মালদহের মানিকচকের তৃণমূল বিধায়ক সাবিত্রী মিত্রের গাড়িতে হামলার ঘটনার জড়িত সন্দেহে একটি গাড়িকে আটক করেছে পুলিশ। গাড়ির মালিক মহম্মদ সানিজ আক্তার। বাড়ি মালদহের বৈষ্ণবনগর থানা এলাকায়। তাঁকে মানিকচক থানায় ডেকে পাঠিয়ে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পুলিশ সূত্রে খবর, বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে তাঁর মোবাইল এবং গাড়ি।
গত শনিবার মানিকচক থেকে মালদহের উদ্দেশে যাওয়ার সময় বিধায়কের গাড়িতে হামলার অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, মানিকচকের ধরমপুরের কাছে উল্টো দিক থেকে আসা একটি গাড়ি বিধায়কের গাড়িতে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু বিধায়কের গাড়ির চালক কোনও মতে সেই সংঘর্ষ এড়ান। আরও অভিযোগ, পরে সন্দেহজনক গাড়িটি ফের ঘুরে এসে পিছন দিক থেকে সাবিত্রীর গাড়িকে ধাওয়া করতে শুরু করে। বিধায়কের দাবি, তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যেই হামলা করা হয়েছে। ঘটনার তদন্তে নেমে ওই গাড়িটির খোঁজ শুরু করে পুলিশ। সূত্রের খবর, হামলাকারী গাড়ির শেষ চারটি নম্বর পুলিশকে জানাতে পারেন বিধায়ক। সেই মতো ওই শেষের চার নম্বর-সহ রাজ্যে যত গাড়ির নম্বরপ্লেট রয়েছে, সেগুলি খতিয়ে দেখতে শুরু করে পুলিশ।
পাশাপাশি সিসি ক্যামেরার ফুটেজও খতিয়ে দেখেন তদন্তকারীরা। সেই সূত্র ধরেই বৈষ্ণবনগর থানা এলাকার সানিজের নাম উঠে আসে। পুলিশ সূত্রে খবর, গত শনিবার রাতে গাড়ি নিয়ে মানিকচকের রাস্তায় দেখা গিয়েছে তাঁকে। সানিজ নিজেও তা স্বীকার করেছেন। তবে বিধায়কের গাড়িতে হামলার ঘটনার সঙ্গে এর কোনও যোগ নেই বলেই দাবি করছেন তিনি। সানিজের বক্তব্য, ব্যবসায়িক সূত্রে তাঁকে প্রায়শই মানিকচকে আসতে হয়। শনিবারও এসেছিলেন। পরে এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে নিজের বাড়িতে ফিরছিলেন। রাস্তায় বিধায়কের গাড়িতে হামলার অভিযোগের সঙ্গে তাঁর যোগ নেই বলে দাবি করছেন ওই চালক।
আরও পড়ুন:
সানিজ জানান, স্বাভাবিক ভাবে অন্য গাড়িকে যেমন পাশ কাটিয়ে যেতে হয়, তিনি তেমন ভাবেই যাচ্ছিলেন। কোনও দুর্ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করেননি। এমনকি গাড়ি পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সময় সেখানে কোনও বিধায়কের গাড়ি ছিল কি না, তা-ও তিনি বুঝতে পারেননি বলে দাবি সানিজের। তবে তদন্তে পুলিশকে সহযোগিতা করবেন বলে জানিয়েছেন ওই চালক। তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে পুলিশ এখনই প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাইছে না। মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব জানান, ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে। ফলে এখনই কিছু বলা যাবে না।
বিধায়ক সাবিত্রীর সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, “পুলিশ সঠিক ভাবেই কাজ করছে। একটি গাড়ি ধরা পড়েছে। এক জনকে ধরা হয়েছে।” মানিকচকের বিধায়ক জানান, তিনি গাড়ির যে নম্বরের কথা বলেছিলেন পুলিশকে, সেই সূত্র ধরেই গাড়িটিকে ধরে চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বিধায়ক জানান, তাঁর অতিরিক্ত কোনও নিরাপত্তার প্রয়োজন নেই। নিরাপত্তার যা বন্দোবস্ত রয়েছে, তা পর্যাপ্ত বলেই মনে করছেন তিনি। তিনি বলেন, “আমার কোনও রাজনৈতিক বা ব্যক্তিগত শত্রু নেই। আমাকে মারবে কে! কিন্তু এটি কেন হয়েছে, তা আমি জানি না। কেউ যদি মত্ত অবস্থায় এটি করে থাকে, সেটিও পুলিশ নিশ্চয়ই ধরবে।”