বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের অধিকাংশ বুথেই ‘ভোট লুঠ’ হয়েছে। ওই সব বুথে পুনর্নির্বাচন চেয়েছিলেন তাঁরা। আজ, মঙ্গলবার এই কেন্দ্রের চারটি বুথে বুথে পুনরায় ভোট গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
এই চারটি বুথে ফের ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত কি বিরোধীদের তোলা অভিযোগ প্রমাণ করে? এই প্রশ্নের অবশ্য উত্তর দেননি এই কেন্দ্রের রিটার্নিং অফিসার তথা বীরভূমের অতিরিক্ত জেলাশাসক দেবীপ্রসাদ কর্ণম। তিনি শুধু বলেন, “এটা সম্পূর্ণ নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত। তবে এটুকু বলতে পারি, যে কেন্দ্রগুলিতে ফের ভোটগ্রহণ হওয়ার কথা সেগুলির সব কটিতেই ৯৫ শাতাংশের বেশি ভোট পড়েছিল।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বোলপুর লোকসভার যে চারটি বুথে আজ ভোট হবে সেগুলি হল বোলপুর বিধানসভার ইলামবাজার ব্লকের তারাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় (৪০ নম্বর বুথ, ভোটার ৩৩৭), বর্ধমানের মঙ্গলকোটের পালিগ্রাম পঞ্চায়েতের দেবগ্রাম (১৪ নম্বর বুথ), লাখুরিয়া পঞ্চায়েতের চাকদহ (৫৩ নম্বর বুথ), আউশগ্রামের পাণ্ডুক গ্রামের ২৮ নম্বর বুথ। এই সব বুথে গত ৩০ এপ্রিল, তৃতীয় দফায় নির্বাচন হয়। সেই সময় সিপিএম-সহ সমস্ত বিরোধী রাজনৈতিক দল অভিযোগ করেছিল, নির্বাচনের নামে ‘প্রহসন’ হচ্ছে। ভোটাররা স্বেচ্ছায় তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি। শাসকদল ‘সন্ত্রাস’ চালিয়ে অনেক বুথে বিরোধী দলের নির্বাচনী এজেন্টদের ঢুকতে দেয়নি। তাঁদেরকে মারধর করে বের করে দিয়ে রিগিং বা ছাপ্পা ভোট হয়েছে। এমনকী নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন বিরোধীরা।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বোলপুর লোকসভার এই চারটি বুথেই ৯৪ শতাংশের উপর ভোট পড়েছে। এমনকী ওই দিন দুপুর ১২টার মধ্যেই ৯০ শতাংশের কাছাকাছি ভোট পড়ে গিয়েছিল। নতুন করে চারটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ প্রসঙ্গে কী বলছেন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি? সিপিএমের বীরভূম জেলা সম্পাদক দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের অভিযোগ যে মিথ্যা ছিল না নির্বাচন কমিশন চারটি বুথে পুনরায় ভোটগ্রহণের নির্দেশে সেটাই প্রমাণ করে। অন্য দিকে যেখানে দলের তরফে মোট ৩৩৩টি বুথে পুনরায় ভোটগ্রহণের আর্জি জানানো হয়েছিল, সেখানে মাত্র চারটি বুথের ক্ষেত্রে নতুন করে ভোটগ্রহণ হচ্ছে এটা প্রহসন।” একই বক্তব্য বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী রামচন্দ্র ডোমেরও। বিজেপির জেলা সভাপতি দুধকুমার মণ্ডলের দাবি, “আমরা ৫৯২টি বুথে ফের ভোটগ্রহণের দাবি জানিয়েছিলাম। মাত্র চারটি বুথে ফের ভোট গ্রহণের কমিশনের নির্দেশ নিয়মরক্ষা ছাড়া আর কিছু নয়।” শাসকদেলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস চালোনের অভিযোগ আগেই অস্বীকার করেছিলেন তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। সোমবার এ বিষয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া চাওয়া হলে তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পুনরায় ওই কেন্দ্রগুলিতে ভোট হবে। এই নিয়ে আমার কিছু বলার নেই।”
অন্য দিকে, বর্ধমান জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলকোটের দেবগ্রামে ৭৮৪ জন ও চাকদহতে ৫৩৭ জন ভোটার। এই দুটি বুথে ভোট পড়েছে যথাক্রমে ৯৪ শতাংশ ও ৯৫ শতাংশ। আর আউশগ্রামের পাণ্ডুক বুথে ভোটার সংখ্যা ছিল ১০০৫ জন। সেখানে ৯৫.০২ শতাংশ মানুষ ভোট দিয়েছেন। প্রশাসনের কর্তাদের ধারণা, ভোট বেশি পড়ার জন্যই নির্বাচন কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ফের ভোট করার নির্দেশ দিয়েছে। বর্ধমান জেলা প্রশাসন কী কারণে পুনর্নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা জানাতে চায়নি। জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, “আমাদের জেলায় ৮টি বুথে ফের ভোট হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy