Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

মালদহে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে মারধরের অভিযোগ, ভিডিয়ো ঘিরে তরজা, মন্ত্রী শশীর মন্তব্যে শোরগোল

মালদহে চুরির অভিযোগে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে মারধর, জুতোপেটার অভিযোগ উঠেছে উন্মত্ত জনতার বিরুদ্ধে। পরে এক জন মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ার ওই দুই মহিলাকে উদ্ধার করেন। তাই নিয়ে শোরগোল।

Political Row over Malda Women paraded naked

—প্রতীকী ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
মালদহ ও কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০২৩ ১৪:৫৯
Share: Save:

মণিপুরে হিংসার ঘটনায় বিরোধীদের সমালোচনায় বিদ্ধ মোদী সরকার। পাল্টা বিজেপিও অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির নানাবিধ ঘটনা নিয়ে সরব। এর মধ্যে বাংলার দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে ঘোরানোর ভিডিয়ো (এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন) নিয়ে শুরু হয়েছে তৃণমূল বনাম বিজেপির তরজা। শাসকদল বলছে, একটি স্থানীয় চুরির ঘটনাকে রাজনীতির রূপ দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বিজেপি। অন্য দিকে, গেরুয়া শিবিরের দাবি, প্রথমে হাওড়ার পাঁচলা, তার পর মালদহের বামনগোলা— দুই জায়গার যে ছবি সমাজমাধ্যমে দেখা যাচ্ছে, তা থেকেই পরিষ্কার এ রাজ্যে মহিলাদের উপর কী ভাবে অত্যাচার হয়। বিজেপি নেতৃত্বের টুইটের পাশাপাশি এ নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে এর সমালোচনা করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। মালদহের ঘটনার নিন্দা করেছেন সিপিএমের পলিটবুরো সদস্য বৃন্দা কারাট। তবে তিনি কটাক্ষ করেন, যেখানে এই ঘটনাটি ঘটেছে সেটি বিজেপি সাংসদের লোকসভা এলাকা। যদিও কংগ্রেসের লোকসভার নেতা তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর দাবি, মহিলাদের উপর হিংসার ঘটনায় দেশের প্রথম পাঁচটি রাজ্যের মধ্যে একটি হল বাংলা। তিনি মালদহের ঘটনার নিন্দা করেছেন। অন্য দিকে, মালদহের ঘটনা ব্যাখ্যা করে সকালেই সাংবাদিক বৈঠক করেছেন শশী পাঁজা।

যা নিয়ে বিতর্ক

মালদহে চুরির অভিযোগে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে মারধর, জুতোপেটা করার অভিযোগ উঠেছে উন্মত্ত জনতার বিরুদ্ধে। পরে এক জন মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ার ওই দুই মহিলাকে উদ্ধার করেন। তবে ওই দুই মহিলার বিবস্ত্র ছবি এবং মারধরের ঘটনা সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই তোলপাড় রাজ্য তথা দেশের রাজনীতি। স্থানীয় সূত্রে খবর, মালদহের এই দুই মহিলার বাড়ি মানিকচক এলাকায়। লেবু বিক্রি করতে বামনগোলা পাকুয়াহাটের গিয়েছিলেন তাঁরা। যে ভিডিয়ো ছড়িয়েছে সেটি ১৮ জুলাইয়ের। ওই দুই মহিলার আত্মীয়েরা জানান, লেবু বিক্রি করতে গ্রামবাংলার বিভিন্ন প্রান্তে যান তাঁরা। সে দিনও গিয়েছিলেন। চুরির অভিযোগে তাঁদের মারধর করা হয়। ওই দুই মহিলাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে বলে দাবি দুই নির্যাতিতার পরিবারের। তবে বিজেপির দাবি, মণিপুরে হিংসায় যে ভাবে মহিলাদের বিবস্ত্র করে ঘুরিয়েছে উন্মত্ত জনতা। সেই ছবি মালদহের বামনগোলার পাকুয়াহাটেও দেখা গিয়েছে। তাঁদের কটাক্ষ, বাংলায় নারীরা সুরক্ষিত নয়।

এই ঘটনায় সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেছেন বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালবীয়। তিনি টুইটে লেখেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে আতঙ্ক অব্যাহত। মালদহে দুই আদিবাসী মহিলাকে নগ্ন করে নির্মম ভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। এই ঘটনার সময় পুলিশ ছিল নীরব দর্শকের ভূমিকায়।’’ অমিতের দাবি, ঘটনাটি ১৯ জুলাই সকালের। এ নিয়ে টুইটে মমতার সরকারকে নিশানা করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানিও। অন্য দিকে, এই পুরো ঘটনায় রাজ্যের মন্ত্রী শশীর বক্তব্যের সমালোচনা করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর অভিযোগ, মহিলা নিরাপত্তার মতো বিষয়ে যেখানে প্রশ্ন উঠছে, তা লঘু করে দেখানোর চেষ্টা করছে তৃণমূল। পাশাপাশি মন্ত্রী শশী পাঁজা ‘অসংবেদনশীল’ মন্তব্য করেছেন। টুইটারে হিন্দিতে সুকান্ত লেখেন, ‘মহিলা কে কাপড়ে নিকল গয়ে তো নিকল গয়ে’ (মহিলার শাড়ি খুলে গেল তো খুলে গেল)।

যদিও যে ভিডিয়ো সুকান্ত পোস্ট করেছেন, তাতে শশীকে কোথাও ওই মন্তব্য করতে শোনা যায়নি। তিনি বলেছেন, ‘‘যেই দুই মহিলা চোর ছিলেন, তাঁদের পাকড়াও করেন যাঁরা, তাঁরাও মহিলা পুলিশকর্মী। তাঁদের গ্রেফতার করার সময় ধস্তাধস্তি হয়। বেচারারা সবাই গরিব। ধস্তাধস্তিতে কাপড় সরে যায়।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘কিন্তু এই ঘটনাকে রাজনীতির চশমায় কেন দেখা হচ্ছে? পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা সিভিক ভলান্টিয়ারেরা এগিয়ে যান। কিন্তু মহিলারা নিজের হাতে আইন তুলে নেন। এটাও তো ঠিক নয়। যাই হোক, অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তদন্তে করছে পুলিশ।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy