বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। ফাইল চিত্র।
রামনবমীর মিছিল ঘিরে অশান্তির পরে হাওড়ায় ঢুকতে বাধা পেলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এলাকায় ১৪৪ ধারা থাকায় শান্তি মিছিলের অনুমতি দেওয়া হল না বামফ্রন্টকেও। বিরোধীরা পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করলেও তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, শান্তির নামে অশান্তি ছড়াতে গিয়েছিল বিরোধীরা। রবিবার অবশ্য হাওড়ার পরিস্থিতি স্বাভাবিকই ছিল। জি টি রোডের বিভিন্ন জায়গায় র্যাফ ও পুলিশ মোতায়েন ছিল। সন্ধ্যা পর্যন্ত নতুন করে গোলমাল হয়নি।
সুকান্ত এ দিন সকালে নিউটাউনের বাড়ি থেকে হাওড়ার শিবপুরের উদ্দেশে রওনা হওয়ার পরেই পুলিশ তাঁকে সেখানে যেতে বাধা দেয়। বাধা পেরিয়ে তিনি উপদ্রুত এলাকায় যাওয়ার চেষ্টা করেন। এর পরে দ্বিতীয় হুগলি সেতুর টোল গেটে পুলিশ তাঁর গাড়ি আটকালে সুকান্তের সঙ্গে পুলিশের বচসা বাধে। পুলিশ জানায়, ১৪৪ ধারা জারি থাকায় তিনি ঘটনাস্থলে যেতে পারবেন না। সুকান্ত প্রশ্ন তোলেন, শনিবার সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায় কী করে সেখানে গিয়েছিলেন? তাঁর জন্য কি আলাদা সংবিধান? যদিও মধ্য হাওড়ার বিধায়ক অরূপের বক্তব্য, ‘‘পূর্বপরিকল্পিত ভাবে রামনবমীর দিন অস্ত্র নিয়ে মিছিল করা হয়েছে। এখন এলাকায় শান্তি রয়েছে। আমি ১৪৪ ধারা ভেঙে ওই এলাকায় যাইনি। অসত্য কথা বলা হচ্ছে। এলাকায় শান্তি ফেরাতে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে আমরা বৈঠক করেছি।’’
পুলিশের বাধা পেয়ে সুকান্ত জি টি রোড অভিমুখ এড়িয়ে ব্যাতাইতলায় নেমে কাজিপাড়া হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু শান্তা সিং মোড়ে পুলিশ ফের তাঁর গাড়ি আটকে দেয়। সুকান্ত সেখানে নেমে স্থানীয় শীতলা মন্দিরে পুজো দেন। পরে আহতদের সঙ্গে দেখা করেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ পরিকল্পিত ভাবে আমাকে শিবপুরে ঢুকতে দিল না। আমি গেলে আসল সত্য সামনে আসত। এলাকায় শান্তি ফেরাতে ব্যর্থ পুলিশ। এই রিপোর্ট আমি রাজ্যপাল ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে দেবো।”
হাওড়ায় এ দিনই সিপিএমের জেলা দফতর অনিল বিশ্বাস ভবন থেকে কাজিপাড়া পর্যন্ত শান্তি মিছিলের ডাক দিয়েছিল বামফ্রন্ট। পুলিশ ১৪৪ ধারার জন্য মিছিলের অনুমতি না দিলেও প্রথমে অনড় ছিলেন বাম নেতারা। সূত্রের খবর, তখন সিপিএমের জেলা সম্পাদক দিলীপ ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগ করে মিছিল না করতে অনুরোধ করেন হাওড়ার পুলিশ কমিশনার। শেষ পর্যন্ত মিছিল না করে দলীয় দফতরের বাইরে সভা করেন বাম নেতৃত্ব। উপস্থিত ছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, পলিটব্যুরো সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্র, ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। সূর্যকান্ত বলেন, “দেশ-বিদেশের সাংবাদিকেরা বহু বার জ্যোতি বসুকে প্রশ্ন করেছিলেন, বাংলায় সাম্প্রদায়িক অশান্তি কেন হয় না? তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, ‘কারণ, সরকার চায় না।’ এই সরকারের অশান্তি এড়ানোর কোনও সদিচ্ছা নেই। পুলিশ অস্ত্র-সহ মিছিলে দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। অথচ শান্তি মিছিলের অনুমতি দিচ্ছে না।” অশান্তি বাধানোর পরিকল্পনা আগে থেকে হচ্ছিল বলে যে মন্তব্য মুখ্যমন্ত্রী করেছেন, তাকে হাতিয়ার করে সেলিম বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী তা হলে নবান্নে না গিয়ে ওই দু’দিন কেন ধর্নায় বসলেন? আসলে তিনি সব জানতেন।... গ্রাম-শহরের মানুষ জেনে গিয়েছে, তৃণমূল-বিজেপি দু’টো দলই চোর। তাই চুরি, দুর্নীতি থেকে নজর ঘোরাতে এই কাজ করছে।”
তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের পাল্টা আক্রমণ, “হাওড়ার পরিস্থিতি শান্ত। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। যাঁরা রামনবমীর দিনে অস্ত্র হাতে মিছিল করলেন, তাঁরা ফের ওই জায়গায় গেলে পরিস্থিতি ফের খারাপ হতে পারে।” সেই সঙ্গে তাঁর তোপ, “সিপিএম তো বিজেপির বি টিম! শান্তির নামে অশান্তি ছড়াতে গিয়েছে। ওদের ওখানে যাওয়াই সবচেয়ে বড় প্ররোচনা!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy