পঞ্চায়েত প্রধানের নাম আবাস যোজনয়। — ফাইল চিত্র।
তাঁরা পঞ্চায়েত প্রধান। পাকা বাড়িও রয়েছে। কিন্তু আবাস তালিকায় নাম রয়েছে তাঁদের। শুধু তাঁদেরই নয়, প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, নাম রয়েছে তাঁদের বেশ কয়েক জন আত্মীয়েরও। মুর্শিদাবাদে তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রে এমন ঘটনা সামনে এসেছে জেলা প্রশাসনের।
মুর্শিদাবাদ প্রশাসন সূত্রের খবর, সম্প্রতি তথ্য যাচাই করতে গিয়ে প্রশাসনের আধিকারিকেরা দেখতে পান, আবাস তালিকায় নাম রয়েছে দৌলতাবাদ পঞ্চায়েতের প্রধান রুবেল বিশ্বাস এবং তাঁর ১৮ জন নিকটাত্মীয়ের। একই ভাবে, পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও মণীন্দ্রনগর পঞ্চায়েতের প্রধান এবং তাঁর তিন ভাইয়ের নাম, রাধারঘাট ২ নম্বর পঞ্চায়েতের প্রধান, তাঁর ছেলে-সহ পরিবারের পাঁচ জনের নাম রয়েছে ওই তালিকায়। বৃহস্পতিবার দৌলতাবাদে গিয়ে দেখা গেল, ইংরেজি ‘এল’ অক্ষরের আকৃতির একতলা বাড়ি প্রধানের। পরিপাটি বাড়িতে রয়েছে টিভি, এসি। প্রধানদের কয়েক বিঘা পারিবারিক আবাদি জমিও রয়েছে বলে দাবি।
তালিকায় নাম থাকা নিয়ে রুবেল বলেন, “২০১৮ সালে যখন সমীক্ষার কাজ চলছিল, তখন আমরা এলাকায় ছিলাম না। পঞ্চায়েত গঠনের আগে ১০ জন সদস্যকে নিয়ে ৩৫ দিন ধরে পাথরচাপিতে ছিলাম। সেই সময় কারা আমাদের নাম তালিকায় তুলে দিয়েছিলেন, তা জানি না।” তাঁর আরও দাবি, বিষয়টি জানতে পেরে তিনি নিজেই নামগুলি বাদ দিতে বিডিওকে অনুরোধ করেছেন। কিন্তু এতদিন পরে কেন? রুবেলের বক্তব্য, ‘‘যখন জেনেছি, তখনই বাদ দিতে বলেছি।’’ মণীন্দ্রনগর পঞ্চায়েতের প্রধান তপন ঘোষের বক্তব্য, ‘‘সমীক্ষা যখন হয়, সেই সময়ে দলের নির্দেশে আমি এলাকায় ছিলাম না। কারা আমার নাম জমা দিয়েছেন, তা বলতে পারব না।” রাধারঘাট পঞ্চায়েতের প্রধান বিশাখা মণ্ডলের দাবি, “২০১৮ সালে আমাদের পাকা বাড়ি ছিল না। তখন আমার ছেলেরা আবেদন করেছিল। গত বছর পাকা একতলা বাড়ি করি। সেই সময় আমার ছেলেরা তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার আবেদন করে।’’
বহরমপুরের বিডিও অভিনন্দন ঘোষ বলেন, “যাঁরা আবাস প্রকল্পে ঘর পাওয়ার যোগ্য নন, তাঁদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। মণীন্দ্রনগর পঞ্চায়েতের প্রধান এবং তাঁর তিন ভাইয়ের নাম তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে। দৌলতাবাদ পঞ্চায়েতের প্রধান ও তাঁর আত্মীয়দের নাম, রাধারঘাট ২ পঞ্চায়েতের প্রধান, তাঁর চার ছেলে-সহ পাঁচ জনের নাম বাদ দেওয়া হবে।” তবে দলীয় পঞ্চায়েত প্রধানদের নাম আবাস তালিকায় থাকায় ‘অস্বস্তিতে’ জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। মুর্শিদাবাদ-বহরমপুর ইউনিটে তৃণমূলের চেয়ারপার্সন শাওনি সিংহরায় বলেন, “জনপ্রতিনিধি হয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদ যাঁরা পেয়েছেন, তাঁরা ব্যক্তিগত স্বার্থে কোনও কাজ করতে পারবেন না বলে দলের নির্দেশ আছে। বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। আমরা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy