Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

ট্রেনে যাচ্ছে মাদক, ধরিয়ে দিলেন যাত্রী

দূরপাল্লার ট্রেনের সাধারণ কামরায় কয়েকটা বস্তা নিয়ে যাচ্ছিলেন এক মাঝবয়সি মহিলা। সহযাত্রীর কাছ থেকে খবর পেয়ে তল্লাশি চালাতে গিয়ে চোখ কপালে ওঠে আরপিএফের। বস্তাগুলিতে ঠাসা ছিল গাঁজা ও ভাঙ। রেল পুলিশের দাবি, বেশির ভাগই ভাঙ.আর এক বস্তা গাঁজা। মাদকের পরিমাণ প্রায় ৪৭১ কেজি। মাদক পাচারের অভিযোগে ট্রেন থেকেই ওই মহিলাকে গ্রেফতার করেছে রেলপুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আদ্রা শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:৩০
Share: Save:

দূরপাল্লার ট্রেনের সাধারণ কামরায় কয়েকটা বস্তা নিয়ে যাচ্ছিলেন এক মাঝবয়সি মহিলা। সহযাত্রীর কাছ থেকে খবর পেয়ে তল্লাশি চালাতে গিয়ে চোখ কপালে ওঠে আরপিএফের। বস্তাগুলিতে ঠাসা ছিল গাঁজা ও ভাঙ। রেল পুলিশের দাবি, বেশির ভাগই ভাঙ.আর এক বস্তা গাঁজা। মাদকের পরিমাণ প্রায় ৪৭১ কেজি। মাদক পাচারের অভিযোগে ট্রেন থেকেই ওই মহিলাকে গ্রেফতার করেছে রেলপুলিশ। বছর বাহান্নের ওই মহিলার নাম শীলা সাউ। তাঁর বাড়ি বিহারের মজফরপুর জেলার আয়াপুর থানার মুরাদপুর গ্রামে। বুধবার বিকালে আদ্রা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বৃহস্পতিবার তাকে রঘুনাথপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক জেল হাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।

আরপিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, পটনা থেকে পুরীগামী পটনা-পুরী এক্সপ্রেস ট্রেনে বস্তা ভর্তি মাদক পাচার হচ্ছে বলে সন্দেহ হওয়ায় আরপিএফের হেল্পলাইন কন্ট্রোল রুমে ফোন করে খবর দিয়েছিলেন পেশায় চিকিৎসক মাজির হুসেন নামে ওই ট্রেনেরই এক যাত্রী। সেই মতো ট্রেনটি বুধবার বিকাল ৫টা নাগাদ আদ্রায় ঢুকতেই রেলপুলিশকে সাথে নিয়ে ট্রেনে তল্লাশি শুরু করে আদ্রার আরপিএফ। ট্রেনের একটি সাধারণ কামরায় শৌচালয়ের পাশে ডাঁই করে রাখা ছিল আটটি বস্তা। আরপিএফ জানিয়েছে, তার মধ্যে সাতটি চটের বস্তায় মিলেছে ৪৩৩ কেজি ভাঙ ও একটি প্লাস্টিকের বস্তা থেকে উদ্ধার হয়েছে ৩৮ কেজি গাঁজা। আরপিএফের দাবি, উদ্ধার হওয়া মাদকের বাজার মূল্য লক্ষাধিক টাকা।

বস্তুত দূরপাল্লার ট্রেনে মাদক পাচার হওয়ার অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছে। সম্প্রতি পুরুলিয়া স্টেশনে রেলপুলিশ ৪১ কেজি মরফিন সমেত পটনার বক্তিয়ারপুরের বাসিন্দা জয়রাম সাউ নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছিল। আদ্রার আরপিএফের ওসি সঞ্জয় হাজরা বলেন, “এক যাত্রীর মাধ্যমে খবরটা পেয়েই ট্রেন আদ্রা স্টেশনের তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মে ঢুকতেই ট্রেনে তল্লাশি শুরু করা হয়। ওই বস্তাগুলি দেখার পরেই সন্দেহ হয়। বস্তা খুলে পরীক্ষা করতে বোঝা যায় বস্তায় মাদক রয়েছে। অন্য যাত্রীদের জেরা করেই কামরার মধ্যেই হদিস মেলে শীলা সাউ নামের ওই মহিলার। তিনি মাদক পাচার করছিলেন।”

বিকেলে মাদক উদ্ধার হওয়ার পরে রাতের দিকে সঞ্জয়বাবুই আদ্রার রেলপুলিশের কাছে এফআইআর দায়ের করেন। তার আগে খবর দেওয়া হয়েছিল রঘুনাথপুর মহকুমা প্রশাসনের কাছেও। খবর পেয়ে আদ্রায় আসেন মহকুমা প্রশাসনের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট অজয় সেনগুপ্ত। প্রশাসন সূত্রের খবর, মাদক-সহ কেউ ধরা পড়লে এগ্জিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের আধিকারিকের উপস্থিতিতে গ্রেফতার-সহ অন্যান্য প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয় পুলিশকে। অজয়বাবু জানান, মাদক আইনের ২০, ২১ ও ২৯ নম্বর ধারা অনুযায়ী ওই মহিলার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে।.

এ দিকে বিশাল পরিমাণ মাদক উদ্ধার হওয়ার ঘটনায় স্বভাবতই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। পাশাপাশি প্রশ্নও উঠেছে ট্রেনেরই ওই যাত্রীর সন্দেহ হওয়ায় এ ক্ষেত্রে মাদক উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু যাত্রীদের মারফত খবর না পেলে মাদক পাচার কী ভাবে আটকাত রেলপুলিশ? প্রাথমিক তদন্তে আরপিএফের সন্দেহ, ধৃত মহিলা মাদক পাচারের ক্যারিয়ার। তার পিছনে বড় চক্র রয়েছে। তবে জিজ্ঞাসাবাদ করেও শীলা সাউয়ের কাছ থেকে বিশেষ তথ্য পায়নি আরপিএফ। শুধু জানা গিয়েছে, বিহারের কিউল থেকে মাদক নিয়ে ট্রেনে উঠেছিলেন ওই মহিলা। গন্তব্য ছিল খড়গপুর। আরপিএফের এক আধিকারিক জানান, দূরপাল্লা-সহ যে কোনও ট্রেনেই শৌচালয়ের সামনে শাক, সব্জির বস্তা নিয়ে যাওয়ার প্রচলন রয়েছে। আর এরই সুযোগ নিয়ে মাদক পাচার করতে চেয়েছিলেন ওই মহিলা। তবে আরপিএফ-র দাবি, দূরপাল্লার ট্রেন মাদক পাচার রুখতে নির্দিষ্ট খবর ছাড়াও সব সময়েই ওই ধরনের ট্রেনগুলিতে নজরদারি চালানো হয়।

অন্য বিষয়গুলি:

adra
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy