Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Police Constable Arrested

ধৃত কনস্টেবলের সম্পত্তির নথিতে ‘বান্ধবী’ বুলার হদিস, দিয়েছেন ১২ লাখি গাড়ি ও ২১ লাখ টাকা

সাত দিনের পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ শেষ হওয়ায় শুক্রবার মনোজিৎ কলকাতার বিচার ভবনের বিশেষ আদালতে হাজির করানো হয়। আদালত ধৃতের ছ’দিনের অর্থাৎ ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।

রাজ্য পুলিশের ধৃত কনস্টেবল মনোজিৎ বাগীশ।

রাজ্য পুলিশের ধৃত কনস্টেবল মনোজিৎ বাগীশ। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৮:০৭
Share: Save:

আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তির মামলায় রাজ্য পুলিশের ধৃত কনস্টেবল মনোজিৎ বাগীশের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নথিপত্র ঘাঁটতে গিয়ে তাঁর এক বান্ধবীর হদিস পেলেন তদন্তকারীরা। সেই বান্ধবীর সঙ্গেও নাকি পুলিশকর্মীর লক্ষ লক্ষ টাকার লেনদেন হয়েছে। তদন্তকারী সংস্থার দাবি, ওই বান্ধবীকে ১২ লাখ টাকার গাড়িও দিয়েছেন মনোজিৎ।

গত সপ্তাহে শুক্রবার রাতে রামপুরহাট থেকে গ্রেফতার হন মনোজিৎ। তাঁকে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখা (এসিবি)। সাত দিনের পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ শেষ হওয়ায় শুক্রবার মনোজিৎ কলকাতার বিচার ভবনের বিশেষ আদালতে হাজির করানো হয়। আদালত ধৃতের ছ’দিনের অর্থাৎ ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। পরে আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে সরকারি আইনজীবী দীপঙ্কর কুন্ডুই মনোজিতের এক বান্ধবীর কথা প্রকাশ্যে আনেন। জানান, কনস্টেবলের বান্ধবীর নাম ছিল বুলা কর্মকার। দীপঙ্কর বলেন, ‘‘বান্ধবীকে ১১ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকার গাড়ি দিয়েছে মনোজিৎ। তদন্তে জানা গিয়েছে, বুলা কর্মকারের অ্যাকাউন্টে ২১ লক্ষ টাকার লেনদেনও হয়েছে।’’

সরকারি আইনজীবীই জানান, এখনও পর্যন্ত বুলার হদিস মেলেনি। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। তাঁর গাড়ির লাইসেন্সে যে ঠিকানা দেওয়া রয়েছে, সেই ঠিকানায় গিয়েও বুলাকে পাওয়া যায়নি। দীপঙ্কর বলেন, ‘‘তদন্তকারীরা চাইছেন, মনোজিৎ ও বুলাকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করতে। সেই কারণেই বুলার খোঁজ চলছে।’’

পুলিশ সূত্রে খবর, মনোজিৎ আদতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা। পরে তিনি রামপুরহাটে বদলি হন। গ্রেফতার হওয়ার আগে পর্যন্ত সেখানেই কর্মরত ছিলেন তিনি। থাকতেন একটি লজে ঘরভাড়া নিয়ে। অফিস থেকে ফেরার পথে তাঁকে পাকড়াও করা হয়। এসিবি সূত্রে খবর, মনোজিতের আয়-বহির্ভূত সম্পত্তির প্রথম হদিস পায় রাজ্য ভিজিল্যান্স। তারা তদন্ত করে রাজ্য পুলিশ ডিরেক্টরেটে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে। সেই সুপারিশের ভিত্তিতেই এসিবির কাছে অভিযোগ আসে এবং ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মামলা রুজু হয়। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ২০১২ সাল থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে হাওড়া গ্রামীণ পুলিশ, হাওড়া সিটি পুলিশ এবং রাজ্য এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চে কর্মরত ছিলেন মনোজিৎ। শুক্রবার সরকারি আইনজীবী জানান, সেই সময় তাঁর আয় হওয়ার কথা ছিল ১১ লক্ষ ১২ হাজার টাকা। কিন্তু তাঁর সম্পত্তি হয়েছে এক কোটি টাকার উপর। এই চার বছরে তিনি যে ক’টি ফিক্সড ডিপোজ়িট করেছিলেন, তার পরিমাণ ৭৩ লক্ষ ৮১ হাজার টাকা।

তদন্তকারী অফিসারদের মতে, এক জন কনস্টেবল পদের পুলিশকর্মীর এত পরিমাণ সম্পত্তি হওয়ার কথা নয়। তাই কী ভাবে এই বিরাট সম্পত্তি করলেন মনোজিৎ, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পেতে কনস্টেবলকে বিশদে জেরা করা হবে। পুলিশের একাংশের পর্যবেক্ষণ, এক জন কনস্টেবলের পক্ষে একা এত বড় মাপের দুর্নীতি করা সম্ভব কি না, সেই বিষয়টিও দেখার। তাই কোনও উঁচু পদের আধিকারিক এর সঙ্গে যুক্ত কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy