Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Awas Yojana

আবাসের ছাঁকনিতে আটকে গিয়েছে কুঁড়ে ঘর, অথচ গলে গিয়েছে আস্ত চার তলা বাড়ি!

প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় উপভোক্তাদের তালিকা ধরে সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, দারিদ্রসীমার নীচে থাকা একটা বড় অংশের নাম তাতে নেই। যাঁদের নাম আছে, তাঁদের অনেকেই স্বচ্ছল পরিবারের।

প্রধানমন্ত্রী আবাস প্লাস যোজনার তালিকা থেকে বহু গরিব মানুষের নাম বাদ পড়ার অভিযোগ উঠেছে।

প্রধানমন্ত্রী আবাস প্লাস যোজনার তালিকা থেকে বহু গরিব মানুষের নাম বাদ পড়ার অভিযোগ উঠেছে। গ্রাফিক : শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২২ ০৮:০৪
Share: Save:

মাটির দেওয়াল দেওয়া এক কামরার ঘর। চারটি দেওয়ালের তিনটিই ভগ্নপ্রায়। পিছনের দেওয়ালটির যা অবস্থা, হালকা ঠেলা দিলেই হুড়মুড় করে ভেঙে পড়তে পারে। মাথার উপর ভাঙা টালির চাল। ঝড়জল থেকে বাঁচতে টালির নীচে ত্রিপল গুঁজে দেওয়া হয়েছে। ন্যুব্জ শরীরে ভিক্ষে করে এসে এই ঘরেরই দাওয়ায় বসে দিন গুনতেন অশীতিপর জুল্লু রহমান। বিডিও কথা দিয়েছিলেন, একখানা মাথা গোঁজার ঠাঁই দেবেন! তার পর বহু মাস কেটে গিয়েছে।

বিডিও অবশ্য কথা রেখেছেন। পাকা বাড়ির ব্যবস্থা করেই ‘সুখবর’ দিতে ছুটে গিয়েছিলেন জুল্লুর কাছে। কিন্তু তত দিনে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে যে! শূন্য দাওয়ায় দাঁড়িয়ে বিডিও হাঁক দিতেই বেরিয়ে আসেন সত্তরোর্ধ্ব অশক্ত খুদুজান বিবি। জানান, তাঁর স্বামী জুল্লু আর বেঁচে নেই! মাস ছয়েক আগে মারা গিয়েছেন। যা শুনে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছিলেন বিডিও সামসুজ্জামান। ফিরতে ফিরতে তিনি কী ভাবছিলেন? সরকারি কাজের দীর্ঘসূত্রিতার পরিণতি কতটা নির্মম?

জুল্লু রহমান।

জুল্লু রহমান। নিজস্ব চিত্র।

নদিয়ার করিমপুর-২ ব্লকের গমাখালি গ্রামের জুল্লু-খুদুজানের মতো হাওড়ার শ্যামপুরের বাসিন্দা সাকিনা খাতুনের অবস্থাও একই রকম। টালি-পলিথিনের ছাউনি দেওয়া ঘরে কার্যত অথর্ব স্বামী আর সাড়ে পাঁচ বছরের মেয়েকে নিয়ে থাকেন পেশায় আশাকর্মী সাকিনা। আবাস প্লাস যোজনায় ঘর পাওয়ার প্রকৃত যোগ্য কারা, প্রশাসনের নির্দেশে সেই সমীক্ষা তিনিও করছেন। কিন্তু উপভোক্তাদের তালিকায় তাঁর নাম নেই! বিস্মিত সাকিনার প্রশ্ন, ‘‘তা হলে আমরা কি বড়লোক? সরকারি প্রকল্পে ঘর পাওয়ার যোগ্য নই?’’

সমীক্ষার কাজ করতে গিয়ে যোগ্যদের তালিকা হাতে পেয়ে নিজের নাম তন্ন তন্ন করে খুঁজেছিলেন সাকিনা। মেলেনি। আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ‘‘যাদের পাকা বাড়ি রয়েছে, তাদেরও নাম আছে তালিকায়। আমরা কী দোষ করলাম!’’ সমীক্ষার কাজে বেরোনোর সময় চোখের জল মুছতে মুছতে উঠোনে বসে থাকা স্বামীকে দেখিয়ে সাকিনা বলেন, ‘‘বছরখানেক আগে কাজ করার সময় পড়ে গিয়ে কোমরের হাড় ভেঙে যায়। তখন থেকেই বাড়িতে বসা। এই কাজ করে মাসে সাড়ে চার হাজার টাকা পাই। যা ওঁর (স্বামীর) ওষুধেই খরচ হয়ে যায়। ঘর তুলব কী করে!’’

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী আবাস (প্লাস) যোজনায় দুঃস্থদের বাড়ি দেওয়ার প্রক্রিয়া আবার শুরু হয়েছে। প্রথম ধাপ হিসাবে গ্রামে গ্রামে তালিকা ধরে উপভোক্তাদের ‘যোগ্যতা’ খতিয়ে দেখার কাজ চলছে। কয়েক বছর আগেও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়ি দেওয়ার জন্য সমীক্ষা হয়েছিল। তালিকা প্রকাশের পরে দেখা গিয়েছিল, দারিদ্রসীমার নীচে থাকা একটা বড় অংশের নাম তাতে নেই। যাঁদের নাম আছে, তাঁদের অনেকেই স্বচ্ছল পরিবারের। তাঁদের মধ্যে কেউ আবার আগেও সরকারি প্রকল্পে বাড়ি পেয়েছেন। কারও আবার পাকা বাড়ি আছে। অথচ প্রকৃত গরিব, যাঁরা ঝুপড়িতে কোনওক্রমে বসবাস করছেন, তাঁদের নাম আবাস যোজনার তালিকায় নেই।

সাকিনার মতোই তালিকায় নাম নেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের গড়দেওয়ানি পঞ্চায়েতের বাসিন্দা বাসিন্দা আব্দুল আহাদ লস্করের। গত বর্ষায় মাটির একচালা বাড়ি ভেঙে পড়ায় এখন এক পড়শির বারান্দায় স্ত্রী-ছেলেপুলেকে নিয়ে বাস করেন তিনি। ভেবেছিলেন, আবাস যোজনার টাকা পেলে ঘর বানাবেন। কিন্তু আহাদের নাম নেই তালিকায়। মাছবিক্রেতা আহাদ দুঃখ করে বলছেন, ‘‘কেন বার বার আমাদের নাম বাদ যাচ্ছে জানি না।’’ উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটা ব্লকের আদিবাসী পাড়ায় বাঁশের খুঁটিতে ত্রিপল দিয়ে মাথা গোঁজার জায়গা তৈরি করেছেন কৌশল্যা সর্দার। উঠোনে মাটির উনুনে ভাত ফোটাচ্ছিলেন তিনি। প্রশ্ন করায় বললেন, ‘‘ছেঁড়া ত্রিপলের নীচে থাকি। ঘরে একটাই খাট। নেতারা বলেন, পাকা বাড়ি দেব। ভোটের সময় নেতারা আসেন, প্রতিশ্রুতি দেন। তার পর আর কেউ খবর রাখেন না।’’

তালিকায় ঠাঁই হয়নি আলিপুরদুয়ারের কালচিনি ব্লকের নিউ গোড়ে লাইনের বাসিন্দাদেরও। এলাকার ১৮-২০টি ঘরেরই বেহাল দশা। মাটির মেঝে, বাঁশের বেড়ার দেওয়াল, উপরে ভাঙা টিন। এমন অবস্থায় বছরের পর বছর কাটলেও তালিকায় নাম ওঠেনি। নিজের ঘর তৈরি করার ক্ষমতাও নেই। কারণ, এলাকার অধিকাংশ বাসিন্দাই দিনমজুর। কেউ কাজের সূত্রে ভিন্ রাজ্যে পাড়ি দিয়েছেন। যে টাকা উপার্জন হয়, তা দিয়ে পরিবারের পেট চালাবেন, না ঘর বানাবেন!

আবাস যোজনায় বিস্তর ‘দুর্নীতি’ আর ‘স্বজনপোষণ’ হয়েছে বলে অভিযোগ করে বিরোধীদের দাবি, গরিব মানুষকে বঞ্চিত করে বহু ক্ষেত্রেই নিজেদের ‘পকেটের লোক’কে বাড়ি দিয়েছেন শাসক তৃণমূলের নেতারা। অনেক ক্ষেত্রে তা টাকার বিনিময়েও হয়েছে। ফলে সাকিনাদের মতো অনেকেই সরকারি সাহায্য থেকে দূরে থেকে গিয়েছেন।

বার বার আবেদন করেও বাড়ি তৈরির অনুদান মেলেনি বলে অভিযোগ করে বীরভূমের কীর্ণাহার ১ পঞ্চায়েত অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন আব্দুল আলি, ইব্রাহিম শেখেরা। তাঁদের অভিযোগ, একই পরিবারের একাধিক সদস্যের নামে বরাদ্দ হয়েছে অনুদান। এমনকি, দোতলা বাড়ির মালিকেরাও টাকা পাবেন। কিন্তু প্রকল্পের সুবিধা তাঁদের কাছে পৌঁছচ্ছে না। ইব্রাহিম বলেন, ‘‘আমরা তিন-চার বার করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র-সহ আবেদন করেছি। কিন্তু আমাদের নাম আসেনি। অথচ এলাকায় এমন পরিবারও আছে, যারা তিন-চার বার অনুদান পেয়ে গিয়েছে।’’ নলহাটি ১ ব্লকের বিডিওর দফতরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন কুরুমগ্রাম পঞ্চায়েতের কয়েকশো আবেদনকারী। পূর্ব বর্ধমানের নতুনগ্রামের মহাদেব লেটদের অভিযোগ, ‘‘শাসকদলের কিছু নেতার কারণেই বৈধ প্রাপকেরা বঞ্চিত হচ্ছেন। নাম নথিভুক্ত করার সময় কারচুপি হচ্ছে।’’

আবাসের যাচাই-পর্বে দেখা গিয়েছে, গ্রামে গ্রামে শাসকদলের বহু নেতা, গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান-উপপ্রধান ও সদস্যদের আত্মীয়-পরিজনের নাম তালিকায় রয়েছে। প্রশাসন সূত্রে দাবি, সমীক্ষা চলাকালীন তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে হুগলির পাঁচ তৃণমূল নেতার নিকটজনের নাম। পশ্চিম মেদিনীপুরেও শাসকদলের অন্তত ২০০ জনের নাম বাতিল হয়েছে। উত্তরবঙ্গেও ছবিটা এক। মালদহ এবং দুই দিনাজপুর মিলিয়ে অন্তত লাখখানেক লোকের নাম বাদ পড়েছে তালিকা থেকে। যাঁদের অধিকাংশই জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে শাসক শিবিরের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে দাবি। অনেকে আবার স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে তালিকা থেকে নাম কাটাতে তৎপর।

স্থানীয় সূত্রে দাবি, ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত ভোটের পর গ্রামাঞ্চলে শাসকদলের অনেকেই রাতারাতি ফুলেফেঁপে উঠেছেন। তাঁদের গাড়ি-বাড়ি হয়েছে। তা সত্ত্বেও বাড়ি প্রাপকদের তালিকায় নাম চলে আসায় কেউ কেউ যুক্তি দিচ্ছেন, যখন তালিকা হয়েছিল, তখন কাঁচা বাড়ি থাকলেও পরে তা পাকা হয়েছে। এমনই এক বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষের শাঁকারি ১ পঞ্চায়েতের তৃণমূল উপপ্রধান জাহাঙ্গির শেখ। গ্রামে তাঁর চার তলা বাড়ি। পাশে আরও একটি বাড়ি তাঁর পরিজনের। উপপ্রধানের স্ত্রী এবং সদ্যপ্রয়াত বাবা-সহ এই দুই বাড়ির মোট চার সদস্যের নাম আবাস-তালিকায় ছিল। প্রশাসন সূত্রে খবর, উপপ্রধানের অনুরোধেই তা বাদ দেওয়া হয়েছে।

তালিকায় ছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড় ২ ব্লকের চালতাবেড়িয়া পঞ্চায়েতের প্রধান মাধবী বিশ্বাসের নাম। দোতলা ঝাঁ- চকচকে বাড়ির মালিক হওয়া সত্ত্বেও তিনি কেন সরকারি প্রকল্পের বাড়ি নেবেন, এই প্রশ্ন শুনে একগাল হেসে মাধবী বলেন, ‘‘আরে, ভেবেছিলাম ওরা মজা করছে!’’ বিন্দুবিসর্গ জানতেন না বলে দাবি করে প্রধানের যুক্তি, ‘‘যাঁরা নামের তালিকা করছিলেন, তাঁরাই মজা করে তালিকায় আমার নাম দেওয়ার ক‌থা বলছিলেন। কিন্তু আমি জানতাম না, ওঁরা সত্যিই আমার নাম তালিকায় দিয়ে দেবেন। তালিকা প্রকাশ হতে দেখি আমার নাম রয়েছে। আমি ওঁদের বলেছি নাম বাদ দেওয়ার জন্য।’’

তবে শুধু শাসক তৃণমূল নয়, রাজ্যের প্রধান বিরোধীদল বিজেপিরও বেশ কয়েক জন নেতার আত্মীয়-পরিজনের নাম আবাস-তালিকায় পাওয়া গিয়েছে। বাঁকুড়ার বিজেপি সোনামুখীর বিজেপি বিধায়ক দিবাকর ঘরামির স্ত্রী প্রতিমা ঘরামির নাম তালিকায় ছিল। ছিল ওই জেলারই জগদ্দলা ১ পঞ্চায়েতের প্রধান সুশান্ত শীটের বাবার নামও। দিবাকরের অবশ্য দাবি, ‘‘২০১৮ সালে যখন সমীক্ষা হয়, তখন যৌথ পরিবারে কাঁচা বাড়িতেই থাকতাম। আমাদের অজান্তেই স্ত্রীর নাম তোলা হয়েছে।’’ একই দাবি সুশান্তেরও। তবে সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছে আবাস তালিকায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের বাবার নাম! নিশীথ অবশ্য পাল্টা দাবি করেছেন, দুর্নীতি ঢাকতে শাসকদল ইচ্ছাকৃত ভাবে তাঁর বাবার নাম ওই তালিকায় ঢুকিয়ে দিয়েছে। নাম সরাতে জেলাশাসককে চিঠিও দিয়েছেন তাঁরা।

প্রশাসন সূত্রে দাবি, আবাস-দুর্নীতির ‘প্রবণতা’ বলছে, যে এলাকায় যে রাজনৈতিক দলের দাপট বেশি, সেই দলের নেতা-ঘনিষ্ঠদের নাম তালিকায় এসেছে। ‘ফাঁপরে’ পড়ে তাঁদের অধিকাংশের মধ্যেও নাম কাটানোর হিড়িক দেখা গিয়েছে।

পঞ্চায়েত কর্মীদের তৈরি করা তালিকায় ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় তার সমীক্ষা করতে গ্রামে গ্রামে ছুটে যেতে হয়েছে আশা, প্রাণী-মিত্র, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের। সমীক্ষার কাজ শুরু হওয়ার আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনিক কর্তাদের সতর্ক করে বলেছিলেন, ‘‘যার চার তলা বাড়ি, সে বাড়ি পেয়ে গেল! আর যার কিচ্ছু নেই, সে পেল না। এটা চলবে না।’’ আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের দাবি, সমীক্ষা করতে গিয়ে ঠিক সেই ছবিই উঠে আসছে। প্রশাসনের নির্দেশ মতো তাঁরা যখন সেই নাম বাদ দিচ্ছেন, তখন আবার হুমকি আসছে। হামলা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা সমীক্ষার কাজে যেতে না চাইলে ‘চাপ’ দিচ্ছে প্রশাসনও।

পশ্চিম মেদিনীপুরের এক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর কথায়, ‘‘আমাদের এখন শাঁখের করাতের দশা! যাচাইয়ের কাজে গিয়েও হুমকি, আবার না গেলেও।’’ দক্ষিণ ২৪ পরগনার মন্দিরবাজার ব্লকের এক আশাকর্মী বলছেন, ‘‘আমরা মা ও শিশুদের স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করি। ফলে গ্রামের প্রতিটি পরিবারের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হয়। এখন পাড়ায় পাড়ায় সমীক্ষা চালাতে গিয়ে অনেকের সঙ্গে তিক্ততা তৈরি হচ্ছে। আগামী দিনে সমস্যা হতে পারে।’’

সেই পরিস্থিতিতে আবাস যোজনার উপভোক্তাদের উপযুক্ততা যাচাইয়ের সমীক্ষা থেকে নিজেদের সরিয়ে নিতে বাধ্য হন বহু আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। এতে এক দিকে সমীক্ষার জন্য দল গঠনে বিস্তর কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে প্রশাসনকে। অন্য দিকে, কাঙ্ক্ষিত গতি না আসায় নবান্নের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে সমীক্ষার কাজ শেষ হবে কি না, তা নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে। সমীক্ষা থেকে প্রকৃত চিত্র পাওয়া যাবে কি না, প্রশ্ন থাকছে তা নিয়েও। আশাকর্মী সংগঠনের বীরভূমের জেলা নেত্রী মাধবী সিংহ বলছেন, ‘‘গোটা তালিকাটাই তো জলমেশানো! দোতলা বাড়ি, গাড়ি, অন্য সরকারি প্রকল্পে বাড়ি প্রাপকও ওই তালিকায় রয়েছেন। সমীক্ষার জন্য নির্দিষ্ট ফর্ম্যাটে সত্যি লিখতে গেলেই বিপদ। অন্য দিকে, মিথ্যা ধরা পড়লে প্রশাসন ছেড়ে দেবে না।’’

তবে শুধু ‘রাজনৈতিক চাপ’ নয়, আশাকর্মীরা মানছেন, গ্রামবাসীদেরও এই প্রকল্প সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা নেই। সঠিক তথ্যই পৌঁছয়নি তাঁদের কাছে। অনেক ক্ষেত্রেই তাঁদের ভুল বোঝার কারণেও সমস্যা তৈরি হয়েছে। ক্ষোভ জন্ম নিয়েছে। হাওড়া জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক যেমন বলছেন, ‘‘কাজটা দ্রুত করতে বলা হয়েছে। গ্রামবাসীদের জন্য প্রচারের সুযোগই মেলেনি তেমন। কাজ শুরু হওয়ার পর সরকারি আধিকারিকেরা জায়গায় জায়গায় গিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু তাতে আর কতটুকু কাজ হয়!’’ তা হলে কি প্রচারের অভাবেও এই প্রকল্প নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে? উঠছে সেই প্রশ্নও। (ক্রমশ)

(লেখা: সৌরভ নন্দী। তথ্য সংকলন: পার্থপ্রতিম দাস, রকি চৌধুরী, জয়শ্রী সিংহ, লিপি সিংহ, মীনাক্ষী চক্রবর্তী, প্রণয় ঘোষ, সাথী চট্টোপাধ্যায়, সৌরভ সেন, বিদিশা দত্ত, পায়েল ঘোষ, সুমন মণ্ডল, মৌসুমী খাঁড়া, তরুণিমা মণ্ডল, সমীরণ পাণ্ডে, শিখা মুখোপাধ্যায়, সৈকত ঘোষ এবং অমিতা দত্ত।)

অন্য বিষয়গুলি:

Awas Yojana Pradhan Mantri Aawas Yojna PMAY TMC BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy