বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহ।
একাধিক বার তাঁকে দেখা গিয়েছে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে। তা নিয়ে বিতর্কও হয়েছে বিস্তর। কিন্তু বরাবরই তিনি জানিয়েছেন, আগ্নেয়াস্ত্রের ‘লাইসেন্স’ রয়েছে তাঁর। কিন্তু ব্যারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশের দাবি, ভুয়ো ঠিকানা দেখিয়ে নাগাল্যান্ড থেকে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স বাগিয়েছেন বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহ। পুলিশের বক্তব্য, সাম্প্রতিক তদন্তে তা ধরা পড়েছে।
শুধু তিনিই নন, সাংসদের বিধায়ক-পুত্র পবন সিংহ, ভাইপো সৌরভ সিংহ ও রঞ্জিত (পাপ্পু) সিংহের নামে যে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স রয়েছে, সবই ভুয়ো ঠিকানা দিয়ে জোগাড় করা বলে পুলিশের অভিযোগ। সবার বিরুদ্ধেই অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
যদিও অর্জুন বলছেন, ‘‘নাগাল্যান্ডে আমার কোথায় বাড়ি আছে, তা পুলিশ কী করে জানবে! আমি খোঁজ পেয়েছি, পুলিশ ওখানে গিয়েছিল। পুলিশ অন্যায় ভাবে মামলা করেছে। তারা বেআইনি ভাবে সৌরভ এবং পবনের আগ্নেয়াস্ত্র আটকে রেখেছে। আমরাও তার জন্য পাল্টা মামলা করেছি। শুধু মামলা করলেই তো হবে না, প্রমাণও করতে হবে।’’ একই কথা বলছেন পবনও।
অর্জুন, পবন এবং তাঁদের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়েরা সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্র রাখেন, তা তাঁরা প্রকাশ্যেই বলেন। কিন্তু তার লাইসেন্স নিয়ে যে এমন জটিলতা রয়েছে তা পুলিশেরও জানা ছিল না এত দিন। এখন কী করে জানা গেল?
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি ব্যারাকপুর কমিশনারেটে বেশ কয়েকটি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নবীকরণের আবেদন জমা পড়ে। তখনই দেখা যায়, চারটি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নেওয়া হয়েছিল নাগাল্যান্ড থেকে। চারটিই ব্যারাকপুরের সাংসদ এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে। নাগাল্যান্ডের ঠিকানা দেখে পুলিশের সন্দেহ হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, এর পরে পুলিশের একটি দলকে পাঠানো হয় নাগাল্যান্ডে। তদন্তে জানা যায়, আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নেওয়ার জন্য ভুয়ো ঠিকানা দেওয়া হয়েছে। তদন্তকারী দলের রিপোর্ট ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মার কাছে জমা পড়ে দিন তিনেক আগে। তার পরেই পুলিশ অস্ত্র আইনে তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে।
আইন অনুযায়ী, আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পেতে গেলে পুলিশের কাছে আবেদন করতে হয়। পুলিশ আবেদন যাচাই করে রিপোর্ট তৈরি করে। পুলিশ ‘ভেরিফিকেশন’ ছাড়া কোনও ভাবেই আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পাওয়ার কথা নয়। লাইসেন্স পেতে গেলে আবেদনকারীকে শারীরিক এবং মানসিক সক্ষমতার পরিচয় দিতে হয়। সব থেকে বড় কথা, পুলিশ যাচাই করে দেখে, আবেদনকারীর জীবননাশের হুমকি আছে কিনা। অর্জুন দীর্ঘদিন তৃণমূল বিধায়ক ছিলেন। বিজেপিতে গিয়ে সাংসদ হওয়ার পরে তাঁর ছেড়ে যাওয়া আসনে জিতে বিধায়ক হন পবন। ভাটপাড়ার পুরপ্রধানের চেয়ারে বসেন সৌরভ। পাপ্পু ঠিকাদারি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নেওয়ার ক্ষেত্রে অর্জুন আইন মেনেছিলেন কিনা, তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। তবে ঠিকানা যে যাচাই হয়নি, সে বিষয়ে পুলিশ নিশ্চিত। আইন অনুযায়ী, সেক্ষেত্রে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পারে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy