বাগবাজার সর্বজনীনের পুজোর প্রতিমা। ফাইল ছবি।
তিথি অনুযায়ী বিজয়া দশমী হয়ে গিয়েছে শনিবার। কিন্তু পার্বণপ্রিয় বাঙালি মা দুর্গার কৈলাসে পাড়ি দেওয়ার দিন হিসাবে রবিবারকেই ধার্য করেছে। এ সবের মধ্যে কলকাতার সব বড় পুজো কমিটির উদ্যোক্তা আবার আগামী বছরের পুজো নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করে দিয়েছেন। সেই তালিকায় সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে উত্তর কলকাতার টালা প্রত্যয় পুজো কমিটি। আগামী বছর তাদের শারদোৎসব শততম বছরে পা দেবে। তাই এ বছরই আগামী বছরের পুজোর থিম শিল্পী হিসাবে সুশান্ত পালের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। গত কয়েক বছর ধরেই সুশান্তই টালা প্রত্যয়ের পুজোর মঞ্চ সাজিয়ে এসেছেন, তাতে সাফল্যও এসেছে। তাই শততম বর্ষেও সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চায় টালা প্রত্যয়।
উত্তর কলকাতার আদি দুর্গাপুজোর মধ্যে অন্যতম চোরবাগান সর্বজনীন। এ বার তাদের পুজোর থিম সাজিয়েছেন শিল্পী দেবোতোষ কর আর প্রতিমা গড়েছিলেন শিল্পী সুব্রত মৃধা। তাদের পুজোর অন্যতম কর্মকর্তা জয়ন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘আগামী সোমবারের মধ্যেই আগামী বছরের শিল্পী কে হবেন, তা ঠিক করা যাবে বলেই মনে করছি।’’ দক্ষিণ কলকাতার অন্যতম বড় পুজো খিদিরপুর ২৫ পল্লির এ বারের শারদোৎসব সাজিয়েছেন শিল্পী বিমল সামন্ত। সেই পুজো কমিটিই আবার নতুন করে ভাবনাচিন্তা করছে তাদের ৮১তম বছরের পুজোর জন্য। তাদের অন্যতম কর্তা কালী সাহা বলেন, ‘‘এখন প্রতিযোগিতার বাজার। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সবকিছু ঠিক করে ফেলতে হয়। আর আমাদের পুজো কমিটিতে একক ভাবে কোনও সিদ্ধান্ত হয় না। সর্বসম্মতিক্রমে যে সিদ্ধান্ত হবে, তা সবাইকে মেনে নিতে হবে।’’ পরপর দু’বছরের সাফল্যে উজ্জীবিত পূর্বাচল শক্তি সংঘ। শিল্পী পার্থ দাশগুপ্তকে তাই ২০২৫ সালের শারোদৎসবের জন্য আবারও তাদের সঙ্গে থেকে যাওয়ার অনুরোধ করা হতে পারে।
অনেক বছর পর অভিজ্ঞ শিল্পী বদল করে যুবাশিল্পী মানস দাসকে সুযোগ দিয়েছিল বড়িশা ক্লাব। সুন্দরবনের সঙ্গে বড়িশা জনপদের সম্পর্কের কথাই নিজের থিমে তুলে ধরেছিলেন মানস। ক্লাব সভাপতি সুদীপ পোল্লে বলেন, ‘‘ঠিক সময় সবাইকে সবকিছু জানানো হবে।’’ পাশাপাশি দুই প্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাব একযোগে হীরক জয়ন্তী বর্ষ পালন করবে বেহালায়। বেহালা নূতন দল এবং বেহালা ফ্রেন্ডস। বেহালা নূতন দলের ভাবনায় একসঙ্গে তিন জন শিল্পীকে এক মঞ্চে এনে নিজেদের হীরক জয়ন্তী বছরের পুজো সাজানোর পরিকল্পনা। আবার বেহালা ফ্রেন্ডসের অন্যতম কর্তা ভাস্কর সাহা আবার থিম পুজো থেকে সরে গিয়ে বিকল্প কিছু করে দেখাতে চান বলেই মন্তব্য করেছেন।
উত্তর কলকাতার হাতিবাগান নবীন পল্লি পরপর দু’বছর দুটি পৃথক বিষয় ভাবনায় মণ্ডপ সাজিয়ে সাফল্য পেয়েছে। গত বছর সুকুমার রায়ের ‘আবোল তাবোল’ আর এ বছর থিয়েটার পাড়া। শিল্পী অনির্বাণ দাসের ভাবনায় ‘আবোল তাবোল’ আর এ বছর রাজু সরকারের ভাবনায় থিয়েটার পাড়া সাজানোর পর শিল্পী চয়নকে নিয়ে কিছুটা দোটানায় তারা। আলিপুর সর্বজনীন আবার বহুরূপী থিম করে সাফল্য পেয়ে ধরে রাখতে চায় শিল্পী অনির্বাণকে। একই ভাবে ভবতোষ সুতারকে ধরে রাখতে চায় অর্জুনপুর আমরা সবাই। একে ব্লকের পুজোও সাজিয়েছিলেন ভবতোষই। কিন্তু আগামী বছরেও তাঁকে রাখা যাবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
প্রায় এক দশকের বেশি সময় পর শিল্পী প্রদীপ দাসকে দিয়ে নিজেদের পুজোর মঞ্চ সাজিয়ে সাফল্য পেয়েছে বেহালা ক্লাব। তাঁরা প্রদীপকে ধরে রাখতেই চায়। কিন্তু প্রদীপের মতো যুবা শিল্পীকে পেতে আগ্রহী উত্তর থেকে দক্ষিণের সব বড় পুজো কমিটি। তবে ঘনিষ্ঠ মহলে প্রদীপ জানিয়েছেন, তিনি এখনও কিছুই ঠিক করেননি। আর মধ্য কলকাতার ওয়েলিংটন নাগরিক কল্যাণ সমিতির পুজো সাজিয়েছিলেন শিল্পী রবীন রায়। ক্লাব সূত্রে খবর, তাঁকেই ধরে রেখে আগামী বছরের পুজোর জন্য এগোতে চায় তারা। আবার কলকাতা পুরসভার শাসকদলের মুখ্যসচেতক বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্ত জানিয়েছেন, সোমবার তাদের প্রতিমা নিরঞ্জনের পরেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন কেন্দুয়া শান্তি সংঘ। এ বছর তাদের শিল্পী ছিলেন সুশান্ত পাল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy