বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। ফাইল চিত্র।
রাজনৈতিক বিরোধ থেকে আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণ হতেই পারে। কিন্তু রাজনৈতিক লড়াই ব্যক্তিগত আক্রমণ বা কুকথায় নেমে আসা উচিত নয়। একই দিনে এই বার্তা দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
সম্প্রতি বিজেপির নবান্ন অভিযানের দিন মহিলা পুলিশ-কর্মীদের উদ্দেশে শুভেন্দুর ‘ডোন্ট টাচ মাই বডি’ মন্তব্যকে ঘিরে তাঁকে ব্যক্তিগত আক্রমণে নেমেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। শাসক দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিযেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও বিরোধী দলনেতার সম্পর্কে কিছু মন্তব্য করছিলেন। যা কত দূর শোভন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। আবার শুভেন্দুও দু’টি বই দেখিয়ে অভিষেকের ব্যক্তিগত তথা পারিবারিক জীবন সম্পর্কে ইঙ্গিতপূর্ণ প্রশ্ন তুলেছিলেন। এই চলতি বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ হয় মহালয়ার দিনে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু ও বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের ছবিতে মালা দিয়ে তৃণমূলের বিধায়ক মদন মিত্র তাঁদের নামে ‘তর্পণ’ করায়! সেই ঘটনার প্রেক্ষিতেই সোমবার কলকাতায় শুভেন্দু ও হাওড়ায় ফিরহাদের মুখে কার্যত একই সুর শোনা গিয়েছে।
বিধায়ক মদনের কাণ্ড সম্পর্কে সরাসরি মন্তব্য করতে চাননি শুভেন্দু। আমল দিতে চাননি দিলীপও। তবে ব্যক্তিগত আক্রমণ প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, ‘‘লড়াই রাজনৈতিক হওয়া উচিত। ব্যক্তিগত আক্রমণ করে তীক্ষ্ণ বাক্য ব্যবহার করা কারওরই উচিত নয়। অতীতেও কুকথা হয়েছে। সিপিএমের এক প্রয়াত প্রাক্তন সাংসদ অনিল বসু তৎকালীন বিরোধী নেত্রীকে (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) যে ভাবে অশালীন আক্রমণ করেছিলেন, তার ফল ভাল হয়নি, দেখাই গিয়েছে। সকলকেই বলছি, সীমা ছাড়িয়ে ব্যক্তিগত আক্রমণে (‘বিলো দ্য বেল্ট’) যাওয়া উচিত নয়।’’ কিন্তু তিনি নিজেও তো বই দেখিয়েছিলেন? বিরোধী দলনেতার বক্তব্য, ‘‘ওই বইয়ের কথা আর বলতে চাই না। সে দিন দু’টো বইয়ের কথা বলতে বাধ্য হয়েছিলাম। কারণ, তৃণমূল কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর এসএসকেএম হাসপাতালের বাইরে দাঁড়িয়ে কুৎসিত, স্পর্শকাতর আক্রমণ করেছিলেন।’’
বিরোধী দলনেতার এই বক্তব্য প্রসঙ্গে রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ অবশ্য বলেন, ‘‘দলবদল করার পর থেকে ব্যক্তিগত আক্রমণ তো শুভেন্দু অধিকারী শুরু করেছেন। এখন ভূতের মুখে রাম নামের মতো লাগছে শুনতে! তবে তিনি এবং দিলীপদা সুস্থ থাকুন। মদন মিত্র যা করেছেন, তা একেবারেই সমর্থন করি না।’’
দলীয় বিধায়ক মদনের আচরণকে ‘ছ্যাবলামি’ আখ্যা দিয়ে সমালোচনা করেছেন মন্ত্রী ফিরহাদ। হাওড়া পুরসভায় এ দিন কয়েকটি সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধন করতে এসে তিনি বলেছেন, ‘‘দিলীপ ঘোষ বা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকতেই পারে। কিন্তু সকলেরই দীর্ঘ জীবন আমরা কামনা করি। জীবিত মানুষের নামে তর্পন হয় না! এটা যদি মদন মিত্র করে থাকেন, তা হলে অন্যায় করেছেন। তৃণমূল কংগ্রেস এ ধরনের ছ্যাবলামি পছন্দ করে ন!’’ বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ও মন্তব্য করেছেন, ‘‘প্রচার পাওয়ার জন্য এ সব কাজ করছেন! এই সব না করলেও মদন মিত্র মদন মিত্রই থাকবেন।’’ প্রসঙ্গত, তৃণমূল বিধায়ক মহালয়ার দিন ওই কাজ করে তাঁদের দুই নেতাকে ‘মানসিক ভাবে আঘাত’ করেছেন, এই মর্মে এ দিন বালি থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন বিজেপির বালি-১ মণ্ডলের সভাপতি ইন্দ্রনীল দাশগুপ্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy