গত বছর হুগলি জেলায় ৮৭ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছিল। —নিজস্ব চিত্র।
বীজের দাম প্রায় দ্বিগুণ বাড়লেও চলতি বছরে লাভের আশা করছেন হুগলির আলু চাষিরা। মরসুনের শুরুতেই আলু চাষিরা ফসলের ভাল দাম পেয়েছেন। জেলা কৃষি দফতরও জানিয়েছে, চলতি বছরে আলু চাষের জমি বাড়বে। ফলে এ বার তাঁদের মধ্যে উৎসাহও যেন একটু বেশি।
জেলা কৃষি দফতর সূত্রে খবর, রাজ্যের মোট আলুর এক চতুর্থাংশ উৎপদান হয় হুগলি জেলায়। গত বছর জেলায় ৮৭ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছিল। সেই সঙ্গে, বছরভরও আলুর দাম ভাল ছিল। অন্য দিকে, মরসুমের শুরুতে চাষিরাও মোটামুটি আট থেকে দশ টাকা প্রতি কিলো দাম পেয়েছেন। আসন্ন শীতেও আলু চাষ করে লাভের মুখ দেখতে পারেন চাষিরা।
হালকা শীতের আমেজ পড়তেই হুগলিতে আলু চাষের মরসুম শুরু হয়। তাই জেলার আলু চাষিদের তৎপরতা থাকে এই সময়। স্থানীয় চাষিরা জানিয়েছেন, বেশ কিছু জমিতে আমন ধান ওঠার পর আলু বসানোর কাজ শুরু হয়। আবার এমন অনেক জমি আছে, যাতে ডাঙা বা বাগান জমি দেখে সেখানে আগেই আলু বসানো হয়।
আরও পড়ুন: হিন্দমোটরের তরুণীর মৃত্যু নিয়ে পুলিশি তদন্তের নির্দেশ আদালতের
আরও পড়ুন: কৃষি আইন নিয়ে বিজেপি বিরোধিতায় আঞ্চলিক দলগুলির জোট চান মমতা
জেলা কৃষি দফতর জানিয়েছেন, এ রাজ্যের আলু চাষিরা মূলত পঞ্জাবের বীজের উপর নির্ভর করেন। স্থানীয় ভাবে কিছু আলু হিমঘরে রেখে তা দিয়ে চাষ হয়। তবে পাঞ্জাব থেকে যে আলু বীজ নিয়ে আসা হয়, তার ফলন ভাল বলে জানিয়েছেন স্থানীয় চাষিরা। তাই পঞ্জাবের বীজের উপরই ভরসা করেন তাঁরা। তবে এ বার সেই বীজের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। গত বার পঞ্জাব বীজের এক বস্তার (৫০ কিলো) দাম ছিল আড়াই হাজার টাকা। এ বার সেই বীজই কোথাও ৫ হাজার, কোথাও বা সাড়ে ৪ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফলে চড়া দামে বীজ কিনতে হচ্ছে চাষিদের। বীজের দাম বাড়ায় আলু চাষের খরচও বেড়েছে। এক বিঘা জমি চাষ করতে তিন বস্তা বীজ লাগে। সেই হিসাবে ধরলে গত বারের তুলনায় বিঘা প্রতি শুধু বীজেই বে়ড়েছে সাড়ে ৭ হাজার টাকা।
পোলবার আলু চাষি জগন্নাথ ঘোষ তাঁর ৩ বিঘা জমিতে আলু বসিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘গত বার এক বিঘা জমিতে আলু চাষের খরচ ছিল ২০ হাজার টাকা। এ বার সেই খরচ বেড়ে ২৮ হাজার টাকা হয়েছে। সেই সঙ্গে বীজের এবং সারের দাম বেড়েছে। এখন বিঘায় যদি ৩৫ কুইন্টাল ফলন হয় এবং দাম ১ হাজার টাকা কুইন্টাল পাওয়া যায়, তবেই আমাদের কিছুটা লাভ হবে। তবে সবটাই নির্ভর করছে প্রকৃতির উপর।’’
পঞ্জাবের বীজের উপরে হুগলির আলু চাষিদের ভরসা কেন? প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির রাজ্য সম্পাদক লালু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পঞ্জাব থেকে যেটা বীজ বলে আনা হয়, সেটা সার্টিফায়েড বীজ নয়। আসলে ওখানকার আবহাওয়া ভাল। সেই সঙ্গে, অন্য মাটিতে চাষ হয় বলে ওখানকার আলুর ফলন ভাল। ঝুঁকি কম বলে চাষিরাও বীজের দাম বেশি হওয়া সত্ত্বেও পঞ্জাবের বীজই কেনেন।’’
দাম বেশি হওয়া সত্ত্বেও জেলায় আলু চাষের এলাকা বাড়তে পারে বলে আশা করছে জেলার কৃষি দফতর। হুগলি জেলা কৃষি উপ-অধিকর্তা জয়ন্ত পাড়ুই বলেন, ‘‘এ বার কৃষক-ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বেশ কয়েক দফায় মিটিং হয়েছে। তবে আলু চাষ নিয়ে বা দাম বেশি নিয়ে কেউ ক্ষোভের কথা বলেননি। গত বার আলুর দামে সকলেই খুশি ছিলেন। তাই এ বার যা হিসাব, তাতে আলু চাষের এলাকা বাড়বে জেলায়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy