প্রবীর ঘোষাল নিজস্ব চিত্র।
‘অভিমানী’ সুর শোনা গেল এ বার প্রবীর ঘোষালের কণ্ঠে। সোনালি গুহ, দীপেন্দু বিশ্বাস, অমল আচার্য, বাচ্চু হাঁসদার পথে কি তিনিও হাঁটতে চাইছেন? প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক তথা নীলবাড়ির লড়াইয়ে উত্তরপাড়া আসনের বিজেপি প্রার্থী প্রবীরের বয়ানে তেমন জল্পনাই তৈরি হয়েছে। বিধানসভা ভোটের ঠিক আগেই তিনি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে গিয়েছিলেন। সেই সময় তিনি উত্তরপাড়ার বিদায়ী বিধায়ক। বিজেপি-তে গিয়ে টিকিটও পেয়ে গিয়েছিলেন। তবে তৃণমূল প্রার্থী কাঞ্চন মল্লিকের কাছে হেরে যান। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বড় জয়ের পর তাঁর নেতৃত্বের প্রশংসাও করেছিলেন প্রবীর। এ বার সেই তিনিই তৃণমূলের অন্য নেতৃত্বেরও ‘জয়গান’ গাইলেন।
সম্প্রতি মাতৃবিয়োগ হয়েছে প্রবীরের। তৃণমূলের অনেক নেতা-কর্মী তার পরবর্তীতে প্রবীরের খোঁজখবর নিলেও বিজেপি নেতৃত্বের তরফে কেউ খোঁজ নেননি বলেই অভিযোগ করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘মা চলে যাওয়ার পর সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক, সবাই ফোন করে সমবেদনা জানিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী শোকবার্তা পাঠিয়েছেন। স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের অনেকে শ্মশানেও গিয়েছিলেন। অথচ বিজেপি-র যে কয়েক জন সমবেদনা জানিয়েছেন তাঁরা প্রত্যেকেই স্থানীয়। আমার সঙ্গে বিজেপি-তে যোগ দেওয়া শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়রা যদিও খবর নিয়েছেন। কিন্তু আদি বিজেপি অর্থাৎ নেতৃত্বের কারও ফোন পাইনি। অথচ ৩০ বছর আগে যখন বাবাকে হারাই তখন তপন শিকদাররা বাড়ি এসেছিলেন।’’
মুকুল রায়ের অসুস্থ স্ত্রী কৃষ্ণা রায়কে দেখতে সম্প্রতি হাসপাতালে গিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার সে প্রসঙ্গও তোলেন প্রবীর। তিনি বলেন, ‘‘অভিষেক যাওয়ার পরে দিলীপ ঘোষ গেলেন। প্রধানমন্ত্রী ফোন করলেন। অথচ মুখ্যমন্ত্রী অনেক আগেই খোঁজ নিয়েছেন। সেটা ভেবেই আমি অবাক হচ্ছি।’’
শুক্রবার হুগলিতে সাংগঠনিক বৈঠক করেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ। সেই বৈঠকে গরহাজির ছিলেন প্রবীর। যদিও তাঁর যুক্তি, ‘‘আমি দিলীপবাবুকে ফোন করে বলি সবে মায়ের কাজ হয়েছে। এখন আমি থাকতে পারব না। তাতে দেখলাম উনি খবরটা জানতেন না। আমি তো তৃণমূলেরও কাউকে বলিনি। ওঁরা নিজে থেকেই ফোন করেছেন।’’
ভোটের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যাওয়া সোনালী গুহ, দীপেন্দু বিশ্বাসর ইতিমধ্যেই ফিরতে চেয়ে মমতার কাছে আবেদন করেছেন। সম্প্রতি মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশুও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন অভিষেক, মমতার প্রতি। এ বার কি তবে প্রবীরও সেই পথে? ‘‘বর্তমানে রাজনীতি থেকে দূরে আছি,’’— এমন মন্তব্য করেও প্রবীরের জবাব, ‘‘আমি এখনই এই বিষয়ে কিছু ভাবনা চিন্তা করিনি। তবে কেন দলের এই হার হল তা নিয়ে পর্যালোচনা করা প্রয়োজন বিজেপি-র।’’
এই প্রসঙ্গে হুগলি জেলার তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘কারও সামাজিক বিপর্যয়ের সময় তাঁর পাশে দাঁড়ানোর শিক্ষা আমাদের দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের দিয়েছেন। সেই নির্দেশই আমরা মেনেছি। আমার সঙ্গেও প্রবীরবাবুর কথা হয়েছে। কেউ দলে ফিরবে কি ফিরবে না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন দলনেত্রী। তিনি যে নির্দেশ দেবেন সেটিই আমরা মেনে চলব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy