সৌমেন্দু অধিকারী। ফাইল চিত্র।
একাধিক মামলাতেই নাম জড়িয়েছিল তাঁর। বেশ কয়েক বার পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখিও হয়েছেন। এ বার শ্মশান দুর্নীতি মামলায় বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার অন্যতম সাধারণ সম্পাদক তথা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ছোট ভাই সৌমেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিল কাঁথি থানার পুলিশ। শুভেন্দু ও সৌমেন্দু বিজেপিতে যাওয়ার পরে এই প্রথম কাঁথির ‘অধিকারী বাড়ি’র কোনও সদস্যের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিল পুলিশ।
সৌমেন্দু পুরপ্রধান থাকাকালীন কাঁথি শহরের একটি শ্মশান সংস্কারে দুর্নীতির অভিযোগের ভিত্তিতেই এই মামলা দায়ের হয়েছিল। কাঁথি থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছু দিন আগে তমলুকে বিশেষ আদালতে ওই চার্জশিট জমা পড়েছে। সৌমেন্দু ছাড়াও কাঁথি পুরসভার সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার দিলীপ বেরা এবং এক ঠিকাদার সতীনাথ দাস অধিকারীর নাম রয়েছে সেখানে। চার্জশিট প্রসঙ্গে অবশ্য কিছু বলতে চাননি সৌমেন্দু। তাঁর বক্তব্য, ‘‘যা বলার আদালতে বলব।’’ তবে এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ বিজেপি নেতৃত্ব। দলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুদাম পণ্ডিতের দাবি, ‘‘রাজ্য সরকারের একাধিক দুর্নীতি নিয়ে বিরোধী দলনেতা সরব হচ্ছেন। তাই তাঁকে চাপে রাখতে পুলিশকে কাজে লাগিয়ে সৌমেন্দুকে ফাঁসানো হচ্ছে।’’ রাজ্য তৃণমূলের অন্যতম মুখপাত্র তথা দলের তরফে পূর্ব মেদিনীপুরের বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত কুণাল ঘোষ পাল্টা বলছেন, ‘‘ওই ঘটনায় দুর্নীতি যে হয়েছে, তা একদম স্পষ্ট। অভিযুক্ত কেন জেলের বাইরে এখনও আছেন তা আদালত বলতে পারবে। আমরা চাই যারা দুর্নীতিতে যুক্ত তাদের শাস্তি হোক।’’
অধিকারী বাড়ি ‘শান্তি কুঞ্জে’র অদূরেই ওই শ্মশান। তা সংস্কারের পাশাপাশি সরকারি জমিতে স্টল বানিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকায় বিক্রিও করা হয়। অভিযোগ, পুরসভার কোষাগারে অধিকাংশ টাকাই জমা দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে কাঁথি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বর্তমান পুরপ্রধান সুবল মান্না। আগেই এই মামলায় পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার দিলীপ বেরা এবং ঠিকাদার সতীনাথ দাস অধিকারীকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। পরে তাঁরা জামিন পান। তার পর তিন জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় পুলিশ। তমলুকে দুর্নীতি দমন বিরোধী বিশেষ আদালতে এই ওই মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে জানা গিয়েছে।
২০২০ সালের ১৯ ডিসেম্বর প্রথমে শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দেন। তার পর গত বিধানসভা ভোটের আগে সৌমেন্দু তৃণমূল ছেড়ে পদ্মের পতাকা ধরেন। তাঁদের বাবা শিশির অধিকারী ও আরও এক ভাই দিব্যেন্দু অধিকারী এখনও খাতায়কলমে তৃণমূল সাংসদ। যদিও ঘাসফুলের সঙ্গে তাঁদের দূরত্ব অনেকটাই। ঘটনাচক্রে বিজেপিতে যোগদানের পরেই একের পর এক মামলায় নাম জড়ায় সৌমেন্দুর। কাঁথি পুরসভার গুদাম থেকে ত্রিপল চুরির চেষ্টা, গ্রিন সিটি মিশন প্রকল্পে শহরে পথবাতি বসানোয় অনিয়ম এবং কাঁথি প্রভাত কুমার কলেজে পরিচালন কমিটির সভাপতি থাকাকালীন বেআইনি ভাবে একাধিক ভবন নির্মাণের অভিযোগ রয়েছে সৌমেন্দুর বিরুদ্ধে। এর মধ্যে ত্রিপল চুরির মামলার তদন্তে স্থগিতাদেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। বাকি মামলাগুলিতে সৌমেন্দুকে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হবে।
তবে কোনও ভাবেই তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy