমূলক কাজ শুরু হয়েছে। এখন যদি এই অবস্থা হয় তা হলে ভবিষ্যতে কী হবে?” অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলাপরিষদ) বিধান রায় বলেন, “লিখিত আকারে অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy