এই যুক্তিতে এঁদের সকলেরই কেন্দ্রীয় কমিটি ও পলিটবুরোয় থেকে যাওয়া সময়ের অপেক্ষা। চলতি সপ্তাহেই ২৩-২৪ ফেব্রুয়ারি ত্রিপুরা সিপিএমের রাজ্য সম্মেলন। আগরতলায় সেই সম্মেলনে যাওয়ার কথা দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি ও ওই রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত নেতা কারাটের।
ফাইল চিত্র।
দুই রাজ্যে দলের দুই মুখ আপাতত তাঁরাই। বড়সড় কোনও অঘটন না ঘটলে সিপিএমের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি ও পলিটবুরোয় জায়গা অক্ষুণ্ণ থাকতে চলেছে পিনারাই বিজয়ন ও মানিক সরকারের। প্রথম জনের ক্ষেত্রে ‘ব্যতিক্রম’ ঘটাতে চলেছে দল। দ্বিতীয় জন থাকছেন বিকল্প না থাকার স্বাভাবিক কারণেই। তবে শরীর ও মস্তিষ্ক পুরোদস্তুর সচল থাকলেও বাংলার সিপিএমের প্রবীণতম নেতা বিমান বসু দলের নীতির বাইরে যেতে এখনও পর্যন্ত উৎসাহী নন বলেই দলীয় সূত্রের খবর।
সিপিএমের এ বারের সম্মেলন-পর্বে দলের বিভিন্ন কমিটিতে বয়স-নীতি কার্যকর হওয়া শুরু হয়েছে। কেরলের কান্নুরে দলের আসন্ন ২৩তম পার্টি কংগ্রেসে কেন্দ্রীয় কমিটির ক্ষেত্রেও সেই নীতি প্রথম প্রয়োগ হবে। পলিটবুরোয় এখন দুই বর্ষীয়ান সদস্য বাংলার বিমানবাবু ও কেরলের এস রামচন্দ্রন পিল্লাই। দলের নির্ধারিত বয়ঃসীমা মানলে তাঁদের কমিটি থেকে সরে দাঁড়াতে হবে এ বার। বিমানবাবু বা এসআরপি-র জন্য কোনও ব্যতিক্রমী ভাবনার ইঙ্গিত এখনও নেই। বরং, সিপিএম সূত্রের ইঙ্গিত, অন্তত কমিটিতে জায়গা রাখার ক্ষেত্রে দলের নীতির বাইরে ‘ব্যতিক্রমী’ হতে বিমানবাবুই আগ্রহী নন। রাজ্য হিসেবে বাংলার প্রতিনিধি না হলেও পলিটবুরোয় আর এক বাঙালি নেতা হান্নান মোল্লাও বয়স-সীমার গেরোয় পড়ছেন। তবে জাতীয় রাজনীতিতে সাম্প্রতিক কৃষক আন্দোলনের ভূমিকা ও গুরুত্ব মনে রেখে সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে কৃষক সভার সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হান্নানের জায়গা রেখে দিতে চায় দলের একাংশ।
কেন্দ্রীয় কমিটিতে থাকার ঊর্ধ্বসীমা ৭৫ বছর পার করেছেন বিজয়নও। কিন্তু দেশের একমাত্র বাম-শাসিত রাজ্যে তিনি মুখ্যমন্ত্রী। তাই ‘বিশেষ নজির’ হিসেবে গণ্য করেই বিজয়নকে কেন্দ্রীয় কমিটি ও পলিটবুরোয় রেখে দিতে চলেছে সিপিএম। প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় কমিটি নির্বাচিত হওয়ার পরে পার্টি কংগ্রেসেই নতুন পলিটবুরো বেছে নেওয়া হয় ওই কমিটি থেকে।
বয়সের নীতি মানতে গিয়ে দলের প্রথম সারির কয়েক জন নেতাকে নিয়ে ঈষৎ দোলাচল তৈরি হয়েছিল দলের অন্দরে। যে নেতাদের বয়স এখন ৭৫-এর দোরগোড়ায়, তাঁদের ক্ষেত্রে কী হবে? পরবর্তী পার্টি কংগ্রেস হওয়ার আগে তাঁরা ৭৫ পেরিয়ে যাবেন। দলীয় সূত্রের খবর, পলিটবুরোর শীর্ষ নেতারা আলোচনা করে ঠিক করেছেন, এখনও বয়ঃসীমা পার করেননি যে গুরুত্বপূর্ণ নেতা-নেত্রীরা, তাঁদের এখন অব্যাহতির রাস্তায় নিয়ে যাওয়া হবে না। মানিকবাবু এই তালিকায় পড়েন। ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিকবাবু এখন সেখানে বিরোধী দলনেতা এবং সে রাজ্যে বিজেপি-বিরোধী লড়াইয়ের সামনের সারিতে আছেন। গোটা দেশের কাছেই ত্রিপুরা সিপিএমের মুখ বলতে এখনও মানিকবাবুই। এই পরিস্থিতিতে কোনও বৈপ্লবিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভাবনা-চিন্তা আপাতত নেই দলের শীর্ষ স্তরে।
দলের পলিটবুরোর এক সদস্যের কথায়, ‘‘বিষয়টা একটু স্পর্শকাতর। যাঁদের এখনও বয়স ঊর্ধ্বসীমা পেরোয়নি, পরে কী হবে ভেবে তাঁদের উপরে বয়স-নীতি প্রয়োগ করা মুশকিল। শুধু মানিক নন, প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট বা বৃন্দা কারাট, সুভাষিণী আলিরাও পরের পার্টি কংগ্রেস হওয়ার আগে ওই সীমা পেরিয়ে যাবেন।’’ এই যুক্তিতে এঁদের সকলেরই কেন্দ্রীয় কমিটি ও পলিটবুরোয় থেকে যাওয়া সময়ের অপেক্ষা। চলতি সপ্তাহেই ২৩-২৪ ফেব্রুয়ারি ত্রিপুরা সিপিএমের রাজ্য সম্মেলন। আগরতলায় সেই সম্মেলনে যাওয়ার কথা দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি ও ওই রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত নেতা কারাটের। কয়েক মাস আগে ত্রিপুরা সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক হয়েছেন প্রাক্তন সাংসদ জিতেন্দ্র চৌধুরী। সব ঠিকমতো চললে তাঁরই আসন্ন রাজ্য সম্মেলনে ফের পূর্ণ সময়ের রাজ্য সম্পাদকের দায়িত্ব পাওয়ার কথা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy