চার বছরে একটিই রিপোর্ট। তবুও রাজ্য বিধানসভার স্বরাষ্ট্র বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির রিপোর্টে জায়গা পেল না পুলিশ বিভাগের কাজকর্ম বা সাধারণ আইনশৃঙ্খলাই। শুধু সংশোধনাগার নিয়ে আলোচনা হলেও কমিটির আওতায় থাকা অন্য বিভাগগুলি বাদ পড়েছে এই রিপোর্ট থেকে।
বিধানসভার এ বারের বাজেট অধিবেশনেই প্রথম একটি রিপোর্ট দিয়েছে ২০২১ সালে গঠিত স্বরাষ্ট্র বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটি। গত ২০ ফেব্রুয়ারি ওই কমিটি বিধানসভায় যে রিপোর্ট জমা দিয়েছে, তাতে অবশ্য রাজ্যের পুলিশ বিভাগের কাজকর্ম বা আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়নি। রিপোর্টে বলা হয়েছে, কমিটি রাজ্যের ৭টি জেলার সংশোধনাগার পরিদর্শন করেছে। সেই সম্পর্কিত প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেছে এবং তার পরে এই রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। তবে কমিটি তৈরি হওয়ার চার বছর কেটে যাওয়ার পরেও একটি মাত্র রিপোর্ট প্রকাশ হওয়া এবং তাতেও পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলাকে বিবেচনা না করায় পরিষদীয় মহলে বিস্ময় দেখা গিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, কমিটির অন্যতম সদস্য বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা রায়ের দাবি, ‘‘এই রিপোর্ট সম্পর্কে আমরা কিছুই জানি না। কমিটিতে তা নিয়ে কোনও আলোচনাই হয়নি!’’
রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে নানা অভিযোগ থাকলেও বিধানসভায় তা নিয়ে আলোচনার সুযোগ নেই বলে বারবারই অভিযোগ করে বিরোধীরা। চলতি বাজেট অধিবেশনেও স্বরাষ্ট্র দফতরের বাজেট নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা কম। বিধানসভার সচিবালয় সূত্রের ইঙ্গিত, প্রাথমিক ভাবে যে ৭-৮টি দফতরের বাজেট নিয়ে আলোচনা হবে বলে ঠিক হয়েছে, তার মধ্যে স্বরাষ্ট্র দফতর নেই। এ বার পঞ্চায়েত, স্বাস্থ্যের মতো দু’টি গুরুত্বপূর্ণ দফতর বিভাগীয় বাজেট আলোচনায় থাকলেও স্বরাষ্ট্র বিভাগের থাকার সম্ভাবনা নেই। পরিষদীয় ভাষায়, তাকে ‘গিলোটিন’-এ পাঠানো হতে পারে।
এই অবস্থায় স্বরাষ্ট্র বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রথম রিপোর্টে কেন পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা নিয়ে আলোচনা নেই, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। বিধানসভার বাজেট অধিবেশনেই আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত আলোচনা চেয়ে সরকার পক্ষের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়েছিল বিরোধী দল বিজেপি। তার জেরে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ বিজেপির চার বিধায়ককে ৩০ দিনের জন্য নিলম্বিত করা হয়েছে।
বিধানসভার ১৯ সদস্যের এই কমিটির চেয়ারপার্সন তৃণমূল বিধায়ক অসীমা পাত্র। এ বারের রিপোর্ট সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘স্ট্যান্ডিং কমিটির রিপোর্ট বিধানসভার বিষয়। এই নিয়ে বাইরে আলোচনা করতে পারি না।’’ কমিটির অন্যতম সদস্য, বিজেপি বিধায়ক অম্বিকার দাবি সম্পর্কেও কোনও মন্তব্য করতে
চাননি তিনি।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)