নজরদারি কামরায় টিভিতে চোখ।—নিজস্ব চিত্র।
কর্মীদের একাংশ কাজে ফাঁকি দেন, এর ফলে পুরবাসী ঠিক মতো পরিষেবা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগের বহর জমছে। ‘ফাঁকি’ আটকাতে উদ্যোগী হয়েছেন বোলপুরের পুরপ্রধান সুশান্ত ভকত। ইতিমধ্যেই এক লক্ষ টাকার কিছু বেশি ব্যায়ে ১৬টি সিসিটিভি বসানো হয়েছে পুরসভায়। কেন্দ্রীয় ভাবে ওই সিসিটিভি পুরপ্রধানের দফতর থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। ওয়াকিবহল মহলের ধারণা, এতে যেমন অভিযোগের তালিকা এবং চিঠিতে বহর কমবে, তেমনই পুরসভার কাজেও গতি আসবে। সুশান্তবাবু বলেন, “সমস্ত কর্মীদের কাজের ওপর যেমন নজর রাখা সম্ভব হবে তেমনই কোনও রকমের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হলে তারও রেকর্ড থাকবে কর্তৃপক্ষের কাছে।”
প্রসঙ্গত, নিয়ম মতো বোলপুর পুরসভা এলাকার বাসিন্দারা তাঁদের প্রদত্ত নানা পুর-পরিষেবা পেতে অসুবিধে থাকলে নির্দিষ্ট জায়গায় অভিযোগ জানানোর বিধি আছে। তাতে পুরকর্তৃপক্ষ ওই অভিযোগ পেয়ে অবিলম্বে সুষ্ঠু ভাবে পুর-পরিষেবা দেওয়ার পরিকল্পনা নেয়। পানীয় জল, বিদ্যুত্, নিকাশি নালা, দৈনিক আবর্জনা পরিষ্কারের মতো জরুরি পরিষেবা পেতে অসুবিধে হলে ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে দ্রুত ব্যবস্থাগ্রহণ করেন সংশ্লিষ্ট পুরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী। পুরবাসিন্দাদের একাংশের দাবি, গত তিন বছরের কিছু বেশি দিন ধরে অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। বারে বারে পুরকর্তৃপক্ষের দরজায় গিয়ে শূন্য হাতে ফিরে আসতে হচ্ছে ওই সব বাসিন্দাদের। অথচ তাঁদের অভিযোগ কিন্তু সুনির্দিষ্ট জায়গায় জমা পড়ছে। এর ফলে অভিযোগের বহর যেমন বাড়ছে, ঠিক তেমনই পুর পরিষেবা না পেয়ে এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। অন্য দিকে, পুরকর্মীদের একাংশের কাজে অনিহাকে দায়ী করছেন এলাকার ওই সব বসিন্দারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বোলপুর ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বলেন, “সড়ক দুর্ঘটনার কারণে একটি রাস্তার কুকুর মারা গেল। ওই মৃত দেহ সরাতে বারে বারে পুরসভার সংশ্লিষ্ট দফতরে ফোন এবং ব্যক্তিগত ভাবে দু’দিন ধরে জানানো পরেও ওই সমস্যার সমাধান হয়নি। তখন নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে পচাগলা ওই দেহ বাড়ির উঠোনে থেকে পরিষ্কার করতে হয়।”
নিয়মিত নিকাশি নালা পরিষ্কার করার কথা থাকলেও, পুরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ডে আকছার পরিষ্কার হয় না বলে স্থানীয়দের দাবি। ওই অভিযোগ লিখিত এবং মৌখিক ভাবে জানানোর পরেও কোনও ব্যবস্থা নেননি পুরসভার সংশ্লিষ্ট দফতর। এমনই একে একে অভিযোগ পাচ্ছিলেন বোলপুরের তৃণমূল পুরপ্রধান সুশান্ত ভকত। তার ওপর ছিল পুরকর্মীদের একাংশের ‘কাজ না করার’ প্রবৃত্তি। দিনের পর দিন ফাইল পড়েই আছে। অথচ এক টেবিল থেকে অন্য টেবিলের দূরত্ব মাত্র ৩০ ইঞ্চি। কিন্তু ফাইল আর নড়ে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বোলপুরের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এক মহিলা বলেন, “স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর থেকে থেকে শুরু করে পুরসভার সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকের কাছে গিয়ে গিয়ে পায়ের চটি জোড়া বদল করার জোগাড়। কিন্তু আমার বাড়ির উঠোনের পাশে পুরএলাকার নিকাশি নালা পরিষ্কারের কাজ তথৈবচ।” তাঁর অভিযোগ, আজ হবে, কাল হবে বলে কাটিয়ে দিয়েছেন কর্মীরা। কখনও শোনা যায় বাবু নেই, আজ কাজ হবে না। এই ভাবে দিনের পর দিন শুনে আসছি। আর কবে হবে?” এমনই সব অভিযোগের কাঁটাছেঁড়া করতে গিয়ে পুরকর্তৃপক্ষের কপালে ভাঁজ। তৃণমূল পরিচালিত বোলপুর পুরসভার পুরপ্রধান সুশান্ত ভকত বলেন, “পুরসভার কর্মীদের একাংশের কাজে অনীহা, কাজ না করার প্রবনতা বরদাস্ত করা হবে না। বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের কাছ থেকে ক্রমাগত অভিযোগ পাচ্ছিলাম। পুর অফিসের সময়টা নজরদারি করার জন্য গোটা পুরসভা চত্বরে ১৬টি সিসিটিভি বসানো হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy