ফেরা: বাড়ি ফেরার পর ফরিদউদ্দিন। ছবি: নির্মল বসু
কাজের প্রলোভন দেখিয়ে এক যুবককে অপহরণ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। এক পাচারকারীকে গ্রেফতার করার পর বছর একুশের ওই তরুণের খোঁজ পায় পুলিশ। কুয়েত থেকে ওই তরুণকে উদ্ধার করে বাড়ি ফেরাল পুলিশ।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে দমদম বিমানবন্দরে নামার পর শুক্রবার সকালে বসিরহাটের পিঁফার তেঁতুলতলায় বাড়ি ফেরেন মহম্মদ ফরিদউদ্দিন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এক মাস আগে ফরিদউদ্দিনকে ভুল বুঝিয়ে কুয়েতে নিয়ে গিয়েছিল এক পাচারকারী। ছেলের ফোন পেয়ে তাঁর কষ্টের কথা শুনে পরিবার থেকে বসিরহাট থানায় অভিযোগ করা হয়। এই খবর সংবাদপত্রে প্রকাশের পর নড়ে বসে পুলিশ-প্রশাসন। ফরিদউদ্দিনকে ফাঁসানোর অভিযোগে হাবড়া থানার নারায়ণপুরের বাসিন্দা জিয়ারুল শেখকে ১৯ নভেম্বর গ্রেফতার করে পুলিশ। প্রশাসনের চাপে জিয়ারুল ফরিদউদ্দিনকে বাড়িতে ফেরানোর ব্যাবস্থা করে। বুধবার রাতে কুয়েতের একটি বিমানবন্দর থেকে মুম্বইয়ের উদ্দেশে রওনা হন জিয়ারুল ও ফরিদউদ্দন। মুম্বইয়ে নামার পরে বৃহস্পতিবার রাতে কলকাতাগামী বিমানে দমদমে নেমে বাড়ি ফেরেন।
এ দিন কুয়েতের অবস্থার কথা বলতে বলতে বাবা-মাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলেন ফরিদউদ্দিন। তিনি জানান, তাঁকে বলা হয়েছিল মোটা বেতনের কাজ দেওয়া হবে। তার জন্য তাঁকে কুয়েত যেতে হবে। তিনি রাজি হন। কুয়েতে তাঁকে মরুভূমিতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁকে উটের পিঠে তুলে দেওয়া হত। ফরিদউদ্দিনের কথায়, ‘‘প্রচন্ড রোদ। তার মধ্যে জল মিলত না। শোওয়ার কোনও জায়গা ছিল না। মরু ঝড়ের সময় কোনও রকমে নিজেকে বাঁচাতাম।’’ একদিন এক বন্ধুর সাহায্যে তিনি মাকে সব কথা ফোনে জানান।
পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর মা রাবেয়া বিবি জানতে পারেন ফরিদউদ্দিন যদি বাড়ি ফিরতে চায় তাহলে তাঁকে আড়াই লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে। রাবেয়া পুলিশকে সব জানান। এরপরেই তৎপর হয় বসিরহাট থানার পুলিশ। তাঁরা একজনকে গ্রেফতার করে ফরিদউদ্দিনকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে।
ফরিদউদ্দিন বলেন, ‘‘অনেক স্বপ্ন নিয়ে লক্ষ টাকা দিয়ে বিদেশে গিয়েছিলাম। ফিরলাম শূন্য হাতে। পুলিশ-প্রশাসন, এলাকার মানুষ, বিধায়ক-সহ সংবাদ মাধ্যমের পক্ষে পরিবারের পাশে না দাঁড়ালে হয়ত আর কখনও দেশের বাড়িতে ফেরা হত না।’’ এ দিন মা রাবেয়া বিবি এবং বাবা আজিজুল ইসলাম ছেলেকে পাশে নিয়ে বলেন, ‘‘আমরা আর কখনও ছেলেকে বাইরে পাঠাব না। অন্যদেরও বলব যেন তাঁরাও তাঁদের সন্তানকে কখনও ভিন দেশে কাজের জন্য না পাঠান।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy