Advertisement
E-Paper

হাসপাতালে দে পরিবারের জন্য পুলিশি পাহারা

ট্যাংরা কাণ্ডে আহত প্রণয় দে-কে আগেই ই এম বাইপাসের হাসপাতাল থেকে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সোমবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ কিশোর এবং তার কাকা প্রসূনকেও এন আর এস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৫:৫১
Share
Save

হাসপাতাল তো নয়, প্রায় একটা ছোটখাটো দুর্গ! ওয়ার্ডে ঢোকার দরজায় উর্দিধারী তো আছেন, ভিতরে আলাদা আলাদা তিনটি শয্যার সামনেও সর্বক্ষণ তিন জন পুলিশ কর্মী বসে। হাসপাতালে ভর্তি তিন রোগীর উপর থেকে এক মুহূর্তও নজর সরাচ্ছেন না তাঁরা। বাইরের কেউ তো দূর, ওই ওয়ার্ডে ভর্তি অন্যান্য রোগীর আত্মীয়রা ভিতরে ঢুকতে গেলেও পুলিশের কড়া প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁদের।

ট্যাংরা কাণ্ডে আহত প্রণয় দে-কে আগেই ই এম বাইপাসের হাসপাতাল থেকে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সোমবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ কিশোর এবং তার কাকা প্রসূনকেও এন আর এস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, দোতলার অস্থিরোগ বিভাগের তিনটি সাধারণ শয্যাতেই রাখা হয়েছে তিন জনকে।

পুলিশের জেরায় ট্যাংরা কাণ্ডে আহত তিন জন আত্মহত্যার জন্য অভিষিক্তার মোড়ের পিলারে গাড়ি নিয়ে ধাক্কা মেরেছিলেন বলে জানিয়েছিলেন। ফলে হাসপাতালে থাকাকালীন আর কোনও উপায়ে আত্মহত্যার চেষ্টা যাতে না হয় সে জন্য বাড়তি সতর্ক লালবাজার। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, হাসপাতালে ভর্তি ওই তিন জনের নিরাপত্তায় সর্বক্ষণ আট জন পুলিশ কর্মী থাকছেন। আট জনের মধ্যে দু’জন ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার। তিন জনের শয্যার পাশে সর্বক্ষণ এক জন করে পুলিশ কর্মী থাকছেন। বাইরে দরজায় থাকছেন দু’জন কনস্টেবল। এক জন করিডরে ঘোরাফেরা করছেন। এ ছাড়া হাসপাতালের ওই তলার গেটেও দু’জন পুলিশ কর্মী মোতায়েন থাকছেন।

যদিও ঘটনার পর এক সপ্তাহ পেরোলেও কে দুই স্ত্রীর শিরা কেটে ‘খুন’ করছিলেন সে ব্যাপারে এখনও নিশ্চিত নয় পুলিশ। দুই ভাইয়ের বক্তব্যে একাধিক অসঙ্গতি রয়েছে বলে খবর। তাঁদের মুখোমুখি বসিয়ে জেরার পরিকল্পনা রয়েছে তদন্তকারীদের। লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৭ ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ সোমবাররাত পর্যন্ত দুই ভাইয়ের বক্তব্য মিললেও পরদিন অর্থাৎ মঙ্গলবার সকাল থেকে প্রসূন এবং প্রণয়ের বক্তব্য মিলছে না। কে স্ত্রীদের শিরা কেটেছিলেন সেই প্রশ্নেও ‘কী ভাবে কাটা হয়েছে তা জানা নেই’ বলে প্রশ্ন এড়াচ্ছেন প্রসূন এবং প্রণয়। তবে কাকা ঘটনার দিন সকালে নিজের হাতের শিরা কাটার চেষ্টা করেছিলেন বলে পুলিশকে জানিয়েছে কিশোর।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনজনের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পেরেছে, সোমবার রাতের খাওয়ার শেষে বেশ কিছুক্ষণ একসঙ্গে সময় কাটায় গোটা পরিবার। এর পর তাঁরা সকলে মিলে পায়েস খান। পায়েস খাওয়া শেষ হলে সকলে যে যাঁর ঘরে চলে গিয়েছিলেন। প্রসূন এবং প্রণয় দু’জনেই পায়েস খেয়েছিলেন বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছেন।

ট্যাংরার চিত্ত নিবাসের ভিতরে দু’টি ফ্রিজ পেয়েছেন তদন্তকারীরা। ফ্রিজের ভিতরে খাবার ভর্তি ছিল। যদি গোটা পরিবার আত্মহত্যায় করার পরিকল্পনা করে থাকেন তাহলে কেন এত খাবার ফ্রিজে রেখেছিলেন এই প্রশ্ন ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। তবে ট্যাংরা কাণ্ডে পরিবারের বাইরে কারও কোনও উপস্থিতি ছিল না এ বিষয়েনিশ্চিত পুলিশ।

মঙ্গলবার লালবাজারে কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা বলেন, ‘‘এখনও বেশ কিছু অসঙ্গতি আছে। তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে দুই ভাই এই ঘটনায় যাবতীয় পরিকল্পনা করেছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। তথ্য প্রমাণ খতিয়ে দেখে আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Tangra Murder Case Tangra

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}