লাল্টু মহারাজের বাগানে নিষিদ্ধ সিরাপ মজুতের বাঙ্কার উদ্ধার কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এর নেপথ্যে রয়েছে বিরাট চক্র। কারবারের শিকড় ছড়িয়ে রয়েছে উত্তরপ্রদেশেও। নিষিদ্ধ কাশির সিরাপ কাঁটাতার পার করতে পারলেই ‘সোনায় সোহাগা’ হন পাচারকারীরা। এমনটাই উঠে এল মাদক নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (নার্কোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো)-র তদন্তে।
তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, ফেনসিডিল নামক ওই নিষিদ্ধ সিরাপ মূলত হিমাচল প্রদেশের সোলান জেলায় তৈরি হয়। সেখান থেকে উত্তরপ্রদেশের বারাণসী এবং লখনউ হয়ে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে পৌঁছয় তা। কাঁটাতার পেরোনোর আগে সেখানেই মজুত রাখা হয় নিষিদ্ধ সিরাপ। ঠিক যেমন ভাবে নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জে লাল্টুর জমিতে বাঙ্কার বানিয়ে ফেনসিডিল মজুত করে রাখা হয়েছিল। পরে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে তা উদ্ধার করে বিএসএফ।
কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তকারীদের একাংশের দাবি, নেশার বস্তু হিসাবে ফেনসিডিলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে বাংলাদেশে। যে কারণে ওই কাশির সিরাপ পাচারে এত উৎসাহ পাচারকারীদের! তাতে ভাল মুনাফাও মেলে। এক বোতল ফেনসিডিল ভারতে ১৫০-১৬০ টাকায় পাওয়া যায়। সীমান্ত পেরোলেই তার দাম বেড়ে হয় ৮০০-১০০০ টাকায়। পরে যখন তা ঢাকায় পৌঁছয়, তখন ফেনসিডিলের বোতলের দাম বেড়ে ১৮০০-২০০০ টাকা হয়ে যায়। পরিবহণ-সহ অন্যান্য খরচ বাদ দিলে বোতল পিছু ৭০০-৮০০ টাকা মুনাফা হয় পাচারকারীদের। এই কারণে ফেনসিডিল এখন ‘তরল সোনা’ তাঁদের কাছে।
তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, টাকার জন্যই স্থানীয় যুবকেরা, এমনকি মহিলারাও সিরাপ পাচারচক্রের সঙ্গে যুক্ত। মূলত তাঁরাই সিরাপের কন্টেনার কাঁটাতারের ও পারে পৌঁছে দেয়। এর জন্য প্রতিবার ৪০০-৫০০ টাকা পান তাঁরা।