নন্দীগ্রামের একটি বুথে বসে নরেন্দ্র মোদীর কর্মসূচিতে যোগ দেন শুভেন্দু অধিকারী। — নিজস্ব চিত্র।
ভোপাল থেকে ‘মেরা বুথ, সবসে মজবুত’ কর্মসূচির বক্তৃতা করছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু তার মধ্যে এমন প্রশ্নে, এমন উত্তর আসবে কেউ আশাও করেননি। পটনায় হওয়া বিরোধী জোট নিয়ে প্রশ্নের জবাবে একের পর এক দলের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির তালিকা পেশ করছিলেন মোদী। কংগ্রেস, আরজেডির পরেই তৃণমূল সম্পর্কে বলতে শুরু করেন। তখন হয়তো উদ্বেগেই ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আসলে মোদী চিটফান্ড দুর্নীতির কথা বলতে গিয়ে শুরুতে রোজ় ভ্যালির কথা বলেন। এর পরে মোদী নারদ কেলেঙ্কারির কথা বলে ফেলবেন না তো! ওই কারণে তো তাঁকে উঠতে বসতে তৃণমূলের কটাক্ষ শুনতে হয়। রাজ্যের বিজেপি নেতারাও ওই একটি প্রশ্নের ক্ষেত্রে উত্তর দিতে পারেন না। কিন্তু না। মোদী বললেন না। সারদার পরেই মোদী, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি হয়ে গরু ও কয়লা পাচারের কথা বলেন। এ নিয়ে তৃণমূল এখনও মুখ খোলেনি। তবে বিজেপি নেতাদের অনেকেই বলছেন, মোদীর মুখ থেকে ‘নারদ’ শব্দটা উচ্চারিত হলেই কেলেঙ্কারি হয়ে যেতে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আবহে ‘নারদ নারদ’ ধ্বনিতে ভরিয়ে দিত তৃণমূলের সঙ্গে সিপিএম, কংগ্রেসও।
মঙ্গলবার মধ্যপ্রদেশের ভোপালে ছিল মোদীর কর্মসূচি। স্থানীয় মতিলাল নেহরু স্টেডিয়ামে মধ্যপ্রদেশ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন রাজ্যের বুথকর্মীরা এসেছিলেন। বাংলা থেকেও প্রতিনিধি দল গিয়েছে। সেই সঙ্গে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশ ছিল গোটা দেশের সব নেতা, সাংসদ, বিধায়ক থেকে বুথ কর্মীরা ভার্চুয়াল মাধ্যমে শ্রোতা হবেন। কেউ কেউ প্রশ্নও করতে পারেন।
নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু নিজের বিধানসভা এলাকাতেই ওই কর্মসূচিতে যোগ দেন। নন্দনায়কবাড় ৭৭নং বুথের বিজেপি প্রার্থী রুম্পা দাস-সহ বুথকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে। মঙ্গলবারের কর্মসূচিতে মোদী সে ভাবে বক্তৃতা করেননি। বিভিন্ন রাজ্যের কর্মীদের প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। গুজরাতের কর্মী হেতালবেন জানি প্রশ্ন করেন, ‘‘ভারতীয় জনতা পার্টির বিরুদ্ধে অনেক দল একজোট হয়ে লড়ার চেষ্টা করছে। নিজেদের অন্য নীতি থাকলেও এক হওয়ার নাটক করছেন কি?’’
এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়েই মোদী বিভিন্ন দলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করতে শুরু করেন। বলেন, ‘‘তৃণমূলের বিরুদ্ধে ২৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। রোজ় ভ্যালি দুর্নীতি, সারদা দুর্নীতি, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি, গরু পাচার, কয়লা পাচার চলছে। বাংলার মানুষ কখনও এই দুর্নীতি ভুলতে পারবে না।’’ না, ‘নারদ’ দুর্নীতির কথা উল্লেখ করেননি প্রধানমন্ত্রী। প্রসঙ্গত, আরও অনেক তৃণমূল নেতার সঙ্গে সেই সময় শাসক শিবিরে থাকা শুভেন্দুকেও ক্যামেরার সামনে টাকা নিতে দেখা গিয়েছিল। সেই ফুটেজ রাজ্য বিজেপি তখন দলীয় দফতরে সাংবাদিক বৈঠক করে প্রকাশ্যে আনে। যা নিয়ে আজও কটাক্ষ করতে ছাড়ে না অন্যান্য দল।
শুভেন্দু নিজেও নারদ দুর্নীতির কথা মানেন বলেও দাবি করে তৃণমূল। গত মার্চ মাসেই দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ একটি ভিডিয়ো (আনন্দবাজার অনলাইন সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি) সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেন। তাতে শুভেন্দুকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আড়াই বছর ধরে সাঁতার কেটেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আমার বিরুদ্ধে। হাঁপিয়ে গিয়েছেন। আমাকে বিচারব্যবস্থা সুরক্ষা দিয়েছে। কারণ, মিথ্যে অভিযোগ উঠেছে। আমি তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ছাত্রনেতা হিসাবে ১৯৮৮-এ রাজনীতি শুরু করি। ১৯৯৫ সালে কাউন্সিলর নির্বাচিত হই। এই দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে, আপনারা যা-ই বলুন না কেন, ওই নারদ স্টিং অপারেশন ছাড়া আমার বিরুদ্ধে প্রমাণিত কোনও অভিযোগ নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy