Advertisement
E-Paper

রামনবমীর পুনরাবৃত্তি যেন হনুমান জয়ন্তীতে না হয়, কোর্ট-সরকার-পুলিশ, সব মহলেরই সতর্কতার বার্তা

রামনবমী পালন নিয়ে বিচ্ছিন্ন কয়েকটি ঘটনায় তোলপা়ড় রাজ্য রাজনীতি। এমন পরিস্থিতিতে সতর্ক সব পক্ষই। আদালত থেকে পুলিশ কিংবা সরকার সব মহলের পক্ষেই শান্তি রক্ষার বার্তা দেওয়া হয়েছে। চলছে প্রস্তুতিও।

Preparation of peacefull Hanuman Jayanti celebration in West Bengal

রাজ্যে যাতে কোনও রকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি না হয় তার জন্য বুধবারই মমতার সুরে বার্তা দিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। — ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২৩ ২১:০৫
Share
Save

রাজ্যের কয়েকটি জায়গায় রামনবমীকে কেন্দ্র করে বিচ্ছিন্ন ভাবে ঘটে যাওয়া অনভিপ্রেত অশান্তি নিয়ে তোলপাড় রাজনীতি। এমনই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার হনুমান জয়ন্তী পালিত হতে চলেছে। গেরুয়া শিবির তো বটেই অন্যান্য সংগঠনের পক্ষেও সাধারণ মানুষকে নিয়ে মিছিল, শোভাযাত্রার ডাক দেওয়া হয়েছে। অন্য দিকে, রমজান মাসও চলছে। এই পরিস্থিতিতে যাতে কোনও সংঘাতের আবহ তৈরি না হয় তার জন্য বিভিন্ন মহল থেকেই সতর্কতার বার্তা দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ পেয়ে পুলিশ, প্রশাসন যেমন তৈরি তেমনই কলকাতা হাই কোর্টও কিছু নির্দেশ দিয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষে গোটা দেশের সঙ্গে বাংলাতেও সরকারকে শান্তি বজায় রাখতে উদ্যোগী হওয়ার জন্য নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে।

গত সোমবারই পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরিতে মমতা আগাম সতর্ক করেছিলেন। বলেছিলেন, ‘‘প্রশাসনকে ৬ তারিখ নিয়েও সতর্ক করব। আমাদের ছেলেমেয়েদেরও বলব। আমরা সবাই বজরঙ্গবলীকে সম্মান করি। কিন্তু ওরা যেন আবার অশান্তি করার ছক না কষতে পারে।’’ মমতার এই বার্তার পরেই নবান্নের তরফে সব জেলাকে সতর্ক থাকার নির্দেশ পাঠানো হয়। জানা যায়, সতর্কতামূলক সব ব্যবস্থা যাতে ওই দিনের জন্য নেওয়া হয় তার জন্য প্রত্যেক জেলার পুলিশ সুপারকে বার্তা দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবারও দিঘায় একটি অনুষ্ঠানে মমতা বলেন, ‘‘রমজান মাস চলছে। নববর্ষ আসছে। আগামিকাল হনুমান জয়ন্তী। শান্তিতে ভাল করে সব কিছু পালন করুন। শান্তিতে পালন করলে কোনও অসুবিধা হয় না। বাংলা শান্তির জায়গা। বাংলায় সব ধর্ম, সব উৎসব সব কিছুকে সম্মান করি। সবার উৎসবে সবাই যেন মিলিত হতে পারি। সবার কাছে যেন শান্তির প্রার্থনা করতে পারি।”

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

বৃহস্পতিবার কেন্দ্রের তরফেও একটি নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে রাজ্যকে। সেটা অবশ্য সব রাজ্যকেই পাঠিয়েছে অমিত শাহের মন্ত্রক। টুইট করে বলা হয়েছে, ‘‘হনুমান জয়ন্তীতে প্রস্তুতি নিয়ে সমস্ত রাজ্যকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পরামর্শ, যেন আইনশৃঙ্খলা বজায় রেখে শান্তিপূর্ণ ভাবে এই উৎসব পালন করার দিকে লক্ষ রাখা হয়। সেই সঙ্গে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করে এমন বিষয়গুলির উপর কড়া নজরদারি রাখা হয়।’’

রাজ্যে যাতে কোনও রকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি না হয় তার জন্য বুধবারই মমতার সুরে বার্তা দিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তিনি একটি সাক্ষাৎকারে জানান, হনুমান জয়ন্তীর দিন যাতে আবার অশান্তির ঘটনা না ঘটে তা নিশ্চিত করতে হবে। তার আগেই অশান্তি নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এই ধরনের হিংসাত্মক ঘটনা কড়া হাতে দমন করবে রাজ্য। আগুন নিয়ে খেলার পরিণাম শীঘ্রই টের পাবেন আইনভঙ্গকারীরা। এমন শাস্তি দেওয়া হবে যে, দুষ্কৃতীরা তাদের জন্মদিনকে অভিশাপ দেবে!’’

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

কলকাতা হাই কোর্টও সতর্ক করেছে বৃহস্পতিবার। হনুমান জয়ন্তীতে শান্তি বজায় রাখতে রাজ্যকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য নিতে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। একই সঙ্গে, সম্প্রতি অশান্ত হয়ে ওঠা এলাকাগুলিতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতেও কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য নিতে বুধবার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। এ ব্যাপারে রাজ্যকে অবিলম্বে সাহায্য করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রকেও। এর পরে নবান্নের শীর্ষ কর্তারা বৈঠকে বসেন। ঠিক হয়েছে, চন্দননগর, কলকাতা এবং ব্যারাকপুর কমিশনারেটে ৩ কোম্পানি আধাসেনা মোতায়ন হবে। রাজ্য পুলিশ বড় সংখ্যায় থাকবে কিন্তু যেখানে প্রয়োজন হবে সেখানে আধাসেনা মোতায়ন করা হবে।

রাজ্যের অন্য জায়গার মতো কলকাতাতেও হনুমান জয়ন্তী শান্তিতে যাতে পালিত হয় সেই জন্য উদ্যোগী হয়েছে পুলিশ। লালবাজারের তরফে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার যে কোনও মিটিং-মিছিলের জন্য উদ্যোক্তাদের আগাম অনুমতি নিতে হবে পুলিশের। কলকাতা পুলিশের অনলাইন পোর্টালে নির্দিষ্ট ফর্ম পূরণ করলে এবং ওই ফর্মে উল্লিখিত যাবতীয় শর্ত রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দিলে তবেই সব দিক খতিয়ে দেখে অনুমতি দেওয়া হবে। অস্ত্র বা লাঠি হাতে শোভাযাত্রায় বেরনো যাবে না। ব্যবহার করা যাবে না ডিজে কিংবা সাউন্ড সিস্টেমও। রামনবমীর একাধিক শোভাযাত্রা নির্ধারিত পথের বদলে স্পর্শকাতর এলাকা দিয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েই এই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, মিছিল শুরু এবং শেষের সময় উল্লেখ করতে হবে। কোন রাস্তা দিয়ে মিছিল যাবে, তার সম্পূর্ণ তথ্য বিশদে জানাতে হবে। শোভাযাত্রার অনুমতি পেতে আবেদনকারীকে তাঁর নাম কিংবা আয়োজক সংস্থার নাম পুলিশকে জানাতে হবে। মিছিলে কত জন থাকবেন বা থাকতে পারেন, তা-ও আগাম জানাতে হবে।

Hanuman Jayanti Ram Navami

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।