নিহত বালিকার দেহ ঘিরে বিক্ষোভ গ্রামবাসীদের। —ফাইল চিত্র।
নিহত বালিকার দেহ ঘিরে রাত জাগলেন গ্রামবাসীরা। সকাল থেকে দিনভর দফায় দফায় চলল মিছিল, রাস্তা অবরোধ। দেহ সমাহিত করার পরেও অবরোধ-বিক্ষোভ থামেনি। পুলিশকে দেখে ‘দূর হটো’ স্লোগান, এমনকি পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটেছে। তৃণমূল সাংসদ এলাকায় এলে তাঁকে ঘিরেও ‘গো ব্যাক’ স্লোগান ওঠে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য বালিকার বাড়িতে গিয়ে দেখা করেন সাংসদ। ইতিমধ্যেই এই ঘটনার তদন্তে বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট গঠন করেছে প্রশাসন। রাজ্য পুলিশের এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপার পলাশচন্দ্র ঢালির নেতৃত্বে সিট গঠনের ঘোষণা করেন।
ময়না তদন্তের পরে সোমবার রাত পৌনে ১০টা নাগাদ গ্রামে ফেরে নাবালিকার দেহ। পুলিশ সূত্রের খবর, রাতেই দেহ সৎকারের ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছিলেন নাবালিকার বাবা। সেই মতো স্থানীয় শ্মশানে সৎকারের পরিকল্পনা হয়েছিল। কিন্তু আন্দোলনকারীরা বাধা দেন। পুলিশকে জানিয়ে দেওয়া হয়, সকালের আগে অন্ত্যেষ্টি করা যাবে না।
সকাল হতেই দেহ নিয়ে শুরু হয় মিছিল। পুলিশ সূত্রের খবর, পরিবারের সম্মতিতে স্থানীয় একটি শ্মশানে দেহ দাহ করার পরিকল্পনা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে আন্দোলনকারীরা দেহ সমাহিত করার কথা বলেন। সেই মতো, এলাকায় মিছিল শেষে দুপুরে নাবালিকার বাড়ির কাছেই দেহ সমাহিত করা হয়।
ইতিমধ্যে বাড়ির অদূরে প্রধান রাস্তা আটকে অবরোধ শুরু করে বিক্ষোভকারীদের একাংশ। নাবালিকা মৃত্যুর সঠিক বিচার, অপরাধীর কঠোর সাজার দাবি জানানো হয়। দফায় দফায় বিক্ষোভ, অবরোধ চলে। বিক্ষোভকারীরা জানান, অপরাধীর শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। দিন কয়েক আগে পাশেই একটি গ্রামে মদের দোকান খোলার প্রতিবাদে এককাট্টা হয়ে প্রতিরোধ কমিটি গড়ে তোলেন গ্রামবাসীরা। সন্ধ্যায় সেই কমিটির তরফে গ্রামবাসীরা এলাকায় মিছিল করেন। গ্রামবাসীদের আন্দোলনের পাশাপাশি বিজেপির ছাত্র সংগঠন এবিভিপির তরফে এ দিন স্থানীয় একটি থানায় বিক্ষোভ দেখানো হয়। বিকেলে বারুইপুরের পুলিশ সুপার দফতরে স্মারকলিপি দেয় মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর। তাঁদের দাবি, এই ঘটনা গ্রেফতার হওয়া যুবকের একার কাজ নয়। তার পিছনে অন্য কারও ইন্ধন থাকতে পারে। ওই যুবককে ফাঁসানো হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখার আবেদন করেন তাঁরা।
এ দিকে দুপুরে বিক্ষোভ-অবরোধের মধ্যে পুলিশের এক মহিলা কর্মী অসুস্থ হয়ে পড়েন। পুলিশের গাড়িতে তুলে তাঁকে নিয়ে যাওয়ার সময় অবরোধকারীরা গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখান ও ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এই ঘটনায় চার জনকে আটক করেছে পুলিশ।
দুপুরে এলাকায় আসেন স্থানীয় সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল। প্রথমে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান উঠলেও পরে তিনি বালিকার বাড়িতে পৌঁছন। বাবা-মার সঙ্গে দেখা করেন। সমাধিস্থলেও যান। প্রতিমা বলেন, ‘‘সব রকম ভাবে পরিবারটির পাশে আছি। যে কোনও প্রযোজনে আমার সহযোগিতা ওঁরা পাবেন।’’ বারুইপুর পুলিশ জেলার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘দেহ সৎকারের ক্ষেত্রে পরিবারের ইচ্ছা অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy