ছবি: সংগৃহীত।
সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের পরে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়। হিন্দিকে ভারতের জাতীয় ভাষা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে প্রেসিডেন্সির ওয়েবসাইটে। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে হিন্দি বিভাগের বর্ণনা দিতে গিয়ে এ কথা লেখা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে হইচইয়ের পাশাপাশি শুরু হয়েছে বিতর্ক। প্রেসিডেন্সির ছাত্র সংসদ সোমবার কর্তৃপক্ষের কাছে এই বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে।
এর আগে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের ওয়েবসাইটেও সেখানকার হিন্দি বিভাগের বর্ণনা দিতে গিয়ে হিন্দিকে রাষ্ট্রভাষা বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় হইচই শুরু হয়ে। সোমবার দেখা যায়, বিষয়টি ওয়েবসাইট থেকে মুছে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ বার বিতর্কের কেন্দ্রে প্রেসিডেন্সি। তাদের ওয়েবসাইটে এটাও লেখা হয়েছে যে, হিন্দি হল এমন বিভাগ, যেখানে সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকে, বিভিন্ন ভাষাভাষী পড়ুয়ারা এসে জাতীয় ভাষার অধীনে দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করে। বিষয়টি নিয়ে প্রেসিডেন্সির ছাত্র সংসদ এ দিন ডিন অব স্টুডেন্টস অরুণ মাইতির কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে।
প্রশ্ন উঠছে, দেশের শিক্ষা-সংস্কৃতি প্রসারের ক্ষেত্রে যে-শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বরাবর অগ্রণী ভূমিকা নিয়ে আসছে, সেই প্রেসিডেন্সি কী ভাবে এমন ভুল তথ্য তুলে ধরছে? সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, ভারতে কোনও জাতীয় ভাষাই নেই। হিন্দি হল অন্যতম ‘অফিসিয়াল’ বা সরকারি ভাষা। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক সব্যসাচী বসুরায়চৌধুরীরও বক্তব্য, ভারতের কোনও জাতীয় ভাষা নেই। সংবিধানের ৩৪৩ নম্বর ধারা অনুযায়ী হিন্দি ‘অফিসিয়াল’ ভাষা। তিনি বলেন, ‘‘নতুন জাতীয় শিক্ষানীতির খসড়ায় হিন্দিকে জাতীয় ভাষা করার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছিল। কিন্তু তা নিয়ে প্রবল প্রতিবাদ হয়। চূড়ান্ত খসড়ায় খুব স্পষ্ট করে এই বিষয়টি না-থাকলেও একেবারে প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে বলেও লেখা নেই।
আরও পড়ুন: বৈচিত্রই ভারতবর্ষ, বলছেন অক্সফোর্ডের সম্মানিতা
প্রেসিডেন্সির ছাত্র সংসদের সভানেত্রী মিমোসা ঘোড়াই এ দিন বলেন, ‘‘যে-ভাবে ওয়েবসাইটে হিন্দিকে জাতীয় ভাষা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি উল্লেখ করা হয়েছে, হিন্দির অধীনে রয়েছে অন্যান্য ভাষা। এটাও মানা যায় না। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমন ভুল তথ্য রয়েছে, এটা মেনে নেওয়া যায় না। অবিলম্বে এই তথ্য ওয়েবসাইট থেকে মুছে দিতে হবে।’’ প্রেসিডেন্সির কলা বিভাগের ডিন এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক প্রদীপ বসু জানান, হিন্দি কোনও ভাবেই ভারতের জাতীয় ভাষা নয়। ‘‘প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ঠিক কী লেখা হয়েছে, তা জানি না। খতিয়ে দেখে যা বলার বলব,’’ বলেন প্রদীপবাবু। এই বিষয়ে বক্তব্য জানতে প্রেসিডেন্সির উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়াকে বার বার ফোন ও মেসেজ করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁর কোনও জবাব মেলেনি। তবে ছাত্র সংসদের তরফে রাতে জানানো হয়, দিনভর প্রতিবাদের পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওয়েবসাইট থেকে হিন্দি সংক্রান্ত বক্তব্য সরিয়ে নিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy