ধর্মঘট উঠে যাওয়ার পরেও আলুর দাম স্বাভাবিক হয়নি সর্বত্র। —ফাইল চিত্র।
গত কয়েক দিন ধরে আলুর বাজারে গিয়ে নাভিশ্বাস উঠছিল সাধারণ ক্রেতার। ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছিল আলু। কোথাও কোথাও সেই দাম বেড়ে হাফ সেঞ্চুরিও করে ফেলেছিল। ব্যবসায়ীদের ধর্মঘটের কারণে বাজারে আলু মেলাই ভার। তবে ধর্মঘট উঠেছে। ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে বাজার। যদিও এখনও আলুর বাজারে স্বস্তি মেলেনি। একাধিক জেলায় এখনও আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকার বেশি দামে। আলুর জোগান আগের চেয়ে বেড়েছে।
আলু ব্যবসায়ীরা ধর্মঘট তুলে নিয়েছেন গত বুধবার। শুক্রবার সকালেও হাওড়ার একাধিক বাজারে আলুর দাম ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। ক্রেতারা বেশি দাম দিয়েই সেই আলু কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। তবে আগের চেয়ে বাজারে আলু যে বেড়েছে, তা মেনে নিচ্ছেন সকলেই। হাওড়ায় জ্যোতি আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকা কেজি দরে। চন্দ্রমুখী আলুর দাম ৪০ টাকা কেজি, কোথাও কোথাও তার চেয়েও বেশি।
আলু-সহ বিভিন্ন সব্জির দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে জেলায় জেলায় বাজারে প্রশাসনের অভিযান চলছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আসানসোলের অন্যতম প্রধান সব্জি বাজারে হানা দেন পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরা। জেলাশাসক এস পন্নোবলম, আসানসোল সদরের মহকুমা শাসক বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য এবং ডিসিপি সেন্ট্রাল ধ্রুব দাস বাজারে অভিযান চালিয়েছিলেন। সঙ্গে ছিল স্থানীয় পুলিশ। আলু থেকে শুরু করে পেঁয়াজ এবং বাকি সব্জি অযথা বেশি দামে বিক্রি করা যাবে না বলে জানান তাঁরা। বিক্রেতাদের কাছে গিয়ে দামের খোঁজ নেন। কিন্তু অভিযোগ, পুলিশ এবং প্রশাসনের আধিকারিকেরা এলে দাম কমছে। আবার পরমুহূর্তেই তা বেড়ে যাচ্ছে। ক্রেতাদের অভিযোগ পেয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আধিকারিকেরা। শুক্রবার সকালে আসানসোলে আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকা কেজি দরে। পূর্ব বর্ধমানের বাজারেও খুচরো বিক্রেতারা ৩২ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করছেন। এই দুই জেলায় আগের চেয়ে সামান্য হলেও কমেছে আলুর দাম।
ব্যবসায়ীদের ধর্মঘটের প্রভাব পড়েছিল বাঁকুড়াতেও। আলুর দাম এক লাফে অনেকটা উঠে গিয়েছিল। তবে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে বাজারে আলুর জোগান বেড়েছে। শুক্রবার সকালে বাঁকুড়ার প্রায় সব বাজারেই আলু বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩২ টাকা কেজি দরে।
হুগলির বাজারে আলুর জোগান বাড়লেও দামে খুশি নন ক্রেতারা। বিক্রেতারাও চাইছেন, দাম আরও খানিকটা কমুক। তবেই বিক্রি বৃদ্ধি পাবে। শুক্রবার সকালে হুগলিতে জ্যোতি আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৩ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে। চন্দ্রমুখী আলুর দাম এখনও ৩৮ থেকে ৪০ টাকা প্রতি কেজি। খুচরো বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, শুক্রবার তাঁরা ২৮ টাকা কেজি দরে আলু কিনেছেন। গাড়ি ভাড়া করে তা বাজারে নিয়ে যেতে আরও এক টাকা করে খরচ হয় প্রতি কেজিতে। তার উপর বস্তায় দেড় কেজির কাছাকাছি আলু কম থাকে। তাই ছোট আলু ৩২ টাকা এবং মাঝারি আলু ৩৫ টাকায় বিক্রি করছেন তাঁরা। দাম আরও খানিকটা কমলে ক্রেতা এবং বিক্রেতা উভয়েরই সুবিধা হবে।
পূর্ব মেদিনীপুরে আলুর দাম আগের চেয়ে বেশ খানিকটা কমেছে। গত কয়েক দিনে টাকা দিয়েও বাজারে আলু পাওয়া যাচ্ছিল না। কোনও কোনও ক্ষেত্রে ৫০ টাকা কেজি দরেও আলু বিক্রি হতে দেখা গিয়েছে। সেই আলুর মানও তেমন ভাল ছিল না। তবে শুক্রবার সকাল থেকে ছবিটা বদলেছে। নতুন আলু সরবরাহ হয়েছে বাজারে। বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা প্রতি কেজি দরে।
পশ্চিম মেদিনীপুরের বাজারে শুক্রবারও জ্যোতি আলুর দাম ৩৫ টাকা প্রতি কেজি। হিমঘর থেকে আলু বেরিয়ে আসায় বাজারে জোগান স্বাভাবিক হয়েছে। দাম আরও কিছুটা কমার আশায় আছেন ক্রেতা এবং বিক্রেতারা। দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেও বিভিন্ন বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪২ টাকা কেজি দরে। ধর্মঘট উঠলেও আলুর দাম কমেনি।
জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরা টহল দিচ্ছেন উত্তর ২৪ পরগনার বাজারে। ফলে সেখানে আপাতত আলুর দাম কিছুটা নিয়ন্ত্রণে। বেড়েছে জোগানও। বৃহস্পতিবার যে আলু বারাসতের বাজারে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে, সেই আলুই শুক্রবার মিলছে ৩৫ টাকায়। তবে সর্বত্রই আলুর দাম আরও কমবে বলে আশা করে আছেন ক্রেতারা। দাম কমলে হাঁপ ছেড়ে বাঁচবেন, জানাচ্ছেন বিক্রেতারাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy